প্রীতি পোদ্দার, ঢাকা: অবশেষে স্বস্তি মিলল বাংলাদেশবাসীর। গত চার মাস ধরে বকেয়া পাওনার কারণে বাংলাদেশে (Bangladesh) আদানি গোষ্ঠী নভেম্বর থেকে ভারতের তরফ থেকে বিদ্যুৎ কমিয়ে এনেছিল অর্ধেকে। যার দরুন মহা সমস্যায় পড়তে হয়েছিল বাংলাদেশ সরকারকে। যদিও গত বছর শীতকালে চাহিদা কম থাকায় বিদ্যুৎ অর্ধেক সরবরাহে কোনো বড় সমস্যা হয়নি। কিন্তু সামনেই আসছে গরমকাল, এইসময় বাংলাদেশে বিদ্যুতের চাহিদা তুঙ্গে থাকে। কিন্তু গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ না পেলে ব্ল্যাকআউটের আশঙ্কা ছিল। তবে এবার সব সমস্যা ভুলে বিদ্যুৎ পূর্ণ সরবরাহ ফিরে আসায় বড় বিপর্যয় এড়ানোর পথে এগিয়েছে বাংলাদেশ।
ঘটনাটি কী?
ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদন সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকার বদলের কারণে গত বছরের নভেম্বরে বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রার ব্যাপক সংকট দেখা গিয়েছিল। যার ফলে ইউনূস সরকার আদানি গোষ্ঠীর নিয়মিত বিল পরিশোধ করতে পাচ্ছিল না, যার ফলে আদানি পাওয়ার বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকে নামিয়ে এনেছিল। কিন্তু বর্তমানে সেই বিল কিছুটা মিতে যাওয়ায় এবার চার মাস পর সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হল বাংলাদেশ। এই প্রসঙ্গে BPDB-র চেয়ারম্যান রেজাউল করিম ব্লুমবার্গকে জানিয়েছেন যে, “আমরা আদানির কাছে নিয়মিত পেমেন্ট করছি এবং আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী বিদ্যুৎ পাচ্ছি।”
আগামী ৬ মাসে মিটবে সম্পূর্ণ বকেয়া
এছাড়াও বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরুদ্ধার প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড বা BPDB-র তথ্য অনুযায়ী, আদানি পাওয়ার গত দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়িয়েছে। বকেয়া পাওনা, যা একসময় ৮৫০ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল, এখন ৮০০ মিলিয়ন ডলারে নেমেছে। যদিও তাঁদের বিশ্বাস আগামী ছয় মাসের মধ্যে এই বকেয়া পুরোপুরি পরিশোধ করা হবে। গত বছরের নভেম্বর থেকে ভারতের ঝাড়খণ্ডে অবস্থিত আদানির ১৬০০ মেগাওয়াট কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সরবরাহ অর্ধেকে নামিয়ে আনার ফলে ব্যাপক সমস্যায় পড়েছিল বাংলাদেশ বাসী। তবে এই পুনরুদ্ধার তাঁদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে।
কেন বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেক করা হয়েছিল?
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে আদানি পাওয়ারের সঙ্গে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, সেই সময় শেখ হাসিনা ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। এই ২৫ বছরের চুক্তির আওতায় ঝাড়খণ্ডের গোদ্দায় অবস্থিত ২ বিলিয়ন ডলারের এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। কিন্তু সমস্যা শুরু হয় ২০২৩ সালে। সেই বছর জুলাই থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ এর পেমেন্টে পিছিয়ে পড়ে। আদানির দাবি, তাদের পাওনা ৯০০ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল, যদিও BPDB-র হিসেবে এটি ৬৫০ মিলিয়ন ডলার। পেমেন্ট দেওয়ার জন্য অক্টোবরে আদানি BPDB-কে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিল, পেমেন্ট না পেলে ৩১ অক্টোবর থেকে সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হবে। এরপর নভেম্বরে সেই সরবরাহ অর্ধেকে নেমে আসে।
আরও পড়ুনঃ সোনার দামে ছ্যাকা, সুখবর শোনাচ্ছে রুপো! দেখুন আজকের রেট
যদিও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে এই বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরুদ্ধার শুধুমাত্র বাংলাদেশের জনজীবনের জন্য স্বস্তি নয়, এটি অন্যদিক দিয়ে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের জন্যও একটি ইতিবাচক পদক্ষেপও বটে। কারণ গত বছর থেকে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়ে গিয়েছে। যার অন্যতম মূল কারণ হল শেখ হাসিনার সরকারের পতন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের আগমন। যদিও এখন সেই আঘাতে খানিক মলম পড়েছে বলেই মনে করছেন অনেকে।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |