প্রীতি পোদ্দার, নাগপুর: উত্তপ্ত হয়ে উঠল নাগপুর। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে হিংসার আগুনে রীতিমত জ্বলছে গোটা শহর। পুলিশ গোটা বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে উল্টে হতাহতের ঘটনা ঘটে যায়। জানা গিয়েছে ঔরঙ্গজেবের সমাধি নিয়ে ভুয়ো খবর ছড়ানোর জেরে মহারাষ্ট্রের নাগপুরে (Nagpur Communal Violence) এক সম্প্রদায়ের ভাবাবেগে আঘাত লাগে। এরপরই গতকাল রাতে নাগপুরের মহল এলাকায় পাথর ছোড়া ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
ঘটনাটি কী?
সূত্রের খবর, গতকাল অর্থাৎ সোমবার রাতে ঔরঙ্গজেবের কবর (Aurangzeb’s Grave) সরানোর দাবিতে মহারাষ্ট্র জুড়ে বিক্ষোভ শুরু করেছে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি। সেই সময় আবার মুসলিম সম্প্রদায়ের পবিত্র গ্রন্থ কোরান পোড়ানো হয়েছে বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। আর তাতেই মহারাষ্ট্রের নাগপুরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে চরমে। এই ঘটনায় চারজন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। এদিকে হিংসা থামাতে গিয়ে ২৫ জন পুলিশকর্মী জখম হন। সঙ্গে জখম হন ফায়ার ব্রিগেড কর্মীরাও। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় গাড়ি। পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া হয়। পাথরের ঘায়ে আহত হন পুলিশকর্মীরা। এরপরই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শহর জুড়ে জারি করা হয় কারফিউ।
দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের জেরে রাতের বেলায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে নাগপুর। সেখানকার পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে মধ্য নাগপুরের চিটনিস পার্ক ও মহল এলাকায় উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ব্যবহার করেছে। সেখানে দাঙ্গাকারীরা কয়েকটি চার চাকার গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়িঘর লক্ষ্য করেও পাথর ছোড়া হয় বলে জানিয়েছেন আধিকারিকরা। এছাড়াও কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিকেলে মহল এলাকায় ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের মূর্তির কাছে বজরং দলের সদস্যরা বিক্ষোভ দেখালে ঝামেলা শুরু হয়। মুসলিমদের বিরুদ্ধে তাঁদের ক্রোধের আগুন ক্রমেই জ্বলতে থাকে।
কী বলছেন নাগপুরের পুলিশ কমিশনার?
এদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, সন্ধ্যায় গণেশপেঠ থানায় পবিত্র বই পোড়ানোর অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে মহল, কোতোয়ালি, গণেশপেঠ, চিটনিস পার্ক-সহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেন মুসলিম সম্প্রদায়ের বহু মানুষ। তবে বজরং দলের কর্মীরা অবশ্য কোরান পোড়ানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং দাবি করেছেন যে তারা তাদের প্রতিবাদের অংশ হিসাবে কেবল ঔরঙ্গজেবের একটি কুশপুতুল পুড়িয়েছেন। নাগপুরের পুলিশ কমিশনার ডাঃ রবীন্দ্র সিঙ্ঘল বলেছেন, ‘আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। একটি ধর্মগ্রন্থ পোড়ানো হয়েছিল বলে গুজব রটে যার পরে লোকেরা জড়ো হয়েছিল এবং পরে হিংসা ছড়ায়। আমরা খবর পেয়েই হিংসা থামাতে ব্যবস্থা নিয়েছি। আমরা এফআইআর নথিভুক্ত করেছি। ঘটনাটি ঘটেছে রাত সাড়ে ৮টার দিকে।’
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের অনুরোধ মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর
এই প্রসঙ্গে রাজ্যবাসীর কাছে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীস। ফড়নবীস বলেন, ‘নাগপুরের মহল এলাকায় যেভাবে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। কেউ কেউ পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথরও ছোড়ে। এটা ভুল। আমি পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় যা যা কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার পুলিশ কমিশনারকে তা নিতে বলেছি। এবং আমি সকলের কাছে আবেদন করছি নাগপুরের শান্তি বিঘ্নিত হতে দেবেন না।” একই বার্তা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গডকড়ি।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |