বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: বিদ্যুতের বকেয়া বিল পরিশোধ নিয়ে দীর্ঘ টালবাহানার পর ফের গৌতম আদানিকে (Gautam Adani) 1600 মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ কেন্দ্র পূর্ণ সক্ষমতায় চালু করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ(Bangladesh)। মূলত শীতের মরসুমে বিদ্যুতের কম চাহিদা ও বকেয়া অর্থ পরিশোধ সংক্রান্ত বিবাদের কারণে বাংলাদেশে সরবরাহ করা বিদ্যুতের পরিমাণ অনেকটাই কমিয়ে এনেছিল আদানি। তবে সেই টানাপোড়েন মিটিয়ে আবারও পুরো দমে বিদ্যুৎ সরবরাহের আহ্বান এসেছে বাংলাদেশের তরফে। বাংলাদেশের এক কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
বাংলাদেশকে কড়া জবাব দিয়েছিলেন আদানি
ওপার বাংলার এক কর্মকর্তার তরফে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, 3 মাসেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে স্বল্প বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আসছে আদানি। যার নেপথ্যে ছিল মূলত ওপার বাংলায় খরচ হওয়া বিদ্যুতের মোটা অঙ্কের বকেয়া। 2017 সালে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনকালে স্বাক্ষরিত 25 বছরের চুক্তির ভিত্তিতে ঝাড়খন্ডে অবস্থিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করত আদানির সংস্থা।
জানা যায়, 800 মেগাওয়াট ক্ষমতার দুই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদিত বিদ্যুতের মোট পরিমাণই লাগতো বাংলাদেশের কাজে। এহেন আবহে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট দেখা দিলে বাংলাদেশকে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল মেটানোর অনুরোধ করে আদানি। শেষ পর্যন্ত মোম না গলায় বাংলাদেশে সরবরাহকৃত বিদ্যুতের পরিমাণ গত বছরের 31 অক্টোবর থেকে কমিয়ে অর্ধেক করা হয়।
রিপোর্ট বলছে, আদানি বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ায় একটি বিদ্যুৎ ইউনিট বন্ধ হয়ে যায়। ফলত ঝাড়খণ্ডের একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত 42 শতাংশ বিদ্যুৎ বাংলাদেশ সরবরাহ করতে থাকে আদানি। বলে রাখা ভাল, ইউনূসের সরকারের তরফেও আদানিকে সেই সময় অর্ধেক বিদ্যুৎ সরবরাহের কথা বলা হয়েছিল।
আদানির বিদ্যুৎ বকেয়া পরিশোধ করছে বাংলাদেশ
ওপার বাংলার সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ব বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের তরফে জানানো হয়েছে, বিদ্যুতের বকেয়া অর্থ পরিশোধের জন্য প্রতি মাসে আদানিকে 85 মিলিয়ন ডলার পাঠাচ্ছে তারা। জানা যায়, বকেয়া মেটানোর পাশাপাশি আবারও পুরো দমে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য আদানিকে বারংবার অনুরোধ জানানো হচ্ছে বিপিডিবি-র তরফে। মূলত ঝাড়খণ্ডের দুই ইউনিট থেকেই সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ সরবরাহের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
দুই ইউনিট থেকেই বিদ্যুৎ চাইছে ইউনূসের দেশ
বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, দেশে বর্তমানে বিদ্যুতের চাহিদা অনুযায়ী এখনই দ্বিতীয় ইউনিট চালু করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু বেশি কম্পনের কারনে তা সম্ভব হয়নি।
আরও পড়ুনঃ অজানা ভাইরাসে মৃত্যু হাজার হাজার মুরগির, সতর্কতা জারি কেন্দ্রের, হু হু করে কমছে দাম
রেজাউল বলেন, সোমবার ইউনিট পুনরায় চালু করতে গিয়ে বেশ কিছু প্রযুক্তিগত সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে তাদের। বকেয়া বিল প্রসঙ্গে বিপিডিবি-র চেয়ারম্যান জানান, আদানি গোষ্ঠীর বিদ্যুৎ বকেয়া বাবদ এখন আমরা প্রতি মাসে 85 মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করছি। চেষ্টা আছে আগামী দিনে যাতে আরও বেশি অর্থ পরিশোধ করা যায়। বর্তমানে আদানির সঙ্গে আমাদের কোনও সমস্যা নেই। বিদ্যুৎ বকেয়া নিয়ে যাবতীয় সমস্যা মিটিয়ে ফের আদানির কাছ থেকে 100 শতাংশ বিদ্যুৎ দাবি করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড।
বিদ্যুতের ট্যারিফ নিয়ে বিরোধ
গত বছরের শেষ লগ্নে আদানি সংস্থার একটি সূত্র জানিয়েছিল, বাংলাদেশ রাষ্ট্রায়ত্ত উন্নয়ন বিদ্যুৎ বোর্ড অর্থাৎ বিপিডিবির কাছে 900 মিলিয়ন ডলার পাওনা রয়েছে তাদের। তবে সম্প্রতি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ বোর্ডের চেয়ারম্যান করিম দাবি করেছেন, আদানির কাছে বকেয়া অর্থের পরিমাণ মাত্র 650 ডলার। ফলত আদানির সাথে বিদ্যুতের বকেয়া অর্থ নিয়ে বিতর্কের পারদ যথেষ্ট চড়েছে। যদিও এর কেন্দ্রবিন্দু আসলে 2017 সালের বিদ্যুৎ চুক্তি। দুটি সূচকের গড়ের ভিত্তিতে বিদ্যুতের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল।
আরও পড়ুনঃ একটানা চারদিন ছুটি, ফেব্রুয়ারিতে সরকারি কর্মীদের ‘হলিডে সারপ্রাইজ’ দিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, আদানির কাছ থেকে পাওয়া বিদ্যুতের মূল্য ভারত থেকে সরবরাহ করা অন্য কেন্দ্রের বিদ্যুৎ মূল্যের তুলনায় অন্তত 55 শতাংশ বেশি। অর্থাৎ ভারতের বিদ্যুতের সাধারণ মূল্যের থেকে আদানি সংস্থাকে বহুগুণ বেশি অর্থ চোকাতে হচ্ছে বাংলাদেশের।এমনটাই দাবি করা হয়েছে ওপার বাংলার এক সংবাদমাধ্যমে। সেখানে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ে আদানি গোষ্ঠীর সাথে যে চুক্তি হয়েছিল তাতে উল্লিখিত বেশ কয়েকটি শর্ত লংঘন করেছেন আদানি। যদিও ভারতীয় সংস্থার এক মুখপাত্রের তরফে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |