প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: সালটা ছিল ২০১২, সেই সময় বিশ্ব জুড়ে পৃথিবী ধ্বংসের এক গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল। সমস্ত কিছু তছনছ হয়ে যাবে বলে শোনা গিয়েছিল। ভূমিকম্প এবং সুনামির ঠেলায় রীতিমত বাড়ি গুলি তাসের ঘরের মত ভেঙ্গে পড়বে বলে শোনা গিয়েছিল। যদিও এই নিয়ে একটা হলিউড সিনেমাও বেরিয়েছিল। আর এই আবহে ফের পৃথিবী ধ্বংসের খবর ছড়িয়ে পড়ল। আর এই ভয়ংকর ঘটনার পিছনে দায়ী থাকতে চলেছে বিশালাকার গ্রহাণু (Asteroid 2024 YR4) । এমনই ধারণা বিশেষজ্ঞদের।
ফের পৃথিবী ধ্বংসের আতঙ্ক বিশ্বজুড়ে
২০১২ এর পর ফের পৃথিবী ধ্বংসের খবর শোনা যাচ্ছে ২০২৫ এ। তবে ধ্বংসের তারিখ অনুমান করা হচ্ছে ৭ বছর পর। NASA র তরফ থেকে জানা গিয়েছে মহাকাশে একটি গ্রহাণু শনাক্ত করা হয়েছে যেটি কিনা পৃথিবীতে আঘাত করার সম্ভাবনা প্রায় ৩.১ শতাংশ। অনুমান করা যাচ্ছে ২২ ডিসেম্বর, ২০৩২ এ পৃথিবীতে আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে এই গ্রহাণুর। তবে সেক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা আশ্বস্ত করেছেন সাধারণ মানুষের আতঙ্কের কোনও কারণ নেই, কারণ বিশ্বব্যাপী মহাকাশ সংস্থাগুলি এর গতিপথ পর্যবেক্ষণ করা হবে।
জাপানের হিরোশিমার বোমার থেকেও বেশ বড়
NASA র তরফ থেকে আরও জানা গিয়েছে যে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা এই গ্রহাণুটি উচ্চতায় প্রায় ৪০-৯০ মিটারের মধ্যে থাকতে পারে। ফলে এই গ্রহাণুটি পৃথিবীর যে অংশে ধাক্কা খাবে সেই অংশটিকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেবে। জনপ্রিয় সংবাদসংস্থা AFP জানিয়েছে, নাসার বিজ্ঞানীরা সতর্কতার পর ৯০ মিটারের গ্রহাণুটি শনাক্ত করেছেন। বলা হচ্ছে, জাপানের হিরোশিমায় যে আমেরিকান বোমা পড়েছিল তার থেকে এই গ্রহাণুটি নাকি কমপক্ষে ৫০০ গুণ বেশি শক্তিশালী। ফলে ভয়ংকর ধ্বংসস্তুপে রূপান্তরিত হবে।
কোথায় কোথায় পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে?
উল্লেখ্য ২০২৩ সালের ২৭ ডিসেম্বর চিলির এল সস অবজারভেটরি দ্বারা ২০২৪ YR4 নামক গ্রহাণুটি প্রথম চিহ্নিত করা হয়েছিল। তখনই NASA অনুমান করেছিল যে এর আকার ৪০-৯০ মিটার হতে পারে। এবং আশঙ্কা করা হয়েছিল যে এর বেগ প্রতি ঘণ্টায় ৪০,০০০ মাইলের কাছাকাছি এসে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করলে ধ্বংসের কারণ হতে পারে। আর এই গ্রহাণু পড়ার সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনা রয়েছে ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, ভেনেজুয়েলা, কলম্বিয়া, ইকুয়েডর, ইথিওপিয়া, সুদান এবং নাইজেরিয়ায়। এছাড়াও কলকাতা, মুম্বই ও ঢাকা শহরে এই গ্রহাণু আছড়ে পড়তে পারে বলে খবর।
আরও পড়ুনঃ বেতন ৩৫০০০, মাধ্যমিক পাসেই রেলের টিকিট কালেক্টরের চাকরি! ১৩,৫০০ পদে নিয়োগ
তবে এত কিছুর মাঝেও স্বস্তির খবর দিয়েছে বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানিয়েছেন ৯৭ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে যে এই গ্রহাণু পৃথিবীর পাশ দিয়ে নিরাপদে বেরিয়ে যেতে পারে। তবে ৩ শতাংশ সন্দেহের মধ্যে রয়েছে। কারণ গ্রহাণুটি বর্তমানে বৃহস্পতির দিকে সরে যাচ্ছে এবং ২০২৮ সাল পর্যন্ত আর কাছাকাছি আসবে না।