সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: এবার পাহাড়ের শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে রাজ্যজুড়ে টালমাটাল অবস্থা। কলকাতা হাইকোর্ট সাফ জানিয়ে দিল ৩১৩ জন শিক্ষক, যাদের নিয়োগ (GTA Teacher Recruitment Scam) নিয়ে নানা রকম প্রশ্ন উঠছে তাদের বেতন বন্ধ করতে হবে। আর এটাই রাজ্য সরকারের কাছে শেষ সুযোগ। আজ সোমবার, বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে মামলার শুনানিতে রাজ্যকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, তিন দিনের মধ্যে যদি সিদ্ধান্ত না নেওয়া হয়, তাহলে আদালত নিজে থেকেই সিদ্ধান্তের পথে হাঁটবে।
কী নিয়ে এই ঝামেলা?
আসলে এই শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির ইতিহাস বহু পুরনো কাহিনী। সেসময় জিটিএ (Gorkhaland Territorial Administration) এর অধীনে হওয়া নিয়োগে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল। আইনজীবী শামীম আহমেদ এদিন আদালতকে জানান, এই ৩১৩ জনের নিয়োগ হয়েছিল শেষ দফার ভিত্তিতে। তদন্ত দেখা গিয়েছে প্রায় ৮৫০ জনের নিয়োগ বেআইনিভাবে হয়েছে। আর এর মধ্যে এই ৩১৩ জন রয়েছে, যাদের নিয়োগ নিয়ে সব থেকে বড় প্রশ্ন উঠছে।
তদন্ত এবং এফআইআর
ঘটনার সূত্রপাত রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দপ্তর সচিবের দায়ের করা একটি এফআইআরকে কেন্দ্র করে। বিধাননগর থানায় দায়ের হওয়া এই এফআইআরে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জিটিএ এর বিনয় তামাং এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যের নাম স্পষ্ট ছিল।
সেই এফআইআরের ভিত্তিতে সিবিআইকে প্রাথমিক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর নেতৃত্বে এই রায় দেওয়া হয়েছিল। যদিও সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য সরকার আরো উচ্চতর বেঞ্চের দিকে পা বাড়ায়। কিন্তু বেঞ্চ সেই নির্দেশ বহাল রাখে।
সিবিআই তদন্ত এবং সুপ্রিম কোর্টের শুনানি
তারিখটা ২০২৪ সালের ১৯শে এপ্রিল। কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, সিবিআই অনুসন্ধান চলবে। তবে রাজ্য পুলিশ সমানভাবে তদন্ত চালিয়ে যেতে পারবে।
আর এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিমকোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য। সেখানে বিচারপতি গগৈয়ের বেঞ্চ রাজ্যের যুক্তি কিছুটা মেনে নেয়। তিনি পর্যবেক্ষণ করেন, হাইকোর্ট একটু তাড়াহুড়ো করেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়ে ফেলেছে।
সিদ্ধান্তের গুরুত্ব
তবে এই ৩১৩ জন শিক্ষকের বেতন বন্ধ হয়ে গেলে পাহাড়ের স্কুলগুলির কার্যকলাপ চরমভাবে ব্যাহত হবে বলেই মনে করছে উপর মহলের লোকজন। অনেক স্কুলেই শিক্ষক সংকট দেখা দিতে পারে। তবে হাইকোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে শিক্ষা ব্যবস্থা আরো দুর্নীতির মুখোমুখি পড়বে।
আরও পড়ুনঃ “সুপ্রিম কোর্টে যোগ্যদের হয়ে মুখ্যমন্ত্রীই সওয়াল করুন” মমতাকে পরামর্শ শুভেন্দুর
ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
যেমনটা জানা যাচ্ছে, বৃহস্পতিবার ফের এই মামলার শুনানি হবে। তার আগে রাজ্যকে তিন দিনের সময় দেওয়া হয়েছে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য। কোর্টে স্পষ্ট বলা হয়েছে, বেতন বন্ধের জন্য এটি রাজ্য সরকারের কাছে শেষ সুযোগ। যদি কোন পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে আদালতই নির্দেশ দেবে। এখন রাজ্য এই বিষয়ে কি সিদ্ধান্ত নেয় সেটাই দেখার।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |