প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: অনেকদিন আগেই রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার কার্ডের সংযুক্তিকরণ হয়ে গিয়েছে। যার দরুন গ্রাহকরা বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে রেশন সংগ্রহ করছে। কিন্তু এবার কেন্দ্রীয় সরকার রান্নার গ্যাসের ভর্তুকি সিস্টেম রেশন ব্যবস্থায় আনতে চলেছে। তাই এবার নরেন্দ্র মোদী সরকার রেশন কার্ডের সঙ্গে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সংযুক্তিকরণ করতে চাইছে। এ জন্য রেশন (Ration Cards) বণ্টন সংক্রান্ত নির্দেশিকায় প্রয়োজনীয় সংশোধনেরও প্রস্তাব দিচ্ছে কেন্দ্রীয় খাদ্য ও গণবণ্টন মন্ত্রক। এবার সেই ব্যবস্থায় রাজ্য সরকারের সম্মতির ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে। আর তাতেই এবার চিন্তায় ডুবলো রেশন ডিলার থেকে কৃষকরা।
রেশন কার্ডের সঙ্গে ব্যাঙ্কের তথ্য যোগ!
আসলে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় খাদ্যসচিব সঞ্জীব চোপড়ার সঙ্গে রাজ্যের সকল খাদ্যসচিবদের বৈঠক হয়েছিল। সেখানে রেশন ব্যবস্থার পথ আরও উন্নত এবং প্রশস্ত করতে একের পর এক উদ্যোগের কথা বলেছিল। আর সেই সময়ই কেন্দ্রীয় সরকার এই প্রস্তাবের কথা জানিয়েছে। রেশন বণ্টন নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত ২০১৫ সালের নির্দেশিকায় সংশোধনের প্রস্তাবের কথা বলা হয়েছে সেই বৈঠকে। এই সংশোধন নিয়ম অনুযায়ী বলা হয়েছে, এখন থেকে নতুন রেশন কার্ড বিলির সময় যখন পরিবারের প্রধানের ই-কেওয়াইসি ফর্ম পূরণ করা হবে, তখন রাজ্য সরকার রেশন কার্ডের সঙ্গে আধারের সংযোগের পাশাপাশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য সংগ্রহ করবে।
কেন্দ্রীয় সরকারের একের পর এক যেকোনো সরকারী উদ্যোগে প্রথম থেকেই নানা রকম বিরোধিতা করে এসেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। কিন্তু ঘটনাচক্রে কেন্দ্রীয় সরকারের রেশন ব্যবস্থার সঙ্গে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট তথ্য যোগ নিয়ে কোনো রকম আপত্তি জানাল না প্রশাসন। উল্টে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হল আধারের মাধ্যমেই রেশন কার্ডের মালিকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য পাওয়া যেতে পারে। গত সোমবার পশ্চিমবঙ্গের খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের বিশেষ সচিব কেন্দ্রীয় খাদ্য ও গণবণ্টন মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব রবি শঙ্করকে চিঠি পাঠান।
কেন্দ্রের প্রস্তাবে রাজ্যের সায়
সূত্রের খবর, সেই চিঠিতে রাজ্য স্পষ্ট জানিয়েছে যে রেশন কার্ডের সঙ্গে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট যোগের বদলে অ্যাকাউন্টের তথ্য ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশন থেকেই পাওয়া যেতে পারে। কারণ এনপিসিআই-এর মাধ্যমেই আধারের সঙ্গে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সংযুক্তিকরণ হয়েছিল। কিন্তু এই প্রস্তাবনায় একেবারেই রাজি হচ্ছে না অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার্স ফেডারেশন। তাঁদের অভিযোগ সরকার রেশন সিস্টেমে গণবণ্টন ব্যবস্থা তুলে দেওয়ার জন্যই এই ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছে। যার ফলে ব্যাপক সমস্যায় পড়বে কৃষক থেকে শুরু করে রেশন ডিলাররা। তাই আগামী ১ এপ্রিল দেশ জুড়ে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ বাজারে ১০০, ২০০ টাকার নতুন নোট আনছে RBI, পুরনোগুলো সব বাতিল?
বাংলার রেশন ডিলাররা মনে করছেন, খাদ্য দফতরের শীর্ষ আমলারা নিশ্চই রাজ্যের উপরমহলকে না জানিয়ে কেন্দ্রের কথায় সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। যেটা সম্পূর্ণ অনুচিত। এই প্রসঙ্গে সর্বভারতীয় ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলারস’ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু বলেন, ‘‘মনে হচ্ছে, বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্যকে অন্ধকারে রেখে রাজ্যেরই কয়েক জন শীর্ষস্থানীয় আমলা কেন্দ্রের কথায় খাদ্যসাথী প্রকল্প বন্ধের চক্রান্তে নেমেছেন। তাই কেন্দ্রের প্রস্তাবে আপত্তি না জানিয়ে, ক্ষতি করে চলেছে। এটা হলে খাদ্যসাথী প্রকল্পের মতো চাষিদের থেকে সহায়ক মূল্যে ধান কেনা নিয়েও একাধিক প্রশ্ন উঠবে।’’ আর এই দ্বন্দ্ব বিতর্কের মাঝেই তাই প্রশ্ন উঠছে তবে কি রেশন ডিলারদের সঙ্গে কেন্দ্রের পাশাপাশি রাজ্য সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের ব্যাপক দূরত্ব তৈরি হবে?
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |