Indiahood-nabobarsho

মানি হেইস্ট দেখে ব্যাঙ্ক থেকে ১৭.৭ কেজি সোনা লুঠ! যেভাবে পুলিশের জালে এল ডাকাতরা

Published on:

Gold Robbery

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: এ যেন একেবারে সিনেমার গল্পকেও হার মানিয়ে দেয়। জনপ্রিয় স্প্যানিশ সিরিজ ‘মানি হেইস্ট’ দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে একেবারে ১৭.৭ কেজি সোনা লুট (Gold Robbery) করেছে ছয়জন ডাকাতের দল। কী অবাক লাগছে শুনে? আসলে এটাই সত্যি। তবে যতই পরিকল্পনা নিখুঁত হোক, শেষ রক্ষা হয়নি। শেষমেষ তারা ধরা পড়েছে হাতেনাতে। আর এই ঘটনাটি ঘটেছে কর্ণাটকের দেবনগর জেলার ন্যামাটি শহরে স্টেট ব্যাঙ্কের একটি শাখায়।

গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন Join Now

ঘটনার সূত্রপাত কীভাবে?

দিনটি ছিল ২০২৪ সালের ২৮শে অক্টোবর। দিনের আলোতে নয়, বরং রাতের অন্ধকারে সোজা ব্যাঙ্কে ঢুকে সোনা ভর্তি লকার খুলে ফেলে ডাকাতরা। জানা যাচ্ছে। মোট ১৭.৭ কেজি সোনা লুট হয়, যার বাজার মূল্য ছিল কয়েক হাজার কোটি টাকা। প্রথমদিকে পুলিশ কোন কুল কিনারা খুঁজে পাচ্ছিল না। কারণ ডাকাতের দল সামান্য কোন প্রমাণই ফেলে যায়নি।

তদন্তের চাঞ্চল্যকর মোড়

তবে মাসের পর মাস তদন্তের পর কর্ণাটক পুলিশ অবশেষে উদ্ধার করে সেই লুট হওয়া সোনা। জানেন কোথা থেকে? আসলে তামিলনাড়ুর মাদুরাই জেলার উসালামপট্টি শহরের একটি কুয়ো থেকে সেই বিপুল পরিমাণ হলুদ ধাতু উদ্ধার করা হয়। আর এখান থেকেই খুলে যায় এই পুরো চক্রের জট। 

বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে Join Now

কারা ছিল এই ছয়জন?

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই দুষ্কৃতিরা হল বিজয়কুমার যার বয়স ৩০, অজয়কুমার যার বয়স ২৮, অভিষেক যার বয়স ২৩, চন্দ্রু যার বয়স ২৩, মঞ্জুনাথ যার বয়স ৩২ এবং পরমানন্দ যার বয়স ৩০। সূত্র খতিয়ে আরও জানা গিয়েছে, বিজয় এবং অজয় দুই ভাই। আর পরমানন্দ তাদের জামাই। এরা তামিলনাড়ুরই বাসিন্দা এবং দীর্ঘদিন ধরেই ন্যামাটিতে মিষ্টির দোকান চালাতো। আর বাকিরা স্থানীয় অঞ্চলের বাসিন্দা।

মানি হেইস্ট দেখেই ডাকাতির প্ল্যান

এই গোটা চক্রের সবথেকে অবাক করার বিষয় হল, এই ডাকাতির মূল মাথা বিজয়কুমার নাকি জনপ্রিয় সিরিজ মানি হেইস্ট আর ইউটিউব ভিডিও দেখাই এই পরিকল্পনা সাজিয়েছিল। জানা যাচ্ছে, ব্যাংক থেকে ১৫ লক্ষ টাকা ঋণের আবেদন করেছিল সে। কিন্তু আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়ে বিজয় এবং প্রতিশোধ নেওয়ার জন্যই এই বড়সড় সিদ্ধান্তের পথে হাটে। 

পরিকল্পনা পেছনে ছিল ছয় মাসের প্রস্তুতি

তবে এক-দুই দিনের ঘটনা নয়। ছয় থেকে নয় মাস ধরে প্ল্যানিং করেছিল তারা। বাজার থেকে কিনে ফেলে সাইলেন্ট হাইড্রোলিক কাটার, গ্যাস কাটার, এমনকি অক্সিজেন সিলিন্ডারের সিরিয়াল নাম্বার ঘষে তুলে দেওয়ার যন্ত্র। আর ব্যাংকের জানালার গ্রিল খুলেই তারা ভিতরে ঢোকে। এরপর লকারের দরজা কেটে সোনা হাতিয়ে নিয়ে চম্পট দেয়। এমনকি সিসিটিভির ডিভিডিও নিয়ে যায়, যাতে কোনরকম প্রমাণ না থাকে।

পুলিশের তৎপরতায় গ্রেপ্তার

সাম্প্রতিক সময়ে এটি ছিল সবথেকে বড় ডাকাতির ঘটনা। আরে কর্ণাটক পুলিশের কাছে এটি একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য। তামিলনাড়ু, গুজরাট, দিল্লি থেকে শুরু করে রাজস্থান পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে একে একে তারা অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই গ্রুপের বিরুদ্ধে কর্ণাটক এবং তামিলনাড়ুর আরো বেশ কিছু অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। 

আরও পড়ুনঃ প্রতিশোধ! KKR-কে হারিয়ে জয়ের রহস্য ফাঁস করলেন আইয়ার

এক কথায় এক সামান্য ওয়েব সিরিজ দেখে কল্পনা শুরু হয়। তারপর তা বাস্তবে ভয়ঙ্কর রূপ নেয়। কিন্তু যতই সিনেমার মতো নিখুঁত পরিকল্পনা হোক না কেন, সত্যের জয় সবসময়ই হয়। চোর বেশি দিন পালিয়ে থাকতে পারে না। আর এই ঘটনা আবারও সেটাই প্রমাণ করলো।

গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্যJoin Group
চাকরির খবরের জন্যJoin Hood Jobs
রাশিফলের জন্যJoin Hood Rashifal
খেলার খবরের জন্যJoin Whatsapp
সঙ্গে থাকুন ➥
X
Join Group