প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ১ সপ্তাহ আগে SSC-এর নিয়োগ দুর্নীতি (SSC Scam) নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের বেনজির রায়ে চাকরি গিয়েছে এই রাজ্যের প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং অশিক্ষক কর্মচারীর। যার দরুন দিকে দিকে চলছে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ আন্দোলন। ঠিক এই আবহে নিজেদের যোগ্যতা ফিরিয়ে নিতে গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার থেকে সল্টলেকে স্কুল সার্ভিস কমিশনের দফতরের সামনে লাগাতার অনশন শুরু করেছেন তিন জন চাকরিহারা শিক্ষক। ঝড় জল বৃষ্টির মধ্যেও ঠায় নিজেদের দাবি বজায় রেখে অনশন চালিয়ে গিয়েছেন তাঁরা। রাতে আবার অনশনকারীদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি তথা বর্তমানে বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আর এই আবহে এসএসসি দুর্নীতি কাণ্ডে সিবিআইয়ের নজরে এল ‘চারমূর্তির নাম’।
চার্জশিটে উঠে এসেছে চার মূর্তির নাম!
তিন বছর আগে থেকে অর্থাৎ ২০২২ সাল থেকে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। আদালতে একগুচ্ছ তথ্য এবং একের পর এক চার্জশিট জমা করছে তাঁরা। আর সেই চার্জশিটেই উঠে এসেছিল রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ অনেক ‘প্রভাবশালী’ নাম। এমনকি সিবিআই এর চার্জশিটে উঠে এসেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি-র তিন উচ্চপদস্থ কর্তা এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদের এক কর্তার নাম। টার্গেট করা হয়েছে এই চারমূর্তিকেই। আশঙ্কা করা হচ্ছে তাঁরাই এসএসসি দুর্নীতিতে মূল ‘চারমূর্তি’। জানা গিয়েছে এই চারমূর্তি ওএমআর শিটের তথ্য নষ্ট থেকে শুরু করে অযোগ্য প্রার্থীদের টাকার বদলে নিয়োগ এবং যোগ্যদের নম্বরে কারচুপি ইত্যাদি অপরাধমূলক কাজ করে এসেছে। কিন্তু কে এই চারমূর্তি?
কারা এই চারমূর্তি?
সিবিআই এর চার্জশিটে এই চারমূর্তির তালিকায় রয়েছে, শান্তিপ্রসাদ সিনহা, সুবীরেশ ভট্টাচার্য, অশোক সাহা এবং কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। নবম-দশমের শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত চার্জশিটে সিবিআই জানিয়েছে, দুর্নীতির ষড়যন্ত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন একসময়ে এসএসসি-র পরামর্শদাতা পদে থাকা শান্তিপ্রসাদ সিনহা। সেই সময় ১৮৩ জনের জাল সুপারিশপত্র প্রকাশ করেছিল কমিশন। আর ওই প্রার্থীদের নিয়োগের ব্যবস্থা করে খোদ করেন শান্তিপ্রসাদ। সেই কারণে ২০২২ সালে তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই। একই ভাবে এই দুর্নীতির ভাগীদার সুবীরেশ ভট্টাচার্য। কমিশনের সার্ভারে ওএমআর শিটের নম্বর বদলে দিয়েছিলেন সুবীরেশ। শুধু তাই নয় নম্বর বদলানোর জন্য ইন্টারভিউ বোর্ডের সদস্যদেরও প্রভাবিত করতেন সুবীরেশ। তাঁর বিরুদ্ধে ওএমআর শিটের তথ্য নষ্ট করার অভিযোগও রয়েছে। তাঁকেও গ্রেফতার করে সিবিআই।
জড়িত কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ও!
এছাড়াও চারমূর্তির মধ্যে অন্যতম হলেন অশোক সাহা। সেই সময় যে ১৮৩টি জাল সুপারিশপত্র তৈরি হয়েছিল সেই সকল সুপারিশপত্র এবং নিয়োগপত্রে তিনি অনুমতি দিয়েছিলেন। আর এই অনুমোদনের ফলে প্যানেল-বহির্ভূত অযোগ্য প্রার্থীরা বিভিন্ন স্কুলে চাকরি পেয়েছেন। বাদ গিয়েছে যোগ্য প্রার্থীরা। এমনকি শান্তিপ্রসাদ এবং সুবীরেশের মতো উত্তরপত্রের ‘ব্যাকআপ’ এবং সফ্ট কপি নষ্ট করেছিলেন তিনি। অন্যদিকে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ও এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। অযোগ্য প্রার্থীদের নামে যে সুপারিশপত্রগুলি দেওয়া হয়েছিল, ৯০ দিনের মাথায় তার মাধ্যমেই প্রত্যেকের কাছে নিয়োগপত্র পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন কল্যাণময় নিজে।
আরও পড়ুনঃ কড়া নির্দেশ সরকারের, এবার চাকরি যেতে পারে রাজ্যের ১০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের!
তবে সিবিআই এর চার্জশিটে এসএসসি দুর্নীতিমূলক কাণ্ডে শুধুমাত্র এই চার জন যে জড়িত তা নয়। সিবিআই এর চার্জশিটে আরও একাধিক ব্যক্তির নাম তুলে ধরা হয়েছে। পর্ণা বোস, প্রসন্ন রায়, প্রদীপ সিংহ, জুঁই দাস, মহম্মদ আজাদ আলি মির্জা এবং ইমাম মোমিনদেরও নাম রয়েছে। এর মধ্যে কেউ স্কুল সার্ভিস কমিশনে কাজ করতেন, কেউ আবার দুর্নীতিকাণ্ডের ‘মিডলম্যান’ ছিলেন।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |