বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: সোমবার গুজরাতের বিপক্ষে আগুন ঝরিয়েছেন 14 বছর বয়সী বৈভব সূর্যবংশী (Vaibhav Suryavanshi)। শুভমন সেনার ভয়ঙ্কর বোলিং আক্রমণের সামনে মাথা উঁচিয়ে টিকে থাকার বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। সেই সাথেই রশিদ খানের মতো বিশ্বের সেরা স্পিনারকে ছয় দেখিয়ে নিজের প্রতিভার জানান দিয়েছেন বিহারের ভূমিপুত্র। তাঁর জোরেই গতকাল 8 উইকেট হাতে রেখে শক্তিশালী GT-কে মাঠছাড়া করে রাজস্থান রয়্যালস।
এদিন মাত্র 38 বলে 101 রানের দুরন্ত ইনিংস খেলে বৈভব প্রমাণ করেছেন বয়স শুধুই সংখ্যা মাত্র। পাশাপাশি IPL যে শুধুমাত্র বড়দের খেলা নয়, সেই ভুল ধারণাও ভেঙে দিয়েছেন তিনি। তবে IPL কেরিয়ারের শুরুতে রঙিন দুনিয়ায় পা রাখা বৈভবের ফেলে আসা কাহিনী যথেষ্ট যন্ত্রণার। জানা যায়, বৈভব যাতে ক্রিকেট খেলতে পারে সেজন্য বিরাট বলিদান দিয়েছিলেন তাঁর বাবা। আজ জানবো সে কথাই।
অষ্টম শ্রেণির ছাত্র বৈভব
সম্প্রতি ভারতীয় ক্রিকেটার বৈভব সূর্যবংশীর বাবা সঞ্জীব সূর্যবংশী সাংবাদিকদের দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ছেলে বর্তমানে বিহারের ডক্টর মুক্তেশ্বর সিনহা মডেস্টি বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র। ছেলে প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বাবা সঞ্জীব বলেন, ছেলে বৈভব একদম প্রথম থেকেই ভোরে ঘুম থেকে উঠতো। তারপর নির্দিষ্ট সময়ে ব্রেকফাস্ট সেরে চলে যেত টিউশনে। তবে এসবের মাঝেই তাঁর প্রথম পছন্দ ছিল ক্রিকেট। আর সেটাই একেবারে মন প্রাণ দিয়ে খেলে গিয়েছেন বিহারের পুত্র।
বৈভবের জন্য বিরাট বলিদান বাবা সঞ্জীবের
ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের প্রথম ম্যাচে 20 বলে 34 রান করে একটি ঝলক দিয়েছিলেন বৈভব, তবে বাকি ছিল গোটা শো। গতকাল সেটারই পর্দা ফাঁস করেছেন ভারতীয় ক্রিকেটার। গুজরাতের হাড় কাঁপানো বোলিং আক্রমণের সামনে দাঁড়িয়ে একের পর এক ছক্কা হাঁকিয়ে দিয়েছেন তিনি। আর সেই সূত্র ধরেই সর্বকনিষ্ঠ ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে সেঞ্চুরি গড়ে ইতিহাস লিখেছেন সূর্যবংশী। তবে এই বৈভব সূর্যবংশীকে একেবারে নিজে হাতে তৈরি করেছিলেন বাবা সঞ্জীব। জানা যায়, ছেলের স্বপ্ন পূরণ করতে বিরাট বলিদান দিয়েছেন তিনি।
বেশ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, ছেলের স্বপ্ন একজন বড় ক্রিকেটার হওয়ার, সে কথা জানতে পেরেই নিজের শেষ সম্বল অর্থাৎ কৃষি জমিটুকুও বিক্রি করে দিয়েছিলেন বাবা সঞ্জীব সূর্যবংশী। আর সেই অর্থ দিয়েই চলেছে বৈভবের ক্রিকেট খেলার খরচ। সূত্রের খবর, শুধুমাত্র বাবার প্রচেষ্টাতেই ক্রিকেট জগতে জায়গা করে উঠতে পেরেছিলেন সূর্যবংশী। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, প্রথমবারের জন্য বিহার ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সমর্থনে রঞ্জি ট্রফিতে জায়গা পান বৈভব।
অবশ্যই পড়ুন: শুকিয়ে কাঠ নদী, সিন্ধুর জল আটকাতেই হাহাকার পাকিস্তানে! স্যাটেলাইটে দুর্দশার চিত্র
পরবর্তীতে তিলক নাইডুর নেতৃত্বে অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় নির্বাচকরা তাঁকে কোল্ট টেস্ট ক্রিকেটে নিয়ে আসে। নিজের ক্রিকেট কেরিয়ারের একেবারে কম সময়ের মধ্যে দক্ষতা প্রদর্শন করে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের মতো বিশ্বের সবচেয়ে বড় টি টোয়েন্টি লিগে জায়গা করে নিয়েছেন বৈভব। তবে এই বড় সাফল্যের নেপথ্যে বাবার অবদান সহাস্যে স্বীকার করে নিয়েছেন ছেলে বৈভব। জানা যায়, বাবাই তাঁকে বিভিন্ন ক্রিকেট ম্যাচ দেখানোর জন্য প্রতিদিন অন্তত 100 কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতেন। ছেলেকে একজন সফল ক্রিকেটার বানাতে একেবারে উঠে পড়ে লেগেছিলেন সঞ্জীব। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে প্রথম সাফল্যের পর সেই সম্ভাবনা ধীরে ধীরে খুঁজে পাচ্ছেন বৈভবের জন্মদাতা।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |