সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: “আমরা মরতে চাই না, এই যুদ্ধ বন্ধ হোক।” এই শ্লোগানে এখন ভাসছে গাজার রাস্তাঘাটে। বহু বছর ধরে হামাসের কঠোর শাসন এবং সন্ত্রাসের জালে বন্দি থাকা গাজার মানুষ এবার প্রতিবাদের জন্য পথে নেমেছে। প্রথমবারের মতো উত্তর গাজায় শত শত সাধারণ মানুষ হামাসের বিরুদ্ধে এবার বিক্ষোভে সামিল হয়েছে। তারা সাদা পতাকা হাতে শান্তিপূর্ণ মিছিল করছে এবং দাবি জানাচ্ছে যে, হামাসের শাসন অবিলম্বে শেষ করতে হবে। পাশাপাশি ইসরায়েলের হাতে বন্দি থাকা মানুষদের মুক্তি দিতে হবে।
হামাসের বিরুদ্ধে নজরবিহীন বিক্ষোভ
২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে ইসরায়েলে সামরিক অভিযানের শুরুর পর এই প্রথম গাজার জনগণ প্রকাশ্যে বিক্ষোভ নেমেছে (Protest Against Hamas)। দূরদেশের সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বিক্ষোভটি মূলত গাজার উত্তরে অবস্থিত ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালের সামনে সংঘটিত হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শিরা জানাচ্ছে, এই আন্দোলন শুধুমাত্র হামাসের বিরুদ্ধে নয়। বরং, বিদেশী মিডিয়ার বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা দাবি করছে, কাতারের অর্থায়নে পরিচালিত কিছু মিডিয়া সংস্থা গাজার বাস্তব পরিস্থিতি তুলে ধরতে এখন ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে বিক্ষোভকারীরা জনসমক্ষে বলেন, “আমরা চাই মিডিয়া সত্যটা দেখাক। আমরা স্বাধীনতা চাই, যুদ্ধ চাইনা।”
গাজার রাস্তায় প্রতিধ্বনির প্রতিবাদ
এই বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা বারবার “হামাস, বেরিয়ে যাও। আমরা বাঁচতে চাই।” এই শ্লোগানে শিহরিত হচ্ছে। তাদের হাতে থাকা ব্যানারগুলিতে লেখা ছিল, “আমরা মরতে চাই না। যুদ্ধ বন্ধ করো, আমাদের শান্তিতে বাঁচতে দাও।”
এক ভিডিওতে দেখা যায়, শত শত মানুষ বেত লাহিয়ার রাস্তায় মিছিল করছে। সেখানে ক্যামেরাম্যানকে বলতে শোনা গিয়েছে, “এই বিশাল জনতা এখন হামাসের বিরুদ্ধে সরব হয়ে উঠেছে। গাজার পরিস্থিতি এখন ভয়াবহ। মানুষ বেঁচে থাকার জন্য বন্দিদের মুক্তির দাবি তুলছে।”
আরও পড়ুনঃ চিনের আগে ভারত আসতে চেয়েছিলেন ইউনূস, পাত্তা দেয়নি দিল্লি! অভিযোগ বাংলাদেশের
গাজার ভবিষ্যৎ কোনদিকে?
বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম দাবি করছে, এই বিক্ষোভ হামাসের জন্য এক বড় সংকেত। এতদিন ধরে কঠোর নিয়ন্ত্রণে থাকা গাজার জনগণ যদি সরাসরি এবার প্রতিবাদে জন্য পথে নামে, তাহলে এটি হামাসের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে। বিশেষ করে যুদ্ধবিধ্বস্ত ভূখণ্ডে যখন জল, খাদ্য, বিদ্যুতের তীব্র সংকট চলছে, তখন জনগণের মধ্যে এই বিদ্রোহ ভবিষ্যতে আরো বড় দুর্ভিক্ষ আনতে পারে এবং বড় পরিসরে ছড়িয়ে যেতে পারে। গাজার এই পরিস্থিতি ভবিষ্যতে কতদূর গড়ায়, সেটা সময়েই বলা যাবে।