প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বছর ঘুরতেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে রাজ্যে একের পর এক সরকারি কাজে গড়িমসি ভাঙতে এবার জোর কদমে ময়দানে নামলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আদতে এই চিত্রটা রাজ্যবাসী এর আগে আরেক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর আমলে দেখেছিল। তিনি হলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। জ্যোতি বসুর উত্তরসূরী হিসেবে বাংলার মসনদে বসার পর থেকেই সরকারি কাজে গতি আনতে ‘ডু ইট নাও’ স্লোগান তুলেছিলেন। আর এবার সেই একই পদ্ধতিতে এবার কড়া পদক্ষেপ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সরকারি কর্মীদের কড়া হুঁশিয়ারি
চলতি বছর ‘বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন-২০২৫’ বা BGBS সম্পন্ন হয়েছিল গত মাসে। সেখানে প্রায় সাড়ে চার লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব সহযোগে শেষ হয়েছিল এই সম্মেলন। আর তাই এক মাস কাটতে না কাটতেই এবার সেই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিল্পকে নিয়ে গতকাল অর্থাৎ সোমবার, নবান্নে সর্বোচ্চ পর্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠক ( Mamata‘s Industry Meeting) করলেন। এবং স্কুলের কড়া শিক্ষিকার মত প্রত্যেক নেতাকে সরকারি প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে একের পর এক প্রশ্ন ধরতে লাগলেন। শুধু তাই নয় এছাড়াও বিভিন্ন সরকারি দফতরে কর্মীদের গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা তোলা নিয়ে সতর্ক করলেন।
লাইভ সম্প্রচার করে প্রশাসনিক কর্তাদের চাপ
আসলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় কোনো গ্রাহকের গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ফাইল পাস করানোর জন্য রীতিমত প্রত্যেক অফিসারের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয়। এখানেই শেষ নয়। একশ্রেণির অফিসারেরা আবার কাজের ক্ষেত্রে ব্যাপক ফাঁকিবাজি চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগও ওঠে। এমনও দেখা গিয়েছে কয়েকটি বিভাগে টেবিলের নীচ দিয়ে টাকা না দিলে নাকি কোনো ফাইলে কলমই চলে না। তাই সে সকল সমস্ত গড়িমসি এবং ফাঁকিবাজি দূর করতে এবং কড়া পদক্ষেপ নিতে প্রশাসনিক বৈঠক করে সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ সম্প্রচার করে প্রশাসনিক কর্তাদের চাপ আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
স্বতন্ত্র এজেন্সি তৈরি করতে পারে রাজ্য সরকার
এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠকে জানিয়েছেন যে, ‘‘ট্রেড ইউনিয়নগুলোকে বলব, অযথা বাড়াবাড়ি করবেন না। দরকারি কোনও বিষয় হলে সরাসরি কথা বলে বিষয়টা মেটাতে হবে। কারও ব্যক্তিগত চাহিদার জন্য কিছু করা যাবে না।’’ পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন যে, ‘‘স্থানীয় কোনও নেতা বলল, না না হবে না, সে ক্ষেত্রে আমাদের কাছে অভিযোগ করুন। আমরা দেখে নেব। সরকারি কাজে ঢিলেমি আমি একদমই সহ্য করব না। গড়িমসির জন্য বাংলার ভবিষ্যত যেন নষ্ট না হয়, সেটা দেখার দায়িত্ব কিন্তু সরকারি কর্তাদেরও।” আর এই আবহেই এবার মুখ্যমন্ত্রী পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য স্বতন্ত্র এজেন্সি তৈরি করতে চলেছে বলে ভরা বৈঠকে ইঙ্গিত দিলেন।
কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?
এদিন বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন যে, “জমির মিউটেশন, কনভার্সন এসব সরকারি কর্মীরা টাকা ছাড়া এগোয় না। সরকারের কাছ থেকে বেতন নেওয়ার পরও ঘুষ কেন? অ্যাকশন নিতে হবে। তাই আমাদেরও কিছু এজেন্সি দরকার, যারা নজর রাখবে।” তিনি আরও বলেন, “ পুলিশের অনেক কাজ থাকে। আইনশৃঙ্খলা সামলাতে সামলাতে তারা অন্যদিকে নজর দেওয়ার সময় পায় না। আমাদেরও কিছু ইনডিপিন্ডেট এজেন্সি দরকার, যারা নজর রাখবে।” তবে শুধু প্রশাসনের একাংশ নয়, দলের শ্রমিক সংগঠনকে টাকা তোলা বন্ধের হুঁশিয়ারি করেছেন।
আরও পড়ুনঃ এবার টানা আড়াই দিন বন্ধ থাকবে পরিষেবা, কবে থেকে? দিনক্ষণ জানাল কলকাতা মেট্রো
রাজ্যের বিভিন্ন শিল্পনগরীতে নিজের দলের শ্রমিক সংগঠনের কার্যকলাপ নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন নবান্ন সভাঘরের বৈঠকে হাজির শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটককে সম্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘দুর্গাপুরের আইএনটিটিইউসি সভাপতিকে আমি বদলাব। হলদিয়াতেও বদলাব। আর আপাতত গ্রাফাইটের প্রেসিডেন্ট আমি ঋতব্রতকে করতে বলেছি।’’ পরে আরও বেশ কিছু জায়গায় শ্রমিক সংগঠনে কিছু বদল তিনি আনবেন বলে মলয়কে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |