সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: এবার এমন এক চুক্তি সাক্ষাৎ হয়েছে, যা ভারতের ইন্টারনেট জগতের সংজ্ঞাকে বদলে দেবে। হ্যাঁ, মুকেশ আম্বানির রিলায়েন্স জিও এবার এলন মাস্কের স্পেসএক্সের স্টারলিঙ্কের (Jio And Starlink) হার্ডওয়্যারের সাথে হাতে হাত মিলিয়ে ফেলেছে। সুত্রের খবর, দেশের এক বৃহৎ দরিদ্র শ্রেণির গ্রাহকদের কাছে খুব সহজেই স্যাটেলাইট ভিত্তিক ব্রডব্যান্ড পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া হবে।
সূত্র বলছে, এই ঘোষণাটি জিও প্ল্যাটফর্মের ত্রৈমাসিক আয় আপডেটের সময় করা হয়েছিল। যেখানে কোম্পানিটির নিশ্চিত করেছে যে, একবার স্পেসএক্স ভারতের মাটিতে পা ফেললে স্টারলিঙ্ক প্রতিটি টেলিকম স্টোরে উপলব্ধ হবে। শুধু বিক্রি নয়, বরং জিও গ্রাহকের স্টারলিঙ্ক ইনস্টলেশন এবং অ্যাক্টিভিশন সংক্রান্ত সহায়তা প্রদান করার জন্য সাপোর্ট সিস্টেমও থাকবে।
এদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী এয়ারটেল..
এখানেই শেষ নয়। বিপরীত দিকে প্রতিদ্বন্দ্বী Bharti Airtel-ও স্টারলিঙ্কের সাথে একই ধরনের একটি চুক্তি সেরে ফেলেছে। তবে বেশ কিছু বিশ্লেষক মনে করছে, জিও তাদের বিশাল রিটেইল উপস্থিতি এবং আগ্রাসী বাজার কৌশলের কারণে স্টারলিঙ্কের সঙ্গে হাতে হাত মেলাতে পারবে। আর এতে এয়ারটেল হয়তো পিছিয়ে পড়বে।
গ্রামীণ এবং দুর্গম অঞ্চলেও বিপ্লব
জিও এবং স্টারলিঙ্কের এই অংশীদারিত্ব বিশেষভাবে গ্রামীণ এবং দুর্গাম এলাকাগুলির জন্য আশীর্বাদ হতে চলেছে। যেখানে সাধারণত ইন্টারনেট পরিষেবা এখনও খুব একটা ভালোভাবে পৌঁছায়নি, সেখানে প্রযুক্তি শিখরে পৌঁছাবে। জিওর কানেক্টিভিটি এবং স্টারলিঙ্কের লোয়ার স্যাটেলাইট প্রযুক্তির সংমিশ্রণ এই কোম্পানিগুলিকে ভারতের ডিজিটাল খাতকে রেকর্ড উচ্চতায় নিয়ে যাবে।
আরও পড়ুনঃ ১.৪ কোটির ফ্ল্যাট, সন্তানরা পড়ে নামি স্কুলে! ইনিই ভারতের সবথেকে ধনী ভিখারি, মোট সম্পত্তি …
জিওর ব্যবসায়ীক সাফল্য
এদিকে হিসাব বলছে, জিওর মার্চ ত্রৈমাসিকে ব্যবসায়িক পারফরম্যান্স বেশ শক্তিশালী ছিল। কোম্পানিটি 39,853 কোটি টাকার ট্যাক্স আদায় করেছে বলে খবর। আর এটি 17.8% বার্ষিক বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিচ্ছে। এদিকে EBITDA ছিল 17,016 কোটি টাকা, যা গত বছরের তুলনায় 18.5% বৃদ্ধি। শুধু তাই নয়, জিওর সাবস্ক্রাইবার বেস 2025 সালের মার্চে 488 মিলিয়ন ছাড়িয়ে গিয়েছে, যার মধ্যে 191 মিলিয়ন গ্রাহক জিওর 5G নেটওয়ার্ক ব্যবহার করছে।
আগামী দিনে বিরাট সম্ভাবনা
যদিও জিও ও বস্টারলিঙ্কের এই অংশিদারিত্ব এখনও সরকারের অনুমোদনের অপেক্ষায় বসে রয়েছে। তবে উভয় কোম্পানি নেওয়া প্রাথমিক পদক্ষেপে ভারতে উচ্চগতির ইন্টারনেট শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা। মুকেশ আম্বানি এবং এলেন মাস্কের এই চুক্তি শুধুমাত্র প্রযুক্তিগত বিপ্লব নয়, বরং ভারতের ইন্টারনেট খাতের ভবিষ্যৎকে জ্বলজ্বল করে তোলার দৃষ্টান্ত।