সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: পড়শি দেশ পাকিস্তানের রাজনৈতিক মহল দিনের পর দিন গরম (Pakistan Crisis) হয়ে উঠছে। রাতারাতি বিদ্রোহ শুরু হয়ে গিয়েছে পাকিস্তানে। জানা যাচ্ছে, বালুচিস্তানে স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করছে এবং দিনের পর দিন পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণ কমছে এই অঞ্চলের উপর। হাজার হাজার বালুচ জনগণ রাস্তায় নামছে। তাদের একটাই দাবি, পাকিস্তান থেকে মুক্তি। এদিকে পাকিস্তানি সেনা এই বিদ্রোহ দমন করতে চরম নৃশংসতা চালাচ্ছে। পড়শি দেশের সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, সেনারা শিশুদেরকেও পর্যন্ত হত্যা করছে। বালুচ নেতা এবং নারীদেরকে দিনদুপুরে অপহরণ করা হচ্ছে।
বিদ্রোহীদের দখলে তুরবাত শহর
বালুচিস্তানের তুরবাত শহর বর্তমানে পুরোপুরি বিদ্রোহীদের দখলে চলে গিয়েছে। শুধু তুরবাত নয়, বরং আরো কিছু শহরে বিদ্রোহীরা পাকাপোক্ত জায়গা করে নিয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কগুলিও বন্ধ করে দিয়েছে তারা। ফলে পাকিস্তানি প্রশাসনের উপর আরো চাপ বাড়ছে। বিদ্রোহীরা বিশেষভাবে পাঞ্জাবী জনগোষ্ঠীর উপর টার্গেট করছে। ফলে প্রচুর পাঞ্জাবি বালুচিস্তান ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে।
বিস্ফোরণে কেঁপে উঠলো কোয়েটা
কেবল তুরবাত নয়। বালুচিস্তানের রাজধানী কোয়েটাতেও বড়সড় বিস্ফোরণ ঘটেছে। গত বৃহস্পতিবার বারেচ মার্কেট এলাকায় একটি পুলিশের গাড়িকে লক্ষ্য করে বোমা বিস্ফোরণ করা হয়েছিল। আর সেখানে দুজন জায়গায় প্রাণ হারায়। এদিকে গোয়াদর জেলায় বালুচ বিদ্রোহীরা একটি যাত্রীবাহী বাস থামিয়ে ছয়জন পাঞ্জাবি যাত্রীকে দিনদুপুরে গুলি করে হত্যা করে। এছাড়া তিনজনকে অপহরণ করা হয়েছে বলেও সংবাদসূত্র দাবি করছে।
বালুচিস্তানের জনগণ ভারতের সাহায্য চায়
বর্তমানে বালুচিস্তানের বিদ্রোহীরা ভারতের থেকে সাহায্য চাইছে। কানাডা ভিত্তিক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পাকিস্তানি সাংবাদিক মনে করছে, “বালুচিস্তানের জনগণ মনে করে, ভারত তাদের এবার পাশে দাঁড়াতে পারে।” তিনি আরো বলেছেন, “পাকিস্তান ভারতকে দোষারোপ করে বলেছে যে, ভারত বালুচিস্তানে অস্থিরতা তৈরি করছে। কিন্তু বাস্তবতা হল, বালুচরা কোনরকম সাহায্যই পাচ্ছে না। তাদের এখন ভারতের সহায়তা প্রয়োজন।”
পাকিস্তানের সরকারের উপর ক্রমবর্ধমান চাপ
বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, বালুচ বিদ্রোহীদের সংগঠন BRAS পাকিস্তান সেনাবাহিনীর এবং খনিজ সম্পদ বহনকারী যানবাহনের উপর ৪৮ বার আক্রমণ চালিয়েছে। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। এছাড়াও গোয়াদরের পিসনি শহরে একাধিক বিস্ফোরণের ঘটনা সামনে উঠে এসেছে, যেখানে চীনের CPEC প্রকল্প চলছে।
আরও পড়ুনঃ লাদাখ, কাশ্মীরে ভারতীয় সেনার ‘অদৃশ্য প্রাচীর’! ভারতের পদক্ষেপে চাপে শত্রুপক্ষ
বালুচিস্তানের পরিস্থিতি দিনের পর দিন আরও অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠছে। বিদ্রোহীরা পাকিস্তান থেকে পুরোপুরি আলাদা হয়ে যাওয়ার জন্যই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। বালুচিস্তানের জনগণ এখন ভারতের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। তারা আশা করছে, ভারত যেন তাদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। এদিকে পাকিস্তানের উপর আন্তর্জাতিক চাপ দিনের পর দিন বাড়ছে। পাশাপাশি বিদ্রোহের আগুনে ধীরে ধীরে বালুচিস্তান ছারখার হয়ে যাচ্ছে, যা পাকিস্তানের জন্য আরো বড় সংকট তৈরি করছে। এখন দেখার, ভবিষ্যতে বালুচিস্তানের ভাগ্য কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়।