সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) আবারও বিজেপির বিরুদ্ধে তীব্র হুঙ্কার ছাড়লেন। নাম না করে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে কটাক্ষ করলেন এবার ভরা বিধানসভায়। তিনি জানান, “আমার বিরুদ্ধে যদি কোন অভিযোগের প্রমাণ থাকে তাহলে আমি মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেব। কিন্তু যদি মিথ্যা অভিযোগ করা হয় তাহলে বিজেপিকে জনগণের সামনে ক্ষমা চাইতে হবে।” স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে হঠাৎ কেন তিনি এমন মন্তব্য করলেন।
বিজেপি দীর্ঘদিন ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তোষনের রাজনীতি করার অভিযোগ জানিয়ে আসছিল। শুভেন্দু অধিকারী আরও একধাপ এগিয়ে ছিল। এবার মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরাসরি জঙ্গিদের সঙ্গে যোগাযোগের অভিযোগ নিয়ে এসেছেন বিরোধী দলনেতা। আর সেই অভিযোগের কড়া জবাব দিয়েই মঙ্গলবার বিধানসভা থেকে হুঙ্কার ছাড়লেন মমতা।
কী বললেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী?
ভরা বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি নাকি মুসলিম লীগ করি, আমি নাকি জঙ্গিদের সাহায্য করি, এইসব ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হচ্ছে। যদি কেউ প্রমাণ করতে পারে তাহলে আমি নিজে থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াবো।” তিনি শুধু এখানেই থেমে থাকেননি। তিনি আরও জানিয়েছেন, “আমাকে টেরোরিস্ট বলা হচ্ছে। আমি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখব এবং সব জানাবো। যদি অভিযোগ প্রমাণ হয় আমি স্বদিচ্ছায় পদত্যাগ করব। আর যদি মিথ্যা অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাহলে বিজেপির উচিত রাজ্যবাসীর কাছে ক্ষমা চাওয়া।”
না এখানেই শেষ নয়। তিনি আরো কটাক্ষ করে বলেছেন, “বাংলায় ভাগাভাগির রাজনীতি চলবে না। বিজেপি ভোটের সময় অন্য পার্টিকে হারাতে মুসলিম লীগের সাহায্য নিতে পারে, তখন সেটা ঠিক। কিন্তু তৃণমূল করলে সেটা ভুল?”
সরস্বতী পুজো এবং ধর্মীয় রাজনীতি নিয়ে বার্তা
বিরোধী দল বিজেপির ধর্মীয় রাজনীতির কড়া সমালোচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন বিধানসভায় তিনি বলেন, “বাংলায় সরস্বতী পূজা বন্ধ হয় না। বরং স্কুল-পাড়ায় সবাই আনন্দ করে পূজা করে। অথচ বিজেপি এমন ভাবে কথা বলছে, যেন আমরা হিন্দু ধর্মের বিরুদ্ধে।” তিনি আরো জানিয়েছেন, “আমি হিন্দু। আমি দুর্গাপূজা করি, কালীপূজা করি। কিন্তু বিজেপির মত আমি ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করি না। ধর্মের নামে কোনরকম বিদ্বেষ ছড়ানো আমি বরদাস্ত করব না।”
শুভেন্দুকে কড়া চ্যালেঞ্জ মমতার
দীঘায় জগন্নাথ মন্দির নির্মাণ নিয়ে শুভেন্দু অধিকারীকে কটাক্ষ করে মমতা জানিয়েছেন, “জগন্নাথ মন্দির নিয়ে বিজেপির এত জ্বালা কেন? বুকের পাটা থাকলে আটকে দেখাক। আমি জানি বিজেপির আসল উদ্দেশ্য কোথায়। ধর্মের নামে উস্কানি দিয়ে দাঙ্গা বাঁধানোর পরিকল্পনা করছে বিজেপি। কিন্তু বাংলার মানুষ এসব মেনে নেবে না।” তিনি আরো জানান, “বকবকবাবুর (শুভেন্দু অধিকারী) অনেক কচুরিপানার মত কথা আছে। বেশি গরম লাগলে ওষুধ খেতে বলুন। এই বাংলায় মিথ্যা প্রচার করে আর কোনো রকম লাভ হবে না। বাংলার মানুষ এখন সব বোঝে।”
বিজেপিকে হুঁশিয়ারি
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, “বাংলার সংস্কৃতি বিভাজনের রাজনীতিকে কখনোই মেনে নেওয়া হবে না।” তিনি বলেন, “আমি বাংলার মেয়ে। এই মাটির সঙ্গে আমার সম্পর্ক, ধর্মের নামে কুৎসা রটানো আমি মেনে নেব না। যদি সাহস থাকে উন্নয়ন নিয়ে কথা বলুক। মানুষের জন্য কি করছেন সেটা বলুন। কিন্তু বাংলায় সাম্প্রদায়িকতা ছড়াতে দেব না।”
আরও পড়ুনঃ আর গা ছাড়া কাজ নয়! এবার আরজি কর মামলায় সময়সীমা বেঁধে দিল হাইকোর্ট
তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে, বিজেপি ধর্মকে হাতিয়ার করে বাংলায় উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু এতে বাংলার মানুষ বিভ্রান্ত হবে না এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তারা আবারও বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করবে বলেই আশা করছে রাজনৈতিক মহল।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |