বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয়ের পর বর্তমানে 47তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমেরিকার মসনদে বসেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump)। আর হোয়াইট হাউজের সিংহাসন পাওয়ার পরই ফের শত্রুদের নিজের রুদ্র মূর্তি দেখাতে শুরু করেছেন রিপাবলিকান নেতা। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেশের ক্ষমতা পাওয়ার পর একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প। যার মধ্যে অন্যতম হলো USAID-র অর্থায়ন বন্ধ করা।
হ্যাঁ, বাংলাদেশের পর এবার পাকিস্তানের USAID অর্থাৎ মার্কিন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার অর্থ সহায়তা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আমেরিকার নবনিযুক্ত প্রেসিডেন্ট। যার দৌলতে পাক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলি যে ভল্ট থেকে অর্থ সাহায্য পেত তা চিরতরে বন্ধ হতে চলেছে। সূত্র বলছে, USAID অর্থাৎ আমেরিকান আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ভারতের অন্যতম জাত শত্রু লস্কর-ই-তৈয়বাকে অর্থায়ন করত। ট্রাম্পের এই নয়া পদক্ষেপে এবার সেই রাস্তায় কাঁটা বসবে।
ভারতের শত্রুকে অর্থ সাহায্য করত আমেরিকা
বেশকিছু রিপোর্ট মারফত খবর, পাকিস্তানের অন্যতম সন্ত্রাসী হাফিজ সাইদের সশস্ত্র জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বাকে 2019 সাল নাগাদ 1 লাখ 10 হাজার ডলার অর্থ সাহায্য করেছিল আমেরিকার আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা USAID। আর এই লস্কর-ই-তৈয়বা সন্ত্রাসী সংগঠনই বারংবার ভারতে হামলা চালানোর ছক কষেছে।
ভারতকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছে হাফিজের এই অত্যাচারী সংগঠন। বলে রাখা ভাল, 26/11 মুম্বই হামলার নেপথ্যে রয়েছে এই পাক সন্ত্রাসী সংগঠন। আর এহেন অত্যাচারী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর টিকে থাকার রসদ এতদিন যুগিয়ে এসেছে আমেরিকা। তবে ভারতের শুভাকাঙ্ক্ষী ট্রাম্পের হাতে ক্ষমতা আসতেই এবার সেই রাস্তা বন্ধ হতে চলেছে।
ট্রাম্প ও মাস্ক দুজনেরই লক্ষ্য USAID!
গত মঙ্গলবার সদ্য গঠিত ট্রাম্প সরকারের তরফে জানানো হয়, আমেরিকান আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা বা USAID-তে কর্মরত ও সরাসরি নিযুক্ত ব্যক্তিদের ছুটি দিয়ে বিদেশে কর্মরত সমস্ত কর্মীকে ফিরিয়ে আনা হবে। কংগ্রেসনাল রিসার্চ সার্ভিস বা CRS-এর হিসেব বলছে,
USAID সংস্থায় কর্মরত 10 হাজারেরও বেশি কর্মীর এক তৃতীয়াংশ বিদেশে কর্মরত। বর্তমানে 60টিরও বেশি দেশে USAID-র সদর দফতর রয়েছে। আর এই সংস্থাই পাকিস্তানি সন্ত্রাসী সংগঠনগুলিকে অর্থের মূল রসদ যোগাতো।
অবশ্যই পড়ুন: ‘অখন্ড ভারত’ তৈরিই লক্ষ্য, বাজেটে সেনার জন্য বরাদ্দ দেখেই কালঘাম ছুটছে পাকিস্তানের
এবার সেই রাস্তায় কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন নবনিযুক্ত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বেশ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, ট্রাম্পের পাশাপাশি তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষী তথা টেসলা কর্তা ইলন মাস্কও প্রথম থেকেই USAID সংস্থার উপর নজর রেখেছিলেন। সম্প্রতি একটি বিবৃতিতে টেসলা কর্তা জানান, USAID একটি অপরাধমূলক সংস্থা। যা কখনই সংস্কার করা সম্ভব নয়।
ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে লাভ হবে ভারতের?
পাকিস্তানের অন্যতম দাতব্য সংস্থা ফালাহ-ই-ইনসানিয়াত ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা অন্যতম পাক সন্ত্রাসী হাফিজ সাইদ 1990 সালে লস্কর-ই-তৈয়বা নামক সশস্ত্র সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে। এই সংগঠনের প্রধান লক্ষ্য ছিল ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে দেশটির বিভিন্ন বড় শহর গুলিতে হামলা চালানো। সেই সূত্র ধরেই হাফিজের নেতৃত্বে মুম্বইয়ে দুষ্কৃতি হামলা চালায় এই সংগঠন। এরপর থেকেই ভারতকে লক্ষ্য বানিয়ে একের পর এক হামলার ছক কষে গিয়েছে লস্কর-ই-তৈয়বা। আর সেই পথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সংগঠনটিকে আর্থিক সহায়তা করত আমেরিকা। সেই অনুদান বন্ধ হলে আখেরে লাভ হবে ভারতের।