প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: এইমুহুর্তে রাজ্যে ২৬ হাজার চাকরিপ্রার্থীর চাকরি বাতিল ঘটনায় রীতিমত তোলপাড় হয়ে উঠেছে রাজ্য রাজনীতি। রাজ্যের বেকারত্বের হাল এক লহমায় আরও বেড়ে গিয়েছে। যোগ্য থাকা সত্ত্বেও এভাবে চাকরি চলে যাওয়াটা একদমই মানতে পারেনি শিক্ষকেরা। তাই সেই প্রতিবাদে দিকে দিকে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। বাদ যায়নি রাজনৈতিক দলগুলিও। এই আবহে গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার কোচবিহারে ভয়াবহ সংঘর্ষ তৃণমূল বনাম বিজেপির। পার্টি অফিসের সামনে থাকা একাধিক গাড়িতে চলে ভাঙচুর।
ঘটনাটি কী?
গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার, বিকেলে কোচবিহার (Coochbehar) শহরে পৃথক পৃথক কর্মসূচি ছিল টিএমসিপি ও বিজেপির। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লন্ডনের কেলগ কলেজে বিক্ষোভ দেখানোর অভিযোগ উঠেছিল এসএফআইয়ের বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে এদিন কোচবিহারে বিক্ষোভ মিছিল বের করেছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। অন্যদিকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রায় ২৬ হাজার চাকরিপ্রার্থীর চাকরি বাতিল ঘটনায় পথ অবরোধের কর্মসূচি নিয়েছিল গেরুয়া শিবির। আর সেই কর্মসূচিতে যোগদান করার জন্য যখন কোচবিহারের ব্যাংচাতরা রোডে বিজেপি কার্যালয় থেকে যখন সদস্যরা বেরোচ্ছিলেন তখন মিছিল শেষে শাসকদলের কর্মীরা বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময় শুরু হয় ঝামেলা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে আসে পুলিশ
দুই পক্ষের মিছিল নিয়ে জোর তর্ক বিতর্ক বাঁধে। বিজেপির অভিযোগ তৃণমূল সরকারের দুর্নীতির জন্যই এত শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি চলে গিয়েছে। আর তখনই গন্ডগোল চরম আকার নেয়। বাদানুবাদ-হুমকি ও গোলমালে জড়িয়ে পড়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশের সামনেই গোলমাল শুরু হলেও পুলিশ নাকি দীর্ঘক্ষণ নিষ্ক্রিয় ছিল বলে অভিযোগ বিজেপির। জানা গিয়েছে, তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা বিজেপির কার্যালয়ে ইট পাথর ছুড়তে শুরু করে। পাশাপাশি গাড়ি ভাঙচুর এবং বিজেপি কর্মীদের মারধর করা হয়। পরে পুলিশ নাকি গোটা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। লাঠচার্জ করতে বাধ্য হয় পুলিশ। ঘটনায় আহত হয় দুই পক্ষের বহু কর্মী সমর্থকরা।
আরও পড়ুনঃ “যে হাতে অঙ্ক কষেছি, সে হাতে বোমা বানাতেও পারি” বিস্ফোরক চাকরিহারা শিক্ষক
এই ঘটনা প্রসঙ্গে বিজেপি বিধায়ক মালতী রাভা রায় সংবাদ মাধ্যমে তৃণমূলের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগও তোলে। তিনি বলেন, চাকরিহারারা যাতে ন্যায্য অধিকার পান যুব মোর্চার তরফ থেকে তাই এদিন শহরে একটা মিছিল বের করার উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু মিছিলের উপর আক্রমণ করেছে তৃণমূল। আন্দোলন করতে দেবে না তৃণমূল। এদিকে পুলিশও নীরব। নইলে পুলিশের উপস্থিতিতে কীভাবে এই কাজ হতে পারে। আমাদের যত মারবে তত আমরা রাস্তায় নামব।” অন্যদিকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দাবি , গোটা ঘটনার জন্য বিজেপি দায়ী। তারা নানাভাবে উসকানি দিয়ে এলাকায় অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করছিল।