প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ফের মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে কাশ্মীর। সন্ত্রাসবাদীদের হামলায় রীতিমত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে কাশ্মীর। গত মঙ্গলবার জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহানায় মৃত্যু হয়েছিল ২৬ পর্যটকের। আর তার পরিপ্রেক্ষিতেই গত বৃহস্পতিবার, উধমপুরে ভারতীয় সেনা (Indian Army) এবং জঙ্গির সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে বাঙালি সেনা জওয়ান ঝন্টু আলি শেখের। গতকাল রাতে সেই শহিদের দেহ নিয়ে আসা হয়েছে বাংলার মাটিতে। কান্নায় ভেঙে পড়ে গোটা পরিবার। সেনার তরফে বিমানবন্দরেই গান স্যালুট দেওয়া হয় শহীদ ঝন্টু আলি শেখকে।
শোকে পাথর গোটা পরিবার!
প্রায় ১৪ বছর আগে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগদান করেছিলেন চাষি পরিবারের কনিষ্ঠ সন্তান ঝন্টু। প্রায় দু’বছর আগে কাশ্মীরে পোস্টিং হয় ঝন্টুর। উধমপুরে জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াই শুরু হতেই সেখানে যান তিনি। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। বড়দাদা রফিকুল শেখ ভারতীয় সেনায় কর্মরত, মেজদাদা বিশারদ শেখ সৌদি আরবে কর্মরত। বড়ছেলে রফিকুলের মাধ্যমে ছোটছেলের মৃত্যুর খবর পান বাবা সুবর আলি, মা আখিরণ বিবি। তারপর থেকেই শোকে পাথর হয়ে গিয়েছেন তাঁরা। গোটা এলাকায় লাগানো হয়েছে ঝন্টু আলির ছবি। প্রত্যেকে বলছেন, ধর্ম নয়, রাজনীতি নয়, শাস্তি দেওয়া হোক জঙ্গিদের।
সম্প্রীতির বার্তা সব্যসাচীর
সূত্রের খবর, গতকাল দমদম বিমানবন্দরে হাজির ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, তৃণমূল নেতা সব্যসাচী দত্ত, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার। এদিন রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ দমদম বিমানবন্দরে কফিনবন্দি দেহ নিয়ে আসে সেনাবাহিনীর বিশেষ বিমান। সকলেই ঝন্টুর কফিনে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। আর এই আবহে সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে সব্যসাচী দত্ত বলেন, ”কার কী ধর্ম জানি না। ওঁরা দেশের সেবা করে। ওঁদের জন্য আমরা সুরক্ষিত থাকি। দেশের এমন বীর সন্তানকে হারানোর বেদনা আমাদের সকলের। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি।” এদিকে আজই নদিয়ার তেহট্টে ঝন্টুর কফিনবন্দি দেহ পৌঁছে গিয়েছে। সেখানেই হবে শেষকৃত্য। তাই শেষ বিদায়ের প্রস্তুতি সারছেন পরিবারের সদস্যরা।
আরও পড়ুনঃ এবার আরও আগে! গরমের ছুটিতেই উচ্চমাধ্যমিকের ফল প্রকাশ, জেনে নিন দিনক্ষণ
বদলার দাবি শহীদ সেনার স্ত্রীর
সূত্রের খবর, গতকাল রাতে ব্যারাকপুরের সেনা ছাউনিতে আনা হয় নিহত সেনার কফিন বন্দি দেহ। এদিন সকালে সেখানে গার্ড অফ অনার দেওয়া পর সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ তেহট্টর পাথরঘাটা গ্রামে পৌঁছয় কাশ্মীরে জঙ্গিদের সঙ্গে এনকাউন্টারে নিহত সেনার দেহ। অন্যদিকে স্বামীর কফিনবন্দি দেহ আগলে চোখের জল মুছে ভারতীয় সেনা আধিকারিকদের উদ্দেশে সদ্য স্বামীহারা স্ত্রী জানালেন, “আমরাও মুসলিম। কিন্তু পাকিস্তানি মুসলিমদের মনে বিদ্বেষ। ওরা মুসলিম নয়। এর বদলা চাই। না হলে আরও বাচ্চা বাবা হারা হবে!” পাথরঘাটা তো বটেই ঝন্টুকে শেষ দেখা দেখতে আগে থেকেই গ্রামে মানুষের ভিড় উপচে পড়েছে। কফিনবন্দি ঝন্টুকে দেখে পরিজনেরা তো বটেই কেঁদে ফেললেন গ্রামবাসীরাও।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।