প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ২০২৬ সালের মার্চ মাসের মধ্যে মাওবাদীদের নিশ্চিহ্ন করার কথা ঘোষণা করেছিলেন। আর সেই ডেডলাইকে সামনে রেখে ‘অপারেশন সঙ্কল্প’ (Operation Sankalp) নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে ছত্তীসগঢ় সরকার। এখনও পর্যন্ত হাজার হাজার মাওবাদীদের যেমন পাকড়াও করা হয়েছে ঠিক তেমনই আবার হাজারেরও বেশি মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেছেন পুলিশের কাছে। তবে এবার তেলঙ্গানার সীমানায় কারেগুট্টা পাহাড়ে উদ্ধার হল ৩১ জন মাওবাদীদের মৃত দেহ।
মাওবাদীদের ধরতে কেন্দ্রের রুদ্ধশ্বাস অভিযান
সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, বিগত বেশ কয়েকদিন ধরে ছত্তীসগঢ়ের বস্তার ডিভিশনের বিজাপুর জেলা এবং পড়শি রাজ্য তেলঙ্গানার সীমানায় পাহাড়-জঙ্গলঘেরা এলাকায় প্রায়ই মাওবাদীদের সঙ্গে যৌথবাহিনীর গুলির লড়াই হয়ে চলেছে। সেখানে আড়ালে থাকা একাধিক মাওবাদীদের গোষ্ঠীকে ধরতে রীতিমত কেন্দ্রীয় বাহিনী সিআরপিএফ একটি অভিযানকারী দল তৈরি করে। আর সেই দলে অংশগ্রহণ করে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কমান্ডো বাহিনী ‘কোবরা’, ছত্তীসগঢ়ের সশস্ত্র পুলিশ, বস্তার ফাইটারস ও ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ড বাহিনী, মহারাষ্ট্র পুলিশের সি-৬০, তেলঙ্গানা পুলিশের মাওবাদী দমন বাহিনীও।
সীমান্তে ৩১ জন মাওবাদীর মৃতদেহ
গত ২১ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া ‘অপারেশন সঙ্কল্প’ নামে ওই অভিযানের সময় ওই এলাকায় প্রায় ২৪ হাজার আধাসেনা ও পুলিশের ‘জাঁতাকলে’ পড়েছে ৫০০-রও বেশি মাওবাদী। টার্গেট করা হয় নিষিদ্ধ সংগঠন সিপিআই মাওবাদী-দের সশস্ত্র শাখা PLGA বা পিপল্স লিবারেশন গেরিলা আর্মি-র ১ নম্বর ব্যাটেলিনের ঘাঁটি রেগুট্টা এবং দুর্গামগুট্টার ঘন জঙ্গল। অবশেষে বহু দিনের অভিযানের পর যৌথবাহিনীর গুলির লড়াইয়ে অন্তত ২৬ জন মাওবাদী গেরিলার মৃত্যু হয়েছে। আর এই আবহে এবার ছত্তিশগড়-তেলেঙ্গানা সীমান্তের কারেগুট্টা পাহাড়ের আশেপাশের ঘন জঙ্গলে ‘অপারেশন সংকল্প’ চলাকালীন ৩১ জন সন্দেহভাজন মাওবাদীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে গতকাল অর্থাৎ সোমবার ছত্তিশগড় পুলিশ জানিয়েছে যে ৩১ জন নিহত মাওবাদীর মধ্যে ২০ জনকে শনাক্ত করতে পেরেছে এবং ২০ জন শনাক্তকৃত মৃতদেহের মধ্যে ১১ জনকে ময়নাতদন্ত এবং অন্যান্য আইনি আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার পর তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। যদিও বিজাপুরের পুলিশ সুপার জিতেন্দ্র যাদব জানিয়েছেন যে বুধবার বিজাপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযান সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।
উদ্ধার হয়েছে একাধিক অস্ত্র
কয়েকদিন আগে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছিল যে, পাশাপাশি ছত্তীসগঢ়ের রাজধানী রায়পুর থেকে প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার দূরে ওই দুর্গম এলাকায় মাওবাদীদের কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েক জন গুরুত্বপূর্ণ নেতাকেও আটক করা হয়েছে। এছাড়াও এর আগে, ২৪ এপ্রিল, একই অঞ্চলে তিনজন মহিলা মাওবাদীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল এবং প্রচুর পরিমাণে অস্ত্র, বিস্ফোরক এবং অন্যান্য উপকরণ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। এখন পর্যন্ত, শত শত মাওবাদী আস্তানা এবং বাঙ্কার ধ্বংস করা হয়েছে, এবং প্রচুর পরিমাণে বিস্ফোরক, ডেটোনেটর, খাদ্য সরবরাহ এবং নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ হু হু করে বাতিল হচ্ছে গরমের ছুটিতে দার্জিলিং, সিকিম ট্যুর প্ল্যান! প্রকাশ্যে ৩ কারণ
অন্যদিকে সর্বশেষ অভিযানের মাধ্যমে, এ বছর ছত্তিশগড়ে ভিন্ন ভিন্ন সংঘর্ষে ১৬৮ জন মাওবাদী নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ১৫১ জনকে বাস্তার বিভাগে নির্মূল করা হয়েছে, যার মধ্যে বিজাপুর সহ সাতটি জেলা রয়েছে। এছাড়াও পুলিশের মতে, কারেগুট্টা পাহাড়ি এলাকা ব্যাটালিয়নের একটি শক্ত ঘাঁটি হিসেবে কাজ করে। গোয়েন্দা রিপোর্টে দেখা গিয়েছে যে অভিযানের সময় বেশ কয়েকজন সিনিয়র ক্যাডার নিহত বা গুরুতর আহত হয়েছেন।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |