সৌভিক মুখার্জী, কলকাতাঃ রাজ্য বলুন আর কেন্দ্র, সব সরকারই সাধারণ মানুষের জন্যে বিভিন্ন প্রকল্প চালিয়ে আসছে। সেরকমই পশ্চিমবঙ্গের প্রবীণ নাগরিকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক প্রকল্প হল বার্ধক্য ভাতা (Old age pension scheme)। রাজ্যের উদ্যোগে ‘জয় বাংলা’ প্রকল্পের মাধ্যমে বৃদ্ধ, বিধবা এবং বিশেষভাবে সক্ষম নাগরিকদের এই প্রকল্পের আওতায় প্রতি মাসে ভাতা প্রদান করা হয়। কিন্তু জানলে হয়তো অবাক হবেন, কেন্দ্রীয় সরকারের সীমিত বরাদ্দের কারণে লক্ষাধিক প্রবীণ এখনও এই প্রকল্প থেকে বঞ্চিত।
কোটা বৃদ্ধির দাবিতে সরব নবান্ন
বাংলায় বর্তমানে প্রায় ২০ লক্ষ ৬৭ হাজার প্রবীণ নাগরিক কেন্দ্রীয় কেন্দ্রীয় ন্যাশনাল সোশ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স প্রোগ্রাম (NSAP)-এর অধীনে বার্ধক্য ভাতা পাচ্ছেন। কিন্তু এই প্রকল্পে কেন্দ্র মাত্র ৩০০ টাকা করে সাহায্য করে। যদিও ৮০ বছরের ঊর্ধ্ব ব্যক্তিদের জন্য ৫০০ টাকা দেয়। বাকি টাকা সম্পূর্ণ রাজ্য নিজস্ব কোষাগার থেকেই বহন করছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাদের নিজস্ব প্রকল্পের মাধ্যমে আরও বিশাল সংখ্যক প্রবীণ নাগরিককে ১০০০ টাকা ভাতা প্রদান করছে।
সাম্প্রতিক সময়ে গ্রামবাংলায় একটি সমীক্ষার মাধ্যমে মোট ৭ লক্ষ ৪৬ হাজার প্রবীণ নাগরিককে বার্ধক্য ভাতা পাওয়ার যোগ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। কিন্তু সূত্র বলছে, কেন্দ্রীয় কোটা সীমাবদ্ধতার কারণে শুধুমাত্র ১.৫ লক্ষ নতুন নাম অন্তর্ভুক্ত করা যাচ্ছে। বাকি ৬ লক্ষের বেশি প্রবীণ নাগরিককে ভাতার অপেক্ষায় থাকতে হবে। এই পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সরকার কেন্দ্রের কাছে কোটা বৃদ্ধি করার দাবি জানাচ্ছে।
তাহলে কি অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ?
এই বিষয়ে সাম্প্রতিক একটি বৈঠকে রাজ্যের প্রতিনিধিরা কেন্দ্রীয় কর্মকর্তাদের সামনে কোটা বৃদ্ধির বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন। তবে কেন্দ্রের তরফ থেকে কোনরকম প্রতিশ্রুতি মেলেনি। নবান্নের মতে, এই প্রকল্পে পশ্চিমবঙ্গ স্বচ্ছতা বজায় রেখেই উপযুক্ত উপভোক্তাদের বাছাই করবে, যা অন্য রাজ্যের তুলনায় সম্পূর্ণ আলাদা। অথচ, কেন্দ্র রাজ্যের প্রকৃত চাহিদাকে উপেক্ষা করে কোটা বাড়ানোর বিষয়ে কোনো রকম সাড়া দিচ্ছে না।
রাজ্যের সামাজিক সুরক্ষায় আর্থিক চাপ বাড়ছে
বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকার NSAP-এর অধীনে পশ্চিমবঙ্গকে প্রায় ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করে। অথচ, রাজ্যকে প্রতি বছর প্রায় ৬০০ কোটি টাকার বেশি ব্যয় করতে হয়। তদুপরি প্রতিবছর উপভোক্তাদের যাচাই করার জন্য একটি সমীক্ষা চালানো হয়। কিন্তু গত এক দশকের বেশি সময় ধরে কেন্দ্র এই নতুন কোটা বৃদ্ধি করছে না।
আরও পড়ুনঃ মধ্যবিত্তের জন্য সুখবর, আগামী মাসের মধ্যেই এতটা সস্তা হতে পারে রান্নার তেলের দাম
সূত্র বলছে, বার্ধক্য ভাতা প্রকল্পের ক্ষেত্রে কেন্দ্র রাজ্যের এই টানাপোড়েন কেবলমাত্র প্রশাসনিক একটি বিষয় নয়, বরং রাজনৈতিক প্রভাব ফেলছে। একদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার প্রবীণ নাগরিকদের কল্যাণে ব্যাপক পরিমাণে অর্থ ব্যয় করছে, অন্যদিকে কেন্দ্র কোটা তৈরি করে রেখে সীমিত সহযোগিতা দিয়েই খালাস পেতে চাইছে। এখন দেখার বিষয় কেন্দ্র এই দাবিকে গুরুত্ব দেবে, নাকি আগের মতই উপেক্ষা করে দেবে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |