সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ভারতীয় রেলওয়ে (Indian Railways), যার মাধ্যমে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে হাজার হাজার ট্রেন চলাচল করে এবং লক্ষ লক্ষ যাত্রী প্রতিদিন যাতায়াত করে। তবে রেলওয়েতে প্রতিবছর প্রচুর দক্ষ ও প্রশিক্ষিত কর্মী নিয়োগ করা হয়। আর এই সূত্র ধরেই দেশের অন্যতম বড় চাকরিদাতা সংস্থা ভারতীয় রেলওয়ে। তবে এবার নিয়োগে কিছু বদল আনার দাবি ছিল। আর সেই দাবি পূরণ করল রেলওয়ে বোর্ড।
ভারতীয় রেল বোর্ডের তরফে তথ্য ও প্রচার বিভাগের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর দিলীপ কুমার এক গুরুত্বপূর্ণ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। আর সেখানে নিয়োগ পদ্ধতিতে বড়সড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। কিন্তু কী কী পরিবর্তন এসেছে, কেন এসেছে এবং কাদের সুবিধা হবে এতে? জানতে হলে প্রতিবেদনটি পড়ুন।
কাগজে-কলমে নয়, বরং পরীক্ষা হবে কম্পিউটারে
সেই বিগত ২০১৫ সাল থেকে শুরু হয়েছে কম্পিউটার ভিত্তিক পরীক্ষা (CBT)। আগে ওএমআর শিটে রেলের পরীক্ষা হত। সেখানে একদিকে রেজাল্ট প্রকাশ করতে সময় লাগতো, অন্যদিকে দুর্নীতির সুযোগ থাকতো। তবে এখন সবই হচ্ছে ডিজিটালি। আবেদন প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে প্রশ্নপত্র তৈরি, উত্তরপত্র তৈরি, সবই হচ্ছে অনলাইনে।
আর এতে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সম্ভাবনাও কমছে, পাশাপাশি দ্রুত রেজাল্ট দেওয়া সম্ভব হচ্ছে এবং দুর্নীতির সুযোগও কমছে। আর সবথেকে বড় কথা, এখন ১৪টি আঞ্চলিক ভাষায় রেলের পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে, যা দেশের প্রতিটি রাজ্যের চাকরিপ্রার্থীদের উপকারে আসবে।
সিলেবাস কীভাবে ঠিক হয়?
অনেক পরীক্ষার্থীরই প্রশ্ন থাকে সিলেবাস নিয়ে। এবার দিলীপ কুমার জানিয়েছেন, রেলের প্রতিটি পদের জন্য সিলেবাস তৈরি করা হয় শিক্ষাগত যোগ্য এবং কাজের ধরন অনুযায়ী। আর রেলওয়ে রিক্রুটমেন্ট বোর্ড বিশেষজ্ঞদের এক কমিটি এই বিষয়ে চূড়ান্ত সুপারিশ করে।
চালু হয়েছে রেলের নিজস্ব নিয়োগের ক্যালেন্ডার
সব থেকে বড় অভিযোগ ছিল, রেল নিয়মিত নিয়োগ করে না। আর এবার সেই সমস্যা সমাধান হতে চলেছে। হ্যাঁ, ২০২৪ সাল থেকে রেলওয়ে চালু করেছে এক বার্ষিক নিয়োগ ক্যালেন্ডার। আর এই ক্যালেন্ডারে গ্রুপ-এ থেকে শুরু করে গ্রুপ-ডি সমস্ত পদে সম্ভাব্য নিয়োগের তারিখ উল্লেখ করা রয়েছে। আর এতে যেমন পরীক্ষার্থীদের সুবিধা হবে, অন্যদিকে নিয়োগ প্রক্রিয়া হবে আরও স্বচ্ছ।
পরিসংখ্যান কী বলছে?
বর্তমানে ভারতীয় রেলের এক পরিসংখ্যানমাফিক জানা গিয়েছে, রেলে ১২.৩০ লক্ষের বেশি কর্মী কাজ করছেন। সুত্রের খবর, ২০০৫ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত নিয়োগ হয়েছিল ৪.১১ লক্ষ। সেখানে ২০১৫ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত নিয়োগ হয়েছে ৫.২ লক্ষ। আর শুধু পাইলট ও ALP পদেই ৫১,৮৫৬ জন নিয়োগ পেয়েছে এই ১০ বছরে।
২০২৪ সাল থেকেই বিরাট নিয়োগ
রেল বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাসে মোট ৯২,১১৬টি শূন্যপদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি বেরিয়েছে। এমনকি ১০টি পদে নিয়োগ করা হচ্ছে। সেগুলি হল সহকারী লোকো পাইলট, টেকনিশিয়ান, আরপিএফ সাব ইন্সপেক্টর এবং কনস্টেবল, জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার, মেডিকেল বিভাগ, গ্রাজুয়েট ও আন্ডার গ্রাজুয়েট স্তরের নন টেকনিক্যাল পদ এবং লেভেল-এ এর বহু গুরুত্বপূর্ণ পদ।
আরও পড়ুনঃ আরও মসৃণ পাহাড়ে যাওয়া, উত্তরবঙ্গে তৈরি হবে নতুন সেতু, রাজ্যকে প্রস্তাব NHAI-র
নতুন ব্যবস্থায় কী কী সুবিধা আসবে?
এই গোটা পরিবর্তন রেলওয়ে নিয়োগ পদ্ধতিকে করবে আরো স্বচ্ছ ও আধুনিক। হ্যাঁ, এখন আর অনিশ্চয়তার দিন থাকবে না, বরং প্রার্থীরা আগেভাগেই জানবেন কবে পরীক্ষা হবে, কীভাবে আবেদন করবেন এবং সিলেবাস সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |