প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত বছর ৯ আগস্ট দ্বিতীয় বর্ষের চিকিৎসক পড়ুয়ার দেহ উদ্ধার হয় আরজি কর হাসপাতালের সেমিনার রুম থেকে। সেই পড়ুয়ার ধর্ষণ এবং খুন হওয়ার ঘটনায় রীতিমত উত্তাল হয়েছিল গোটা দেশ সহ বিশ্ব। সেই রেশ এখনও কাটেনি। এখনও বিচারাধীন রয়েছে সেই মামলা। ইতিমধ্যে কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে দণ্ডিত করা হয়েছে। দেওয়া হয়েছে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ। কিন্তু পুরোপুরি মেটেনি মামলা। তার মধ্যে ফের আরজি করের পড়ুয়ার মৃত্যুতে শোরগোল পরে গেল।
ঘটনাটি কী?
সূত্রের খবর, ওই মৃত পড়ুয়া তরুণী আরজি কর হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজে MBBS-এর দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছিলেন। বিহারের বাসিন্দা তিনি। পড়াশোনা সূত্রে কামারহাটিতে ESI হাসপাতালে মায়ের কোয়ার্টারে থাকতেন তিনি। জানা গিয়েছে, গত ৩০ জানুয়ারি, বৃহস্পতিবার তরুণীর মা বেশ কয়েকবার ফোন করলেও ওই তরুণী ফোন ধরেননি। কোয়ার্টারে ফিরে তাই বারবার দরজায় টোকা দেন ওই পড়ুয়ার মা। কোনও সাড়া না পেয়ে শেষে দরজা ভাঙা হয়। দরজা খুলতেই দেখেন, গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছেন মেয়ে। চিৎকার শুনে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। তাঁদের সাহায্যেই গলার ফাঁস খুলে তড়িঘড়ি নামানো হয় ওই তরুণীকে।
মেলেনি সুইসাইড নোট!
তড়িঘড়ি কামারহাটি ESI হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ওই তরুণীকে। সেখানকার ইমারজেন্সি ওয়ার্ডে ঢোকানো হয়। কিন্তু সেখানে ওই তরুণীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। এর পর দেহ পাঠানো হয় ময়নাতদন্তের জন্য। আপাতত কামারহাটি থানায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর অভিযোগ দায়ের হয়েছে। জানা গিয়েছে ওই মৃত তরুণীর মা একজন চিকিৎসক। তিনি কামারহাটির ইএসআই হাসপাতাল কর্মরত। এবং তরুণীর বাবা মুম্বইয়ে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের উচ্চপদস্থ কর্তা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে যেই ঘরে তরুণীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে সেখান থেকে কোনো সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি।
তবে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান যে দীর্ঘদিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন ওই তরুণী। এমনিতে খুবই শান্ত স্বভাবের ছিলেন সে। বেশি কথা বলতেন না। বন্ধু বান্ধব সেরকম যে খুব বেশি ছিল তাও নয়, কিন্তু কেন এমন হঠাৎ করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল তাই নিয়ে চলছে তদন্ত। তবে এখনও পরিবারের তরফ থেকে কোনো বিবৃতি পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এর পরীক্ষায় রয়েছে সকলে। এদিকে তিলোত্তমা কাণ্ডের পর এক বছর কাটতে না কাটতেই এই ঘটনা গোটা হাসপাতাল চত্বরে এক গুরুগম্ভীর পরিবেশ তৈরি করেছে। উঠছে একাধিক প্রশ্ন।