প্রীতি পোদ্দার, ঢাকা: গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে আগস্ট মাসে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশ। কোটা বাতিলের প্রসঙ্গকে কেন্দ্র করে রীতিমত উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল গোটা দেশ। পরিস্থিতি এতটাই জটিল আকার ধারণ করেছিল যে শেষে বাধ্য হয়ে শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে হয়েছিল। বিক্ষোভকারীরা তাণ্ডব শুরু করেছিল গণভবনে। জিনিসপত্র লুট করার পাশাপাশি শেখ হাসিনার অন্তর্বাস নিয়েও নোংরামো করতে ছাড়েনি বিক্ষোভকারীরা। তারপরে যদিও মুহাম্মদ ইউনূস এর অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু সমস্যা এখনও মেটেনি। হাসিনা সরকারের পতনের ছয় মাস পর ফের টালামাটাল হয়ে উঠেছে ওপার বাংলা।
ফের উত্তপ্ত বাংলাদেশ
সূত্রের খবর, গতকাল অর্থাৎ বুধবার বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের ধানমন্ডির বাড়ি সকাল থেকেই বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। আর সেই হুঁশিয়ারি এবার বাস্তবের রূপ নিল। ভারতীয় সময় রাত ৮ টা নাগাদ বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে গণভবনের কায়দায় চড়াও হয় বিক্ষোভকারীরা। বাড়ির গেট ভেঙে ঢুকে বাড়ি ঘর ভাঙচুর এবং আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এবং এই বিক্ষোভের সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা স্লোগান দেয় যে ফ্যাসিবাদের তীর্থভূমি মুক্ত হবে বাংলাদেশ। কিন্তু প্রশ্ন হল কেন হঠাৎ করে এই অবস্থার মুখোমুখি হতে হল বাংলাদেশকে।
ভেঙে দেওয়া হল মুজিবর রহমানের ধানমন্ডির বাড়ি
আসলে গতকাল বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সোশ্যাল মিডিয়ায় বক্তব্য রাখার কথা ছিল। যা নিয়ে আওয়ামি লিগের তরফে জোরদার প্রচার শুরু হয়। আর তারপরেই বিরোধীদের মধ্যে হিংসার আগুন জ্বলে ওঠে। তাঁদের তরফে স্লোগান ওঠে ‘গুড়িয়ে দাও তাড়াতাড়ি, ৩২ নম্বরের দালানবাড়ি’। বিদেশে থাকা বিএনপি, জামাতের তরফেও এই বিষয়ে প্রচার চালানো হয়। তারপরই এই ঘটনা ঘটে। কিন্তু অবাক করা বিষয় হল গোটা বিশ্ব যখন বাংলাদেশের এই ভয়ংকর ছবি দেখতে পাচ্ছে, তখন সেখানকার পুলিশ প্রশাসন এই কর্মসূচির সম্পর্কে একদমই নাকি অজানা ছিলেন। যার ফলে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও উঠছে একাধিক প্রশ্ন।
অন্যদিকে খুলনায় বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাকার বাড়ি। জানা গিয়েছে দুটি বুলডোজার নিয়ে বাড়িটি গুঁড়িয়ে দেয় উন্মত্ত জনতা। এছাড়াও চট্টগ্রাম ও সিলেটেও এ দিন ছড়িয়েছে অশান্তি। দুটি জায়গায় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভেঙে দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। চট্টগ্রামে মশাল মিছিল করে শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালও হাতুড়ি দিয়ে ভেঙে ফেলে বিক্ষোভকারীরা। এদিকে এই ঘটনার পর মুখ খুলেছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে, “এই বাড়িতে একটা ইতিহাস জড়িয়ে আছে। অনেকেই সংবিধানকে ধ্বংস করতে চাইছে। এই ঘটনা ওদের দুর্বলতার লক্ষণ। তারা একটা দালান ভাঙতে পারে। ইতিহাস কিন্তু প্রতিশোধ নেয়। পাকিস্তানিদের অধীনে থাকা এবং তাদের পদলেহন করাটাই ওদের কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে।”