প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত বছর ৩০ নভেম্বর, বড়তলা থানা এলাকার সাত মাসের ফুটপাথের এক শিশুকন্যা নিখোঁজ হয়ে যায়৷ দিনকয়েক পর আবার তার খোঁজ পাওয়া গেলেও একেবারে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় পড়েছিল সে৷ এমনকি তার যৌনাঙ্গেও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়৷ আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হলে জানা যায় এই সাত মাসের শিশুকন্যার সঙ্গে যৌন নির্যাতন করা হয়েছে। যা নিয়ে রীতিমত শোরগোল পড়ে যায়। অবশেষে এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত দোষীকে খুঁজে বের করে পুলিশ (Kolkata Police)।
দোষী সাব্যস্ত রাজীব ঘোষ
নাবালিকাকে যৌন হেনস্তার ঘটনায় আড়াই মাসের মাথায় গত ৪ ডিসেম্বর ঝাড়গ্রাম থেকে অভিযুক্ত রাজীব ঘোষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২৬ দিনের মাথায় আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়। রাস্তার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে যুবককে চিহ্নিত করা হয়েছিল। এরপর গত সোমবার রাজীব ঘোষ নামে এক যুবককে দোষী সাব্যস্ত করে নগর ও দায়রা আদালত। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৩৭(২), ৬৫(২) এবং শিশু সুরক্ষা আইনের (পকসো) ৬ নম্বর ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয় তাকে। জানা গিয়েছে এই ঘটনার তদন্তভার নিয়েছিল সাব-ইন্সপেক্টর মানসী মাইতি রায়। তাঁর নেতৃত্বেই পুলিশের বাকি টিম এই ধর্ষণ-কাণ্ডের সুরাহা করেন।
মানসী মাইতি রায়ের কর্মজীবন
এই ঘটনার তদন্তে সাব-ইন্সপেক্টর মানসী মাইতি রায় এর এই উল্লেখযোগ্য ভূমিকা সকলকে অবাক করে দিয়েছে। কিন্তু জানেন কি এই সাব-ইন্সপেক্টর মানসী মাইতি রায় তাঁর কর্মজীবনে এর আগেও আরও একাধিক কর্মকাণ্ড করেছে যা সকলকে চমকে দিয়েছে। জানা গিয়েছে ২০১৯ সালে টালা থানায় চোদ্দ বছরের মেয়ের নিখোঁজ ডায়রি করেছিল এক দম্পতি। তাঁদের দাবি ছিল, তাঁদের মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে। সেই সময় মানসী মাইতি রায় এই ঘটনার তদন্তভার নিজের কাঁধে তুলে নেয়। সঙ্গে সঙ্গে গোটা ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে জানা যায় নিখোঁজ নাবালিকার সঙ্গে এক বাস ড্রাইভারের সম্পর্ক ছিল। এমনকি ওই বাসের চালকও নাবালিকার নিখোঁজের দিন থেকেই নিখোঁজ। পরে জানা যায়, দিল্লিতে রয়েছে নাবালিকা। ওই বাস চালক নাকি মেয়েটিকে নিয়ে দিল্লি চলে যায়। এবং সেখানে গিয়ে তাঁরা বেআইনিভাবে বিয়ে করে।
আরও পড়ুনঃ পেনশনের দাবিতে কোর্টে অর্পিতা
একাধিক পকসো মামলার তদন্ত করেছেন এই লেডি অফিসার
তারপর একাধিকবার তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করলেও পরে নাবালিকার সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করে। প্রায় দুমাস পর গ্রেফতার হয় ওই চালক। তার বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা রুজু হয়। আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয় যুবক। দশ বছরের কারাদণ্ড হয় তার। সঙ্গে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা হয়। এবং নিখোঁজ মেয়েটিকে তুলে দেওয়া হয় ওই দম্পতির হাতে। শুধু এই ঘটনা নয় এর আগে ছয়টি পকসো মামলার তদন্ত শেষ করেছেন।