প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বিনোদন জগতে বেশিরভাগ ধারাবাহিকে শাশুড়ি বৌমার দ্বন্দ্ব দেখানো হয়। কখনও দেখা যায় শাশুড়ি বৌমার ক্ষতি করছে আবার কখনও দেখা যাচ্ছে বৌমা শাশুড়ির ক্ষতি করছে। তবে সেই দৃশ্য শুধু সিরিয়ালেই নয় বাস্তবেও দেখা যায়। কিন্তু তাই বলে এই নিয়ে হাইকোর্টে মামলা! রীতিমত রান্নাঘর নিয়ে দড়ি টানাটানির মামলা উঠল এবার কলকাতা হাইকোর্টে।
ঘটনাটি কী?
জানা গিয়েছে উত্তর কলকাতার চিৎপুরের বাসিন্দা ৬২ বছরের এক বৃদ্ধা হাইকোর্টে মামলা করেছেন তাঁর একমাত্র পুত্র ও পুত্রবধূর বিরুদ্ধে। তাঁর বক্তব্য, চিৎপুরে তাঁর স্বামী পাশাপাশি দু’টি বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন। কিন্তু মেয়েদের বিয়ের পরে এখন একটি বাড়িতে ছেলে তার সংসার নিয়ে থাকে। এদিকে ওই একটি বাড়ির রান্নাঘরও তারা দখল করে নিয়েছে। ফলে তাঁকে একটিমাত্র ঘরে থাকতে হয়, সেই ঘরেই রান্না করতে হয়। এই নিয়ে সমস্যা অশান্তি লেগেই থাকত। পুলিশের কাছেও এই বিষয়ে অভিযোগ জানানো হয়। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি। তাই এবার এই বিষয়ে হাইকোর্টে মামলা করল এক বৃদ্ধা।
শাশুড়ি বৌমার দ্বন্দ্বে বেজায় মুশকিল বিচারপতি ঘোষ!
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ এর বেঞ্চে আবেদনকারী অঞ্জু রায় রান্নাঘর অধিকার নিয়ে মামলা করেন। তাঁর দাবি, রান্নাঘর থেকে নাকি সমস্ত সামগ্রী জোর করে বাইরে ফেলে দেওয়া হয়েছে। তাঁকে রান্নাঘরের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। ওদিকে অঞ্জু দেবীর ছেলের দাবি, অঞ্জু দেবী নাকি নিজেই রান্না ঘর থেকে তাঁর সমস্ত জিনিসপত্র সরিয়ে নিয়েছিলেন। এবং সম্ভবত মেয়েদের উসকানিতে ছেলে ও ছেলে বউ এর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। যার ফলে শাশুড়ি – বৌমার দড়ি টানাটানির মাঝখানে পড়ে বেহাল দশা বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের।
বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ প্রথমে বৃদ্ধার দায়ের করা এই মামলায় কোনও নির্দেশ দিতেই অস্বীকার করেন। তাঁর বক্তব্য, ঘরের এই ছোট খাটো বিষয়ে কেন পুলিশ ঢুকবে। তাই সংশ্লিষ্ট ফোরামে গিয়ে বৃদ্ধাকে আবেদন করতে পরামর্শ দেন তিনি। যদিও আবেদনকারীর আইনজীবীর কাতর আর্জিতে শেষ পর্যন্ত আদালত সাময়িক ভাবে পুলিশকে বিষয়টি দেখতে বলে। আদালতের তরফে চিৎপুর থানার পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয় যে গৃহযুদ্ধ বন্ধ রাখতে ১ দিন অন্তর ১ জন মহিলা কন্সটেবলকে বৃদ্ধার বাড়িতে যেন পাঠানো হয়।