প্রীতি পোদ্দার, মালদহ: নিয়োগ সংক্রান্ত নানা জটিলতা যেন রাজ্যের পিছু কিছুতেই ছাড়ছে না। একের পর এক নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে বারংবার আদালতের কাঠগড়ায় উঠতে হয়। ইতিমধ্যেই প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে জেল খাটছে। আর এই আবহেই এবার এএনএম পদে নিয়োগ সংক্রান্ত জটিলতায় বড় প্রশ্নের মুখে পড়ল বিডিও। হাইকোর্টের নির্দেশ কার্যকর না করায় এবার একাধিক প্রশ্নের জবাব তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট। চাপের মুখে বিডিও।
ঘটনাটি কী?
আসলে ঘটনা হল, মালদহের মানিকচক থানার ভূতনি সাব সেন্টারে ANM পদে নিয়োগকে কেন্দ্র করে ফের দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। জানা গিয়েছে যে ২০০৭ সালে সম্পূর্ণ যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও ভুবনেশ্বরী মণ্ডলকে প্যানেল থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। তার বদলে অনুপমা মণ্ডল নামের অন্য এক প্রার্থীকে ANM পদে নিয়োগ করা হয়। যার ফলে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভুবনেশ্বরী মণ্ডল হাইকোর্টে মামলা করে। এরপর সেই মামলার দীর্ঘ শুনানি চলে। শেষে গত বছর ৮ জুলাই হাইকোর্টে বিচারপতি রায়ে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয় যে, গ্রাম্য এলাকায় ANM পদের গুরুত্ব অনেকটাই। যেহেতু ভুবনেশ্বরী মণ্ডল ওই পদে অস্থায়ীভাবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন, তাই তাঁকে ওই পদে অবশ্যই নিয়োগ করতে হবে।
হাইকোর্টের রায়ে কিছুটা স্বস্তি ফেরে মামলাকারী ভুবনেশ্বরী মণ্ডলের। কিন্তু জুলাই মাসের পর অনেকটা সময় কেটে গেলেও মামলাকারীকে এখনও ANM পদে নিয়োগ করা হয়নি বিডিও। তাই এবার মামলাকারি ভুবনেশ্বরী মণ্ডল আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করলেন। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে সেই মামলার শুনানি হয়। এদিন ভুবনেশ্বরী মণ্ডলের আইনজীবী রবিউল ইসলাম দাবি করেন যে, দিনের পর দিন সরকারি আধিকারিকরা নিয়োগ সংক্রান্ত নানা জটিলতা তৈরি করছে। যা খুবই অপরাধজনক। তাই এই ধরনের অপরাধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে এই প্রবণতা কিছুতেই বন্ধ হবে না।
বেঁধে দেওয়া হল সময়সীমা
কিন্তু এক্ষেত্রে পাল্টা বিডিও-র তরফে দাবি করা হয় যে, উপযুক্ত প্রশিক্ষণ না থাকার কারণে নাকি ভুবনেশ্বরী মণ্ডলকে এখনও নিয়োগ করা হয়নি। যা শুনে রীতিমত উষ্মা প্রকাশ করেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। এবং তখনই ওই বিডিও-র বিরুদ্ধে রুল জারির নির্দেশ দেন তিনি। একই সঙ্গে আদালতের নির্দেশ কার্যকর না করার জন্য ওই বিডিওকে কেন এক মাসের জন্য জেলে পাঠানো হবে না, সেই প্রশ্নেরও জবাব তলব করেছেন বিচারপতি। ইতিমধ্যেই ওই বিডিও এর বিরুদ্ধে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি বিডিওকে আদালতে উপস্থিত থেকে বিচারপতির এই প্রশ্নের জবাব দিতে হবে।