প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গ্রামে একের পর এক পরিকাঠামোগত সমস্যা থেকেই গেছে। রাস্তা নির্মাণ থেকে নিকাশি নালা সংরক্ষণ ইত্যাদি রয়েছেই। অথচ, কেন্দ্রের পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের (15th Finance Commission) টাকা খরচ করতে বিভিন্ন জেলায় একের পর এক ঢিলেমির তথ্য সামনে উঠে এসেছে। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে রাজ্য সরকার নির্দেশ দিয়েছিল যে, ২১টি জেলা মিলিয়ে দৈনিক ৬০ কোটি টাকা খরচ করতে হবে। কিন্তু সম্প্রতি রাজ্য সরকার খতিয়ে দেখে, দৈনিক খরচের গড় লক্ষ্যমাত্রা থেকে বহু দূরে।
দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পেতেও অসুবিধা
পঞ্চদশ অর্থ কমিশন কাজ শুরু করেছিল ২০২০-’২১ অর্থবর্ষ থেকে। যার মেয়াদ প্রায় শেষের মুখে। ইতিমধ্যে ষোড়শ অর্থ কমিশন গঠন করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। মাস দুয়েক আগে সেই কমিশনের শীর্ষকর্তারা রাজ্যে এসে সর্বদল বৈঠকও করে গিয়েছেন। কিন্তু সমস্যা হল রাজ্যের গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নতির জন্য যে টাকা দেওয়া হয়েছিল তা এখনও পূরণ হয়নি। তার মধ্যে অন্যতম হল পূর্ব বর্ধমান। জানা গিয়েছে কেন্দ্রের পঞ্চদশ অর্থ কমিশন থেকে দেওয়া অর্থের এক চতুর্থাংশ খরচে ব্যর্থ পূর্ব বর্ধমান জেলার ২০ টি গ্রাম পঞ্চায়েত। তাদের টাকা পড়ে থাকায় জেলার বাকি পঞ্চায়েতগুলি চলতি আর্থিক বছরের জন্যে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পেতে অসুবিধায় পড়ছে।
পাশাপাশি গত ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের মোট প্রাপ্যের ৭০ শতাংশ টাকা এবং পঞ্চায়েত সমিতির ৮০ শতাংশ টাকা খরচ করতে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য। যদিও দেখা যায়, পুরুলিয়া জেলায় বহু পঞ্চায়েত এখনও ১০ শতাংশ টাকাই খরচ করতে পারেনি। এখনও কয়েক কোটি টাকা পড়ে রয়েছে পঞ্চায়েতে। আবার ওই ব্লকেরই টাটুয়ারা, ঝালদা-১ ব্লকের মারুমাসিনা, বলরামপুরের ঘাটবেড়া-কেরোয়া, বান্দোয়ানের চিরুডি, বরাবাজারের টুমরাশোল, জয়পুরের উপর কাহান, রঘুনাথপুর-২ ব্লকের নতুনডি, আড়ষার পুয়াড়া, হেঁসলা পঞ্চায়েতের অবস্থাও শোচনীয়।
কালনা ২ ব্লকের সাতগাছি তে শোচনীয় অবস্থা
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি আর্থিক বছরে জেলার ২১৫ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের হাতে ছিল ১৮০ কোটি ১৮ লক্ষ ৫৪ হাজার টাকা। ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তার মধ্যে খরচ হয়েছে ১৫০ কোটি ৯ লক্ষ টাকা। সব পঞ্চায়েতগুলি মিলিয়ে এখনও পড়ে আছে ৩০ কোটি ৯ লক্ষ ৫২ হাজার টাকা। জেলার ২৩টি পঞ্চায়েত সমিতি প্রাপ্য টাকার প্রায় ৯০ শতাংশ খরচ করতে পারলেও জেলা পরিষদ আর্থিক বছর শেষ হওয়ার দোরগোড়ায় পৌঁছে মাত্র ৪৫ শতাংশ টাকা খরচ করেছে। যার ফলে পঞ্চায়েত সচিবও ক্ষোভ ব্যক্ত করেছিলেন। এই পঞ্চায়েতগুলি ছাড়াও কেন্দ্রের অর্থ খরচের নিরিখে ‘দুর্বল’ পঞ্চায়েত বলে চিহ্নিত করা হয়েছে, কালনা ২ ব্লকের সাতগাছি, বৈদ্যপুর, কল্যাণপুর পঞ্চায়েতকে। সাতগাছি পঞ্চায়েতের ৪৫.১৬ লক্ষ টাকা, বৈদ্যপুরের ৩৫.৯৮ লক্ষ টাকা এবং কল্যাণপুরের ২৩.৯৮ লক্ষ টাকা এখনও পড়ে রয়েছে। যার ফলে গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা খরচের জন্য দুর্বল’ গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে নিয়ে বৈঠক করেছেন জেলাশাসক আয়েষা রানি।
আরও পড়ুনঃ সুন্দরবনে দক্ষিণরায়ের সংখ্যা ১০০ পার
বিডিওদের কড়া নির্দেশ জেলাশাসকের
সেই বৈঠকে পঞ্চায়েতের প্রধানরা ছাড়াও নির্মাণ সহায়ক, নির্বাহী সহায়করা উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই টাকা খরচ করতে না পারার কারণ হিসাবে পঞ্চায়েতের কর্তা ও আধিকারিকরা কর্মী সংখ্যা কম এবং দরপত্রের সমস্যা, টাকা খরচ হয়ে গেলেও পোর্টালে তা না দেখানো, প্রভৃতি না সমস্যার কথাও জানিয়েছে। সেক্ষেত্রে পঞ্চায়েতগুলিরই বক্তব্য ছিল, রয়ে থাকা টাকা চলতি মাসের মধ্যেই খরচ হয়ে যাবে। জেলাশাসক এদিনের বৈঠকে বিডিওদের ‘দুর্বল’ পঞ্চায়েতগুলির দিকে নজর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |