প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত বৃহস্পতিবার, সুপ্রিম কোর্টের কলমের খোঁচায় প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হয়ে গিয়েছে। মুহূর্তের মধ্যে অন্ধকার ভবিষ্যৎ এ পড়ে গিয়েছে একাধিক চাকরিপ্রার্থী। কী করবেন কোথায় যাবেন কিচ্ছু বুঝে উঠতে পারছেন না তারা। এই আবহে আজ, সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম থেকে সেই সমস্যার সমাধান করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি নিয়োগ দুর্নীতি যে হয়েছে, চাকরি যে বিক্রি হয়েছে সেটা তাঁর অজানা বলে ভরা সভায় জানিয়ে দিলেন তিনি।
চাকরিহারাদের বৈঠক
সূত্রের খবর, আজ নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে চাকরিহারাদের সভায় যাওয়ার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee)। কিন্তু সকাল থেকেই স্টেডিয়ামের সামনে চাকরিহারাদের পাস বিতর্কে রীতিমত ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে যায়। অনেক ধস্তাধস্তি মারপিটের পর পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। শেষে দুপুর ১২ তার আগেই নেতাজি ইন্ডোরে পৌঁছে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন মমতার সঙ্গে ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, সাহিত্যিক আবুল বাশার, কবি সুবোধ সরকার এবং আরও কয়েক জন সরকারি কর্তা, আইনজ্ঞরা। মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উঠতেই নিজেদের অবস্থার কথা জানাচ্ছেন চাকরিহারাদের প্রতিনিধিরা। বেশ কয়েকটি দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। সবশেষে সেই সমস্যার সমাধান করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একটা পথ দেখালেন তিনি সকলকে।
শিক্ষাব্যবস্থা ভাঙার চক্রান্ত!
এদিনের সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমার শরীরে রক্ত – মাংস আছে। কিন্তু হৃদয় পাথর হয়ে গিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে আমার হৃদয় পাথর হয়ে গিয়েছে। লাল, নীল, গেরুয়া কোনও রঙ দেখব না। আমাকে জেলে ভরলে ভরুক। যোগ্য ব্যক্তির চাকরি যাতে না যায়, আমরা সেটা সবসময় চাই।’ এছাড়াও তিনি যোগ্য শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘আমি বেঁচে থাকতে যোগ্যদের চাকরি কেড়ে নিতে দেব না। এটা আমার চ্যালেঞ্জ। শিক্ষাব্যবস্থাকে ভেঙে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে।’ এর পরই সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকার রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানাবেন বলে ঘোষণা করেন মমতা।
ফের আইনি লড়াই লড়বে রাজ্য!
গোটা সভার মাঝে এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি, কপিল সিব্বল, রাকেশ দ্বিবেদী, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রশান্ত ভূষণ ইত্যাদি বিশিষ্ট আইনজীবীরা রাজ্য সরকারের হয়ে যোগ্যদের হয়ে আইনি লড়াই চালাবেন। আদালতের কাছে আমরা ব্যাখ্যা চাইব কী হিসেবে এই রায়। নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার আগে আমাদের জানতে হবে, যাঁরা স্কুলে পড়াতেন তাঁদের জন্য আদালতের ব্যাখ্যা কী? স্কুল কে চালাবে? বাকি কাজ কে চালাবে? কাউকে না খাইয়ে মারার অধিকার আমাদের কারও নেই। চাকরি দিতে পারবেন না, আমার অনুরোধ তাঁরা যেন চাকরি কেড়ে না নেন। যাঁরা যোগ্য, তাঁদের চাকরি নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের।
আরও পড়ুনঃ ভালো কাজ করলে বাড়বে বেতন, নাহলে! ৮ম পে কমিশনে সরকারি কর্মীদের জন্য নয়া নিয়ম?
চাকরিতে যাওয়ার অনুরোধ মমতার
এর পরই উপস্থিত চাকরিহারা শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে কাজ চালিয়ে যেতে বলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘আপনারা কি এখনও বরখাস্তের নোটিস পেয়েছেন? চাকরি করুন না। মানবতার স্বার্থে স্বেচ্ছায় সকলেই কাজ করতে পারেন।’ এরপরই আশ্বাস দিয়ে বলেন যে আগামী দু মাসের মধ্যেই বিকল্প ব্যবস্থা করবে রাজ্য সরকার। যোগ্যদের কারও চাকরি বাতিল হবে না। ২ মাস কষ্ট করলে ২০ বছর শান্তিতে থাকতে পারবেন।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |