প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: এই মুহূর্তে শান্ত হয়েছে মুর্শিদাবাদ এলাকা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলেও এখনও এলাকাবাসী আতঙ্কে ভুগছে। এখনও পর্যন্ত তাই আধাসেনার টহল চলছে জেলায়। এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পরেই জেলা পরিদর্শন করতে আসেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এবং জাতীয় মহিলা কমিশন। বাদ যাননি শুভেন্দু অধিকারীও। গতকাল অর্থাৎ সোমবারই মুর্শিদাবাদে গিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এই আবহে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “রাজ্য সভাপতি পৌঁছেছেন, মানে দল পৌঁছেছে। কিন্তু আমাকে আটকানো হচ্ছে। ইন্টারনেট চালু হবার পর মুর্শিদাবাদে যাওয়ার জন্য বহু মেল পেয়েছি। আশা করি কোর্টের অর্ডার পাবো।”
হিন্দুদের জন্য আলাদা বুথের দাবি!
এদিকে মুর্শিদাবাদে হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনার আবহেই মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় হিন্দু ভোটারদের জন্য বিশেষ বুথের ব্যবস্থা করার দাবি তুললেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। এদিন তিনি বলেন, “৫০ শতাংশের কম হিন্দু হলে ভোট দিতে দেবে না। সিতাই, দিনহাটা, ক্যানিং, হাড়োয়া, গোসাবা, মিনাঁখায় ভোট দিতে দেবে না। তাই নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করব, হিন্দুদের জন্য আলাদা বুথ তৈরি করতে হবে।” এমনকি কোন কোন বিধানসভা এলাকায় হিন্দুদের জন্য পৃথক বুথ প্রয়োজন, তার একটা প্রাথমিক তালিকাও তৈরি করেছেন শুভেন্দু অধিকারী।
শুভেন্দুর দাবিকে অবাস্তব ঘোষণা শাসকদলের
এছাড়াও এদিন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আরও বলেন যে “যেখানে হিন্দু ভোটাররা মুসলিম এলাকা দিয়ে ভোট দিতে যায়, সেখানে তাদের যেতে দেওয়া হবে না। তাই হিন্দু পল্লিতেই স্পেশাল বুথ করে ভোট দিতে হবে। করোনা কালে যদি বাড়ি বাড়ি গিয়ে নির্বাচন হয় তাহলে সেক্ষেত্রে হিন্দুদের জন্যও এই পন্থা অবলম্বন করতে হবে। তাই অবিলম্বে বুথ ধরে জনবিন্যাস করতে শীঘ্রই যেন নির্বাচন কমিশন রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজকুমার আগরওয়ালকে পাঠান।” যদিও শুভেন্দুর এই দাবিকে অবাস্তব ও দেশের সংবিধান বিরোধী বলে মনে করছে তৃণমূল কংগ্রেস। রীতিমত সাম্প্রদায়িক রাজনীতি বলে দাগিয়ে দিচ্ছে শাসকদল।
শুভেন্দুকে কটাক্ষ সেলিমের
তবে শুধু শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস নয়, শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেন, “ ভারতবর্ষ স্বাধীন হওয়ার আগে ব্রিটিশ আমলে মুসলিম লিগ ও হিন্দু মহাসভা এই রকম পৃথক ইলেক্টোরেটের কথা বলত। আজ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর শুভেন্দু অধিকারী সেই মুসলিম লিগ ও হিন্দু মহাসভার সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ফেরাতে চাইছেন।” অন্যদিকে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ শুভেন্দু অধিকারীর করা বিস্ফোরক দাবির বিরুদ্ধে বলেন, ‘দেশের সংবিধান ও আইন–বিরোধী, অবাস্তব কথা বলছেন উনি। বিরোধী দলনেতার পদে থাকার যোগ্যতা নেই ওঁর। তাই বিরোধী দলনেতার পদ থেকে শীঘ্রই ইস্তফা দেওয়া উচিত।’
আরও পড়ুনঃ বিদ্যুতের বিল দিতে পারছেন না? চিন্তা নেই, একবার আবেদন করলেই হয়ে যাবে মাফ
এদিকে শুভেন্দু অধিকারী সরাসরি কোচবিহারের এসপিকে চ্যালেঞ্জ করেছে। তাঁর অভিযোগ, কোচবিহারের ভাওয়াইয়া শিল্পী মণীন্দ্র বর্মণ ২৬ হাজার চাকরি চুরি নিয়ে গান গেয়েছিলেন। সেই কারণে নাকি চারবার তাঁর বাড়িতে পুলিশ গিয়েছে। শিল্পীর মোবাইল জমা দিতে বলেছে পুলিশ। তাই এই ঘটনায় শিল্পীর পাশে দাঁড়িয়ে বিরোধী দলনেতার হুঁশিয়ারি, “ ক্ষমতা থাকলে ওনার কেশাগ্র স্পর্শ করে দেখুন।”
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।