প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: হাতে মাত্র ৫ মাস বাকি। সামনেই উচ্চ মাধ্যমিকের (WBCHSE) তৃতীয় সেমিস্টার। অথচ এখনও একাধিক পাঠ্য বই নেই। ভাষাশিক্ষার পাঠ্যবই এমনকি ইংরেজি পাঠ্যবই দেখা পাওয়া যায়নি। যার দরুন চিন্তায় স্কুল। আর এই আবহে শিক্ষা সংসদ পরিবর্তন করল সংস্কৃতের পাঠ্যক্রম। জানা গিয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফে সংস্কৃতের পাঠ্যক্রমে বদল করা হয়েছে। তৃতীয় সেমেস্টারের ১, ২ এবং ৩ নম্বর ইউনিটের বিষয়গুলি বদল করা হয়েছে। যার দরুন মাথায় হাত শিক্ষক মহল থেকে শুরু করে পড়ুয়াদের।
কোন কোন বিষয় পরিবর্তন?
শিক্ষা সংসদের তরফ থেকে সংস্কৃতির যে যে বিষয় বদল করা হয়েছে সেগুলি হল তৃতীয় সেমেস্টারে ইউনিট -১ গদ্যে ‘শ্রীমতী’ (‘অবদানশতকম্’ -এর অংশবিশেষ) ছিল, কিন্তু সেটি এবার পরিবর্তন হয়ে ‘রাজবাহনচরিতম্’ (‘দশকুমারচরিতম্’-এর অংশবিশেষ) পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এবং ইউনিট-২ পদ্যে ‘অভ্যাসবশগং মনঃ’ (‘শ্রীমদ্ভগবদগীতা’-র নির্বাচিত অংশ)-এর পরিবর্তে ‘যোগঃ কর্মসু কৌশলম্’ (‘শ্রীমদ্ভগবদগীতা’)-র নির্বাচিত অংশ পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। পাশাপাশি ইউনিট ৩-এর নাটক অংশে যেখানে আগে ‘বীরঃ সর্বদমনঃ’ (মহাকবি কালিদাস রচিত ‘অভিজ্ঞান শকুন্তলম্’ অংশ বিশেষ) ছিল সেখানে তার পরিবর্তে রাখা হয়েছে ‘দুর্বাসাসঃ অভিশাপঃ’ (মহাকবি কালিদাস রচিত ‘অভিজ্ঞান শকুন্তলম্’ নাটকের অংশ বিশেষ) পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত।
এছাড়াও উচ্চ মাধ্যমিকের তৃতীয় সেমিস্টারের ইউনিট- ৫ পৌরাণিক ও লৌকিক সংস্কৃত সাহিত্যের ইতিহাস অংশে আর্যভট্ট ও বরাহমিহির (গ্রন্থকার ও গ্রন্থের সংক্ষিপ্ত পরিচয়) রাখা ছিল। কিন্তু সেটিও পরিবর্তন করেছে শিক্ষা সংসদ। এবং সেই স্থানে বরাহমিহিরের পরিবর্তে ব্রহ্মগুপ্ত পাঠ্যসূচির তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু এই পাঠ্যসূচি পরিবর্তন করে ঘোর সমস্যায় পড়েছে শিক্ষকমহলের একাংশ। কারণ তাঁদের দাবি আগে সংস্কৃত-র যে পাঠ্য বিষয় ছিল সেটা নিয়ে কোনো রকম অভিযোগ ছিল না শিক্ষক শিক্ষিকা এবং পড়ুয়াদের। কিন্তু তা সত্ত্বেও কেন এই পরিবর্তন।
অভিযোগ উঠে এসেছে শিক্ষক মহল থেকে
এদিকে দ্বাদশের পড়ুয়ারা জানাচ্ছে, আগামী সেপ্টেম্বরে তাদের তৃতীয় সিমেস্টারের পরীক্ষা হবে। তার জন্য পুরোনো পাঠ্যক্রমের ভিত্তিতে প্রকাশিত বই ইতিমধ্যেই ছাত্রছাত্রীরা কিনে ফেলেছে। আর এসবের মাঝে আজকে হঠাৎ করে কোনও অভিযোগ না থাকা সত্ত্বেও কেন পাঠ্যক্রমে বদল করা হল তা নিয়ে বেশ চিন্তায় সকলে। তাহলে কেন এই পরিবর্তন অনেক আগে জানানো হয়নি। এদিকে আরও একবার নতুন বই কেনা সকলের পক্ষেও সম্ভব নয়। এই প্রসঙ্গে শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারীও এই বিষয়ে ঘোর বিরোধিতা করেছে।
কিঙ্কর অধিকারীর অভিযোগ, আশ্চর্যজনক ভাবে একটি প্রকাশনা সংস্থা নতুন সিলেবাসের ভিত্তিতে এবং বাকিরা পুরানো সিলেবাসের ভিত্তিতে বই প্রকাশ করল কী ভাবে? সঠিক বই প্রকাশ সম্পর্কিত তথ্য কেন সব প্রকাশনা সংস্থার কাছে ছিল না? এদিকে সেপ্টেম্বরে তৃতীয় সেমেস্টার কিন্তু এখনও বাংলা, ইংরেজির বই স্কুলে আসেনি। এত রদবদলের ফলে ছাত্র-ছাত্রীদের পঠনপাঠন ক্রমাগত বিঘ্নিত হচ্ছে।” একই অভিযোগ তুলছে পড়ুয়াদের অভিভাবকরাও।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।