পার্থ সারথি মান্না, কলকাতাঃ রাজ্যের দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত নাগরিকদের আর্থিক ও সামাজিক উন্নতির জন্য সরকারের তরফ থেকে একাধিক প্রকল্প চালু করা হয়। যেমন বাংলায় লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্প চালু হয়েছে। তবে এবার জানা যাচ্ছে, আর্থিক পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে সরকারি প্রকল্প বন্ধ করা হতে পারে। কোন কোন স্কিম বন্ধ হবে আর কবে থেকে? জানতে আজকের প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
আর্থিক সংকটের জেরে বন্ধ হতে পারে সরকারি প্রকল্প
হ্যাঁ ঠিকই দেখছেন, রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতির কারণে বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে বেশ কিছু প্রকল্প। তবে স্বস্তির বিষয় হল এই যে পশ্চিমবঙ্গে এমনটা হচ্ছে না। মহারাষ্ট্রের সরকারের তরফ থেকেই এমন খবর পাওয়া যাচ্ছে। সম্প্রতি ক্যাবিনেট বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীস, আধিকারিকদের সাথে দুটি যোজনার সমীক্ষা করতে বলেছেন। কারণ দুই প্রকল্পের জেরেই সরকারের ঘাড়ে ১৩০০ কোটি টাকার খরচের বোঝা চাপছে।
কোন দুই প্রকল্প বন্ধ হতে পারে?
শিবভোজন থালি যোজনা: উদ্ধব ঠাকরে মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় মহারাষ্ট্র সরকার চালু করেছিল শিবভোজন থালি যোজনা। এটি একটি সাবসিডি যোজনা যেখানে মাত্র ১০ টাকার বিনিময়ে চাপাতি, সবজি, চাল ও ডাল দিয়ে একটি ভোজনের থালি দেওয়া হয়। তবে এই একটি থালির জন্য বাস্তবে গ্রামীণ এলাকায় ৩৫ টাকা ও শহরাঞ্চলে ৫ ০ টাকা খরচ হয়।
২৬ জানুয়ারি ২০২০ সালে এই যোজনা চালু করা হয়েছিল। যার দরুন ১৬৯৯টি ভোজন কেন্দ্র চালু করা হয়েছিল। প্রতিদিন প্রায় ২ লক্ষ থালি দেওয়ার কথা থাকলেও এখন ১ লক্ষ ৮০ হাজার থালি খাবার প্রদান করা হয়।
আনন্দাচা সিধা যোজনা: মহারাষ্ট্র সরকার দ্বারা চালু করা আরেকটি যোজনা হল আনন্দাচা সিধা যোজনা। এটি মূলত দীপাবলি, গুড়ি পাওয়া, ডাঃ বাবাসাহেব আম্বেদকর জয়ন্তী উপলক্ষে অত্যাবশ্যক জিনিসপত্র প্রদান করা হয়। এর মধ্যে ১ কেজি চিনি, ১ লিটার তেল, ৫০০ গ্রাম সুজি, ৫০০ গ্রাম ছোলার ডাল, ৫০০ গ্রাম ময়দা, ৫০০ গ্রাম পোহা দেওয়া হয়। যার জন্য মাত্র ১০০ টাকা দাম নেওয়া হয়।
২০১৩ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্প AAY রেশন কার্ড ধারক ও ১৪ টি আত্মহত্যা প্রবণ APL কার্ডের কৃষকদেরও এই বিশেষ খাদ্য বক্স নূন্যতম দামে প্রদান করে। ২০২২ সালের হিসেবে অনুযায়ী এই প্রকল্পে ১.৬ কোটি বক্স দেওয়া হয়েছিল যার জন্য সরকারের ১৬০ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল।
প্রকল্প চালু রাখার আবেদন মুখ্যমন্ত্রীকে
ইতিমধ্যেই প্রাক্তন উপ মুখ্যমন্ত্রী ছগন ভুজবল মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে অনুরোধ করেছেন এই প্রকল্প চালু রাখার জন্য। কারণ এটি রাজ্যের দরিদ্র ও বঞ্চিত সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। তাছাড়া প্রতিদিন ২ লক্ষ প্লেটের হিসাবে সারা বছরের জন্য ২৬৭ কোটি টাকা খরচ হবে। এটা গরিবের মুখে অন্ন তুলে দেওয়ার জন্য এমন কিছু বিশাল অঙ্ক নয় যেটা রাজ্য সরকার বহন করতে পারবে না।
অব্যশই এখানেই শেষ নয়, এনসিপি নেতা ও প্রাক্তন ক্যাবিনেট মন্ত্রী জিতেন্দ্র আহ্বাদ জানান, সরকারের উচিত লড়কি বেহন যোজনা ও গরিবের জন্য চালু করা যোজনার বিজ্ঞাপন বা প্রচারের উপর খরচ কমানো উচিত বলে কটাক্ষ করেছেন। কারণ একদিকে টাকার অভাবে শিব ভোজন থালি বন্ধের কথা উঠছে অন্যদিকে লড়কি বেহন যোজনার প্রচারে ৩ কোটি খরচ হচ্ছে।