প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বিশ্বের দরবারে বারংবার প্রশংসিত হয়ে আসছে পশ্চিমবঙ্গে নারী ক্ষমতায়ন সংক্রান্ত প্রকল্পগুলি। যার মধ্যে অন্যতম হল কন্যাশ্রী (Kanyashree) এবং লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। এমনকি এই প্রকল্পগুলি নিয়ে সম্প্রতি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্চে বক্তব্য রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়েছেন কীভাবে ‘কন্যাশ্রী’ এবং ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ থেকে বাংলার সমস্ত মহিলা উপকৃত হয়ে আসছে বছরের পর বছর। শুধু তাই নয় এদিন তিনি মঞ্চে জানিয়েছেন কীভাবে কন্যাশ্রী প্রকল্পকে রাষ্ট্রসংঘ পুরস্কৃত করেছে। তবে এই আবহে এবার কন্যাশ্রী নিয়ে উঠে এল বড় অভিযোগ। আটকানো গেল না ছাত্রীদের গরহাজিরা।
ঘটনাটি কী?
কয়েকদিন ধরেই মালদহের বিভিন্ন স্কুলে ছাত্রীদের অনুপস্থিতি নজর কাড়ছে জেলা প্রশাসকদের। এদিকে প্রত্যেকটি স্কুলে নিয়মিত কন্যাশ্রী-১ প্রকল্পের সুবিধা প্রধান করা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু যখন স্কুলে কন্যাশ্রী-২ প্রকল্পের উপভোক্তা তালিকা তৈরির প্রক্রিয়া চলছে সেই সময় দেখা যাচ্ছে অনেক ছাত্রী একটানা অনেকদিন ছুটি করছে। একটি সমীক্ষা সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহের ১৫টি ব্লক ও দুটি পুরসভা এলাকা মিলিয়ে মোট ৮ হাজার ৯৬৫ জন ছাত্রী অনুপস্থিত লক্ষ্য করা গিয়েছে। এমন হঠাৎ অনুপস্থিতির কারণে জানার জন্য ইতিমধ্যে প্রশাসন স্কুলগুলিকে অনুপস্থিত ছাত্রীদের সম্পর্কে খোঁজ খবর খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন। এখনও আবেদন করা বাকি ৮ হাজার ৯৬৫ জন।
তবে এক্ষেত্রে প্রশাসন মনে করছে, স্কুলছুট ছাত্রীদের কারও হয়তো বিয়ে হয়ে গিয়েছে, কেউ বা হয়তো আর্থিক পরিস্থিতির চাপে অনুপস্থিত থাকতে পারে। কিন্তু নির্দিষ্ট কারণ কী তা জানার জন্য ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে সমীক্ষা। পুরোনো রেকর্ডের হিসেব অনুযায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে মালদহে কন্যাশ্রী-১ প্রকল্পের অধীনে ১ লক্ষ ২৯ হাজার ৬০৭ জন ছাত্রীকে বার্ষিক ১ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে। সেই টাকাই ২০২৪-২৫ আর্থিক বছরে কন্যাশ্রী-২ প্রকল্পের অধীনে এককালীন ২৫ হাজার টাকা পাওয়ার কথা। কিন্তু তা দিতে যাওয়ার ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে একাধিক পড়ুয়া অনুপস্থিত। এখনও কন্যাশ্রী ২ প্রকল্পের জন্য ৮ হাজার ৯৬৫ জনের আবেদন করা বাকি আছে। তাই কারণ জানতে মালদহের অতিরিক্ত জেলাশাসক অনিন্দ্য সরকার ইতিমধ্যেই সমীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী, কন্যাশ্রী-১ প্রকল্পের সুবিধা পেতে ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সী হতে হবে এবং ন্যূনতম অষ্টম শ্রেণিতে পাঠরত মেয়েদের বার্ষিক এক হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। কন্যাশ্রী-২ প্রকল্পে ১৮ থেকে ১৯ বছর বয়সী অবিবাহিতা এবং যে কোনও সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠরতা মেয়েদের এককালীন ২৫ হাজার প্রদান করা হয়ে থাকে। এদিকে রিপোর্ট বলছে স্কুলছুটদের তালিকায় সবথেকে উপরে রয়েছে মালদহের কালিয়াচক-৩ নম্বর ব্লক। দেখা গিয়েছে এই ব্লকে ১২৪১ জন ছাত্রী স্কুল ছেড়ে দিয়েছে। এবং দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে কালিয়াচক-১ নম্বর ব্লক। এখানে স্কুলছুট ছাত্রীর সংখ্যা ১১৫৮।
আরও পড়ুনঃ ভারত বয়কট অতীত, বিদ্যুতের জন্য আদানির কাছেই ছুটল বাংলাদেশ
সমীক্ষায় উঠে এসেছে অসংখ্য ছাত্রীর সংখ্যা
তবে শুধু এই দুই ব্লক নয়, তালিকায় মালদহের একাধিক ব্লকের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। জানা গিয়েছে গাজোলে ৮৪৪, রতুয়া-১ ব্লকে ৮২৭, হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লকে ৭৭৪, কাকিয়াচক-২ ব্লকে ৭৫২, ইংলিশবাজারে ৭১১, রতুয়া-২ ব্লকে ৫১৩, মানিকচকে ২৯৯, চাঁচল-১ ২৯৪, পুরাতন মালদহে ১৬৬, হবিবপুরে ৩৬৭, চাঁচল-২ ব্লকে ৩৪৭, ইংলিশবাজার শহরে ৩৪০ এবং পুরাতন মালদহ শহরে ১৬৪ ও বামোনগোলায় ১৩৮ জন ছাত্রী স্কুলছুট। এবার দেখার পালা জেলা প্রশাসক কতটা সক্ষম হবে এই অভিযোগের কারণ খুঁজতে।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |