প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে টানা দেড় মাস ধরে চলেছে মহাকুম্ভের পুণ্যস্নান। কোটি কোটি মানুষের সমাহারে এই মেলা যেন বিশ্বের সেরা মেলার রূপ ধারণ করেছে। সব ধর্ম, সম্প্রদায় থেকে শুরু করে দেশ-বিদেশের কোটি কোটি মানুষ ছুটে এসেছে প্রয়াগরাজের মহাকুম্ভে (Mahakumbh 2025) পুণ্যস্নান করতে। মহামিলনের পাশাপাশি এই কুম্ভ যেমন অনেক মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে ঠিক তেমনই এই মহাকুম্ভ উজাড় করে অজস্র উপহার দিয়েছে শত কোটি মানুষকে।
কোটি টাকা উপার্জন নৌকো চালিয়েই!
প্রতি বারো বছর অন্তর অনুষ্ঠিত মহাকুম্ভ লক্ষ লক্ষ হিন্দু তীর্থযাত্রীদের জন্য যেন এক মহান আকর্ষণ। কারণ এই মহাকুম্ভেই, গঙ্গা, যমুনা এবং সরস্বতী নদীর সঙ্গমস্থলে ধর্মীয় স্নানের জন্য অসংখ্য পুণ্যার্থী সমবেত হন। এবছরেও প্রয়াগরাজের ত্রিবেণী সঙ্গমে পুণ্যস্নানের জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছিলেন লাখো মানুষ। তবে তাদের মধ্যে অনেকেই আবার সেখানে করেছেন জমিয়ে ব্যবসা। ছোট ব্যবসা হোক কিংবা বড় প্রত্যেক ব্যবসাদার জমিয়ে লাভ করেছেন বিপুল টাকা। এমনকি এক নৌকো চালকও মহাকুম্ভের দিনগুলিতে নৌকা চালিয়ে আয় করেছেন ৩০ কোটি টাকা! অবাক হচ্ছেন নিশ্চয়ই? খোদ সেই কথা প্রকাশ্যে এনেছেন যোগী আদিত্যনাথ। তাহলে সম্পূর্ণ ঘটনাটি একনজরে জেনে নিন বিস্তারিত।
মহাকুম্ভ শুরুর আগেই নৌকোর সংখ্যা বাড়ানো হয়
গত মঙ্গলবার বিধানসভায় উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ রাজ্যের পূর্ণকুম্ভ নিয়ে অনেক অভিজ্ঞতা সকলের কাছে প্রকাশ করেছেন। আর সেই অভিজ্ঞতা প্রকাশের মাঝেই উঠে এল এক নৌকা চালকের কাহিনী। জানা গিয়েছে পিন্টু মহারা নামে এক নৌকাচালক প্রয়াগরাজেরই বাসিন্দা ছিলেন। প্রয়াগরাজের সঙ্গমে তার ৬০টি নৌকা চলে। যেহেতু ১৪৪ বছর পর এই মহাকুম্ভ হচ্ছে, সেক্ষেত্রে তাঁর ধারণা ছিল এখানে কোটি কোটি মানুষের সমাগম হবে, তাই সেই কথা মাথায় রেখেই ব্যবসায় এক বড় ঝুঁকি নিয়েছিলেন তিনি। মহাকুম্ভ শুরু হওয়ার ঠিক আগেই তিনি সেই নৌকার সংখ্যা বাড়িয়ে ৬০ থেকে ১৩০ করে দেন। আর তাতেই মালামাল হয়ে যান তিনি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক শোরগোল
জানা গিয়েছে, ১৩ জানুয়ারী থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রয়াগরাজে অনুষ্ঠিত মহাকুম্ভ মেলায় মোট ৪৫ দিন ধরে পিন্টু মহারা নামে ওই নৌকো চালকের প্রত্যেকটি নৌকো চলেছিল। যোগী আদিত্যনাথ জানিয়েছেন প্রতিদিন নাকি ওই মাঝির আয় হত প্রায় ৫০ থেকে ৫২ হাজার টাকা। আর সব মিলিয়ে ৪৫ দিনের মাথায় তাঁর আয় গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ কোটি। সোশ্যাল মিডিয়ায় যোগী আদিত্যনাথ এর এই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই রীতিমত শোরগোল পড়ে যায়। কীভাবে সম্ভব এই প্রশ্নই ঘুরে ফিরে আসছে সোশ্যাল ফিড জুড়ে। যদিও এই মহাকুম্ভে মাঝিদের লাভ তেমন হয়নি বলেই দাবি করেছিলেন সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব। কিন্তু এই ঘটনা কতটা সত্যি তা নিয়ে নানা মতবিরোধ দেখা গিয়েছে।
এই মাঝি পরিবার কামিয়েছে ৩০ কোটি টাকা
জানা গিয়েছে এই মাঝি প্রয়াগরাজেরই বাসিন্দা। তাঁর মূল কাজই হল নৌকা চালানো। কুম্ভ মেলার পর এই পরিবারের খুশির ঠিকানা নেই আর। জানা যাচ্ছে যে, এই পরিবার এলাকায় মিষ্টিও বিতরণ করেছে। নৌকা চালানোর কাজ করা পিন্টু মাহারার কাছে ১০০-র বেশি নৌকা রয়েছে। এও জানা গিয়েছে যে, মাহারা পরিবারের ৫০০-র বেশি সদস্য নৌকা চালানোরই কাজ করেন। তাঁরা কুম্ভ মেলায় নৌকা করে মানুষদের পুণ্য স্নান করিয়েছেন পাশাপাশি ঘুরিয়েছেন। পিন্টুর মা শুক্লাবতী দেবী জানান, এলাকার সমস্ত নৌকা চালকরাই এমন উপার্জন প্রথমবার করলেন। আর এরজন্য তিনি নরেন্দ্র মোদী ও যোগী আদিত্যনাথকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |