প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত বছর ২২ এপ্রিল হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ একদল চাকরিপ্রার্থীর আবেদনে সাড়া দিয়ে রাজ্যের নেওয়া সিদ্ধান্তের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। পরে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়ায় মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, এমনকী প্রয়োজনে সিবিআই তাঁদের হেফাজতে নিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে বলে জানায়। কিন্তু পরে সেই মামলা গিয়ে ওঠে সুপ্রিম কোর্টে। এবং সিবিআই তদন্তের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। আর এই আবহে এবার সুপার নিউমেরারি পদ নিয়ে হাই কোর্টে ফের মামলা ওঠে।
সুপারনিউমেরারি মামলা নিয়ে বিক্ষোভ
রিপোর্ট অনুযায়ী, গত শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে উচ্চ প্রাথমিকে সুপারনিউমেরারি পদে নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার একটি শুনানি ছিল। নিয়োগে স্থগিতাদেশ ছিল হাই কোর্টের। সেই মামলায় সওয়ালের সময় রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত আদালতের কাছে স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়ার অনুরোধ করেন। যার প্রেক্ষিতে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বিসু জানান, রাজ্যকে এই আবেদন মৌখিক ভাবে নয় লিখিত ভাবে আবেদন করতে হবে। আর তখনই চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ বিক্ষোভ দেখান হাই কোর্ট চত্বরে। তাঁদের অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্টের সুপারনিউমেরারি পদ নিয়ে নির্দেশের পরেও উচ্চ প্রাথমিক নিয়োগ মামলার কোনও অগ্রগতি কেন হয়নি হাই কোর্টে।
পরিস্থিতি এতটাই বিগড়ে যায় যে, বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর সঙ্গে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের ‘আঁতাঁতের’ কথাও বলা হয়। বিচারপতি বসুর বিরুদ্ধে স্লোগান ওঠে। কয়েকজন আবার আইনজীবী বিকাশের চেম্বারের বাইরে বিক্ষোভ দেখান। এছাড়াও ঘটনার দিন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও ফিরদৌস শামিম ছাড়াও আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত এবং বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘেরারও করা হয় বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয় আইনজীবীদের লক্ষ্য করে বোতল ছোড়ার চেষ্টা চলে। গালিগালাজও করা হয়। এরপর প্রতিবাদী চাকরিপ্রার্থীরা দেখা করেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের সঙ্গে।
বিস্ফোরক মন্তব্য কুণালের
এরপর চাকরিপ্রার্থীরা এই গোটা বিষয় নিয়ে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের সঙ্গে দেখা করেন। সেখান থেকে তিনি সাংবাদিক বৈঠক করে সিপিএম-এর সব নেতাদের ছবি দেখান মিডিয়ায়। এবং সকলের সামনেই বলেন বিকাশ ভট্টাচার্যরা মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছেন মামলা লড়ার জন্য, এখন কেন তাঁরাই চাকরি কাড়তে মরিয়া? এছাড়াও তিনি আরও বলেছিলেন, “আর বিচারপতির কিছু কিছু সিপিএমের আইনজীবীকে দেখলে কী হয় জানি না। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে দেখেছি। ভগবান-ভগবান-তারপর সাংসদ।” এই আবহে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুকে নিয়ে মন্তব্যের জেরে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা ওঠে হাইকোর্টে।
মঙ্গলেই হবে মামলার শুনানি
জানা গিয়েছে গতকাল অর্থাৎ সোমবার এই ঘটনায় প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। বার কাউন্সিলের অনেক সদস্য উপস্থিত ছিলেন সেখানে। তাঁদের অভিযোগ, মামলা বিপক্ষে যেতেই পারে। কিন্তু আইনজীবীদের কেন হেনস্থা হতে হবে? এরপরই আদালতের পক্ষ থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই মামলা গৃহীত হয়েছে। কুণাল ঘোষ সহ রাজু দাস ও যেসকল ব্যক্তিরা সেদিন বিচারপতির বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা রুজু হয়েছে। আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি চৈতালি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে ওই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |