প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত মঙ্গলবার থেকে একধাক্কায় অনেকটাই বেড়েছে রান্নার গ্যাসের দাম। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে পেট্রোল ডিজেলের দাম। এইরূপ হঠাৎ করে দাম বৃদ্ধিতে কার্যত ছ্যাঁকা লাগছে মধ্যবিত্তের পকেটে। কিন্তু দাম বৃদ্ধির মাঝে গ্যাসের সিলিন্ডার নিয়ে বিপাকে পড়েছে বালুরঘাটের বাসিন্দারা। মাঝে মধ্যেই গ্যাসের সিলিন্ডার থেকে বের হচ্ছে জল। একেটেই গ্যাসের সিলিন্ডারের চড়া দাম তার উপর আবার প্রত্যেক সিলিন্ডারে কম গ্যাস, তাতেই বেশ ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা। আর এই অভিযোগ পেতেই বুধবার বিকেলে শহরের একটি নির্দিষ্ট গ্যাসের অফিসে হানা দিল জেলা ক্রেতা সুরক্ষা দফতর।
ঘটনাটি কী?
সম্প্রতি বালুরঘাটে (Balurghat) দেখা যাচ্ছে রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারে খুব কম গ্যাসের জোগান দেওয়া হয়েছে। আর বাদ বাকি জলে পরিপূর্ণ করে বিক্রি করছে সংস্থা। এমন বহু অভিযোগ মুঠো মুঠো করে জমা পড়ছে সংস্থার কাছে। এমনকি এও শোনা যাচ্ছে যে উপভোক্তারা এই সিলিন্ডারের ব্যাপারে অভিযোগ জানালেও সেই গ্যাস সিলিন্ডার পরিবর্তন করে দেওয়া হয় না। ফলে এদিন অভিযান চালাতেই আপাতত দুইজন উপভোক্তাকে জল ভর্তি সেই গ্যাসের সিলিন্ডার পরিবর্তন করে নতুন সিলিন্ডার দিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু কেন সিলিন্ডারের মধ্যে জল? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তবে এই প্রসঙ্গে ওই গ্যাস অফিসের দাবি, বাইরে থেকেই এমন সিলিন্ডার আসছে। তাই এবার আসল সত্য উদঘাটনে করতে এবার পুরো ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে ক্রেতা সুরক্ষা দফতর।
জেলাশাসকের নির্দেশে যৌথ দল গঠন
জেলা ক্রেতা সুরক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ডিস্ট্রিবিউটের বিরুদ্ধে গত বছরের অক্টোবর মাস থেকে নিয়মিত অভিযোগ জমা পরছিল। অভিযোগ উঠছিল যে তা শেষ হয়ে যাচ্ছিল। শেষে পরীক্ষা করে দেখা যায় সিলিন্ডার জলে ভর্তি। এরপর ডিস্ট্রিবিউটরের কাছে সিলিন্ডার বদলে দেওয়ায় আবেদন দিয়েছেন বহু গ্রাহক। কিন্ত গত অক্টোবর থেকে এযাবৎ বহু অভিযোগকারী গ্রাহকের সিলিন্ডার বদলে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ উঠতেই নড়েচড়ে বসে জেলা কনজিউমার প্রটেকশন কাউন্সিল নামে যৌথ দলটি। ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তর, পুলিশের এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ, জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের পক্ষ থেকে ফুড সেফটি বিভাগ এবং লিগ্যাল মেট্রোলজি দপ্তরের কর্তাদের নিয়ে যৌথ দল তৈরি করা হয়। এবং গতকাল শহরের ওই ডিস্ট্রিবিউটরের কার্যালয়ে যায় সেই দল। সেখানে সকলের সিলিন্ডার অবিলম্বে পরিবর্তনের জন্য সতর্ক করা হয়।
আরও পড়ুনঃ ১০ টাকার প্ল্যাটফর্ম টিকিট না কাটায় কোর্টে চালান, ক্রিমিনালের মতো ব্যবহার যাত্রীর সঙ্গে!
অন্যদিকে জেলা ক্রেতা সুরক্ষাদপ্তরের ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর মনোজিৎ রাহা এই প্রসঙ্গে জানান, “গ্যাসের বদলে সিলিন্ডারে জল রয়েছে বলে একাধিক অভিযোগ আমরা পেয়েছি। এখনও অভিযোগকারী অধিকাংশ গ্রাহককে সিলিন্ডার বদলে দেওয়া হয়নি। কয়েকজন পেয়েছেন তাও ১৫-২০ দিন পর। এমন ঘটনা যাতে ভবিষ্যৎ এ না হয় তার জন্য রিফিলিং কোম্পানির সঙ্গে কথা বলতে বলা হয়েছে ডিস্ট্রিবিউটরকে।” কিন্তু সেক্ষেত্রে ডিস্ট্রিবিউটরের পক্ষে নীলাঙ্কর বর্মন জানান, “রিফিলিং করে থাকে ইন্ডিয়ান ওয়েল। তারা শুধু ডিস্ট্রিবিউট করেন। এনিয়ে তারা নিদিষ্ট জায়গায় জানাবেন। আমরা অধিকর্তাদের বললাম বিষয়টা। দেখা যাক তাঁরা কী সিদ্ধান্ত নেয়। ”