সাইকেল দুর্ঘটনায় মৃত ব্যক্তির ড্রাইভিং লাইসেন্স চাইল বীমা সংস্থা! দিতে হবে সুদ সহ ক্ষতিপূরণ

Published on:

Insurance Company

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: বীমার টাকা পেতে হলে বিভিন্ন নিয়ম মানতে হয়। একথা সকলেই জানে। কিন্তু কখনো কখনো কিছু বীমা সংস্থা (Insurance Company) এমন কিছু দাবি করে বসে, যার ফলে সাধারণ মানুষের রাতের ঘুম মাথায় ওঠে। হ্যাঁ, এমনই এক অবাক করার ঘটনা ঘটেছে মহারাষ্ট্রের নাগপুরে। যেখানে সামান্য এক সাইকেল আরোহীর মৃত্যুতে তার পরিবারকে ড্রাইভিং লাইসেন্স জমা করতে বলে বীমা সংস্থা। আর এই ঘটনার প্রায় এক যুগ কেটে যাওয়ার পর অবশেষে নাগপুর জেলার সুরক্ষা কমিশন ন্যায়বিচার করলো।

ঘটনাটি কী?

দিনটা ২০১২ সালের ১লা অক্টোবর। নাগপুরের বাসিন্দা বিজয় ধোবলে সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিলেন। আর সেই সময় মোটরসাইকেলের ধাক্কায় তিনি গুরুতর আহত হন। এরপর হাসপাতালে ভর্তি হন। কিন্তু ডাক্তাররা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে। সূত্র বলছে, বিজয়ের কাছে একটি ৩ লক্ষ টাকা বীমা পলিসি ছিল। দুর্ঘটনার পর তার স্ত্রী প্রমিলা ধোবলে ক্ষতিপূরণের আবেদন জানালে সেই বীমা সংস্থা দাবি করে যে, তার স্বামীর ড্রাইভিং লাইসেন্স, পোস্টমর্টেম রিপোর্ট এবং আরো কিছু নথি জমা দিতে হবে। না দিলে টাকা পাওয়া যাবে না।

সাইকেল চালকেরও ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রয়োজন…

এই বিষয়টি নিয়ে এক বিস্ময়কর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। ভয় পেয়ে বসে না থেকে প্রমিলাদেবী ন্যায়বিচারের আশায় আদালতের দারস্ত হন। সেখানে তার আইনজীবী প্রশ্ন তোলেন, যখন তিনি সাইকেল চালাচ্ছিলেন তখন তার ড্রাইভিং লাইসেন্স কেন প্রয়োজন? তিনি আরও জানান, পোস্টমর্টেম রিপোর্ট পুলিশের কাছেই ছিল এবং বীমা সংস্থার এই দাবি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।

কমিশন কী রায় দিল?

অবশেষে ২০২৫ এর ২৫শে মার্চ, নাগপুর জেলার সুরক্ষা কমিশন স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, ড্রাইভিং লাইসেন্স চাওয়া সত্যিই অযৌক্তিক এবং আইনবিরুদ্ধ। কমিশনের প্রেসিডেন্ট সচিন শিম্পি এবং সদস্য বি.বি. চৌধুরী বীমা সংস্থাকে নির্দেশ দেয়, তাকে ৩ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং সেই সঙ্গে ৯ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে। আর এই সুদ ৩০শে জানুয়ারি, ২০১৪ থেকে হিসাব করতে হবে।

আরও পড়ুনঃ বাংলায় বাতিল একাধিক ট্রেন, বদলে গেল বহু ট্রেনের সূচিও! তালিকা প্রকাশ পূর্ব রেলের

ঐতিহাসিক রায়ের গুরুত্ব

এই একটি ঘটনা সাধারণ মানুষের জন্য বড় বার্তা বহন করছে। বীমা সংস্থা যদি অযৌক্তিক শর্ত আরোপ করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। অনেক সময় মানুষ ভয় বা জটিলতার কারণে মুখে কুলুপ আঁটে। কিন্তু ভোক্তা কমিশন থেকে উপযুক্ত সহায়তা পাওয়া সত্যিই সম্ভব।

সঙ্গে থাকুন ➥