সিরিয়ায় গণহত্যা, ঘর থেকে টেনে বের করে ১০০০-র বেশি শিয়া মুসলিমকে খুন

Published on:

Attempts to eliminate Shia Muslims in Syria

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতাঃ সিরিয়ার মাটিতে আবারো রক্তগঙ্গা বইছে (Syria Clash)। গত তিনদিন ধরে চলা সংঘর্ষে হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। হ্যাঁ ঠিকই শুনছেন। সিরিয়ার নতুন সরকার এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সমর্থকদের মধ্যে এই সংঘর্ষ এতটাই ভয়াবহ রূপ নিয়েছে যে, মানবাধিকার সংগঠনগুলো দাবি করছে, এটি এক প্রকার গণহত্যা।

গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন Join Now

শিয়া মুসলিমদের গণহত্যা

ব্রিটিশ মানবাধিকার সংগঠন সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, শুধুমাত্র গত তিনদিনে ৭৪৫ জন সাধারণ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। জানলে অবাক হবেন, এদের মধ্যে বেশিরভাগকেই একদম কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া নিরাপত্তা বাহিনীর ১২৫ জন সদস্য এবং বাশার আল-আসাদপন্থী মিলিশিয়াদের মধ্যে ১৪৮ জন সদস্য তাদের প্রাণ বলিদান দিয়েছে।

সূত্র বলছে, সিরিয়ার লাতাকিয়া শহর এবং আশেপাশের এলাকাগুলিতে বিদ্যুৎ এবং জলের সংযোগও ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। এতে পরিস্থিতি আরও গরম হয়ে উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, “পুরুষদের বাড়ি থেকে টেনে বের করে হত্যা করা হচ্ছে। এমনকি রাস্তায় চলমান মানুষদেরও গুলি করে মারা হচ্ছে।” এখানেই শেষ নয়, শিয়া মুসলিমদের বসতি চিহ্নিত করে বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে Join Now

সরকারের দায় স্বীকারের বদলে অস্বীকার

গত ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে সিরিয়ার ক্ষমতার পালাবদল ঘটে। প্রেসিডেন্ট আসাদের পতনের পর HTS গোষ্ঠী রাজধানী দামাস্কাস দখল করে এবং নেতা আবু মুহাম্মদ আল-জুলানি নিজেকে সেখানকার নতুন রাষ্ট্রপতি বলে ঘোষণা করেন। দুই মাস একটু শান্তিপূর্ণ থাকার পর সেখানে ফের সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। এমনকি এই সংঘর্ষ এবার গণহত্যায় রূপ নিয়েছে।

HTS-এর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, “আমরা আসাদপন্থীদের আক্রমণের জবাব দিচ্ছি। আমাদের সরকার কোনরকম বেসামরিক হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী নয়।” তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা মনে করছে, স্বশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো পরিকল্পিতভাবেই এই শিয়া মুসলিমদের নির্মূল করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

আলাভি জনগোষ্ঠীর উপর নৃশংস অত্যাচার

সিরিয়ার সংখ্যালঘু আলাভি সম্প্রদায়ের মানুষরা মূলত শিয়া মুসলমানদের একটি বিশেষ অংশ। প্রেসিডেন্ট আসাদ নিজেও এই সম্প্রদায়ের মানুষ। মানবাধিকার সংগঠনগুলির মতে, HTS-এর নেতৃত্বে থাকা সুন্নি মিলিশিয়ারা পরিকল্পিতভাবেই আজাদি মুসলমানদের চিহ্নিত করে গুলি চালাচ্ছে। 

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, তাদের ঘরবাড়ি লুট করা হচ্ছে। যারা পালাতে পারছে না তাদেরকে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে। এমনকি ঘরের পুরুষদের টেনে বের করে হত্যা করা হচ্ছে। মহিলারা আতঙ্কে সন্তানদের নিয়ে পাহাড়ের দিকে পালাচ্ছে। শুধু তাই নয়, তাদের পরিচয়পত্র দেখে শিয়া মুসলিম হলেই গুলি করা হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

এই ভয়াবহ গণহত্যার খবর ছড়িয়ে পড়তেই বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। সিরিয়ায় নিযুক্ত জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “এটি মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। শিয়া মুসলিমদের বিরুদ্ধে গণহত্যা বন্ধ না হলে আমরা আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করতে বাধ্য হব।” তবে সিরিয়ার বর্তমান সরকার আন্তর্জাতিক নিন্দাকে অগ্রাহ্য করেই দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে এই গণহত্যাকে উল্লেখ করেছে। 

আরও পড়ুনঃ ফাইনালের আগেই দায়িত্ব ঝেড়ে ফেললেন টিম ইন্ডিয়ার বিশ্বস্ত তারকা!

বিশেষজ্ঞরা মনে করছে, যদি আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ না করা হয়, তাহলে সিরিয়ার শিয়া মুসলিমদের ভবিষ্যৎ খুবই সংকটাপন্ন। একের পর এক হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে না পারলে এটি ভয়াবহ গণহত্যার রূপ নিতে পারে। এখন দেখার পরিস্থিতি কোনদিকে গড়ায়।

গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্যJoin Group
চাকরির খবরের জন্যJoin Hood Jobs
রাশিফলের জন্যJoin Hood Rashifal
খেলার খবরের জন্যJoin Whatsapp
সঙ্গে থাকুন ➥
X
Join Group