প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত বছরের মাঝামাঝি সময় থেকেই খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে কলকাতার আরজি কর হাসপাতালের নাম। দ্বিতীয় বর্ষের তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় (RG Kar Protest) শোরগোল পড়ে যায় গোটা দেশে। শিয়ালদা আদালত ধৃত সঞ্জয় রায়কে কারাদণ্ডের সাজা শোনালেও, সেই রায়ে অখুশি পরিবার থেকে আন্দোলনকারীরা। এখনও টানাপোড়েন অব্যাহত। সেই আবহেই এবার আরেক বিপত্তি। স্নাতকোত্তর স্তরে উত্তীর্ণ হয়েও সিনিয়র রেসিডেন্ট পদে যোগ দিতে পারছেন না একাধিক।
পদে যোগ দিতে পারছেনা পড়ুয়ারা!
স্বাস্থ্য প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে রাজ্যে চিকিৎসা ব্যবস্থার হাল উন্নত করতে এবং শিক্ষক-চিকিৎসকের ঘাটতি মেটাতে জেলার মেডিক্যাল কলেজগুলিতে এখন সিনিয়র রেসিডেন্ট পদ বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু এইমুহুর্তে সেই পদে একাংশের যোগ দেওয়ার অনুমোদন না মেলায় ধাক্কা খাচ্ছে জেলার মেডিক্যাল কলেজগুলির রোগী পরিষেবা। এদিকে অভিযোগ উঠছে যে স্নাতকোত্তর স্তরে উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার পর কাউন্সেলিংও শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তার পরেও সিনিয়র রেসিডেন্ট পদে যোগ দিতে পারছেন না ৮৭১ জন চিকিৎসক-পড়ুয়া। কিন্তু এর নেপথ্যে আসল কারণ কী তাও স্পষ্ট করছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
আন্দোলনই নেপথ্যের কারণ!
তবে এই নিয়োগ সংক্রান্ত অভিযোগের পিছনে উঠে এল এক বিস্ফোরক কারণ। স্বাস্থ্য প্রশাসনের অন্দরে নানা জল্পনার মাঝেই শোনা গেল ওই চিকিৎসক-পড়ুয়াদের সিংহভাগই আর জি কর আন্দোলনের সঙ্গে নিযুক্ত ছিল, তাই তাঁদের প্রতি এমন অনীহা দেখাচ্ছে শীর্ষ স্তর। একপ্রকার প্রতিহিংসার পথেই হাঁটছে প্রশাসন। এই প্রসঙ্গে আরজি কর জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা অনিকেত মাহাতো জানিয়েছেন যে, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে অনুমোদন কেন মিলছে না তা জানতে স্বাস্থ্য ভবনে গেলেও স্পষ্ট কোনও উত্তর মিলছে না। এদিকে আবার ৮৭১ জনের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ আন্দোলনের সামনের সারিতে ছিলেন। সেই কারণেই প্রশাসনের এমন মনোভাব বলে আমরা মনে করছি।’’
আরও পড়ুন: আরও দেরিতে মিলতে পারে বকেয়া, DA মামলায় স্বস্তিতে রাজ্য সরকার
কী বলছেন স্বাস্থ্য সচিব?
আর এহেন পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই চিকিৎসক মহলে প্রশ্ন উঠছে রাজ্য প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে। একাংশ মনে করছে যে সুপ্রিম কোর্ট মামলা চলাকালীন স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছিল যে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে কোনও রকমের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে না। তার পরেও কেন ধীরে ধীরে ‘প্রতিহিংসা’র পথেই হাঁটছে রাজ্য প্রশাসন? যদিও স্বাস্থ্য দফতর এই অভিযোগ সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়েছে। এবিষয়ে স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম দাবি করেছেন, পোস্টিং স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। তিনি বলেন, “কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। খুব শীঘ্রই এবার সকলের পোস্টিংও দেওয়া হবে। এর মধ্যে অন্য কোনও জটিলতা নেই।” কিন্তু এই বিলম্ব এতদিন ধরে কেন ভুগতে হচ্ছে পড়ুয়াদের তার উত্তর পাওয়া যায়নি।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।