বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: মেট্রো লাইন রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতির দোহাই দিয়েই গত রবিবার বন্ধ রাখা হয়েছিল এসপ্ল্যানেড-হাওড়া ময়দান গ্রিন লাইন মেট্রো (Kolkata Metro) পরিষেবা! কিন্তু এর নেপথ্যে রয়েছে অন্য কারণ। বেশ কয়েকটি রিপোর্ট অনুযায়ী, মূলত মেট্রো রেলের বেশ কয়েকজন কর্মীর গাফিলতি ও অপেশাদারিত্বের কারণেই রবির সারাদিন চরম ভোগান্তি পোয়াতে হয়েছিল যাত্রীদের। সেই সাথেই, মেট্রো রেলের ওই কর্মীদের কীর্তিতেই কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে রেলের। কী ঘটিয়েছিলেন তাঁরা?
কর্মীদের বাহাদুরিতেই কোটি টাকার ক্ষতি হল মেট্রোর
বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম সূত্রে যা খবর, গত 27 এপ্রিল কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটির আধিকারিকরা এসপ্ল্যানেড থেকে শিয়ালদহ করিডোর অংশের পরিদর্শনের আগে হঠাৎ করেই কলকাতা মেট্রোর কর্মী ও অফিসাররা প্রস্তুতির কাজ দেখতে আসেন। মূলত 25 এপ্রিল এসপ্ল্যানেড স্টেশনে মহাকরণের দিকে 3 হাজার কেভিএ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফর্মার নেড়েচেড়ে দেখেছিলেন মেট্রোর বেশ কয়েকজন অফিসার থেকে শুরু করে ইঞ্জিনিয়াররা। সূত্রের খবর, ওই ট্রান্সফর্মারটির ওজন ছিল কমপক্ষে 10 টন।
সেই সাথেই ওই বিশালাকার বৈদ্যুতিক যন্ত্রটি 3 মিটার লম্বা ও 2 মিটার চওড়া ছিল। জানা যায়, ওদিন মেট্রো রেলের কয়েকজন অপেশাদার ও অপটু কর্মী বেশ কয়েকবার ওই ট্রান্সফর্মারটি অন-অফ করেন। আর তাতেই পুড়ে যায় ওই যন্ত্র। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, ওই ট্রান্সফর্মার নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কমপক্ষে 1 কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে রেলের। অনেকেই বলছেন মূলত সেই কারণেই, রবিবার গ্রিন লাইনের মেট্রো পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছিল।
যাত্রীদের করের টাকা খরচ করে কিনতে হয়েছে নতুন মেশিন
জানা যাচ্ছে, মেট্রোর ওই অপটুকর্মীদের গাফিলতি ও অপেশাদারিত্বের কারণে যাত্রীদের করের কোটি টাকা খরচ করে দীর্ঘ 22 দিন পর নতুন ট্রান্সফর্মার বসানো হয়েছে। তবে সাধারণ জনগণের কষ্টের অর্থ খরচ করে নতুন যন্ত্রাংশ বসানো গেলেও মেট্রোরেলের অপটুদের গাফিলতি ও অকর্মের কারণে ভোগান্তি পোয়াতে হয়েছে হাজার হাজার যাত্রীকে। রবিবার প্রয়োজনের তাগিদে স্টেশনে পৌঁছেও যথেষ্ট সমস্যায় পড়তে হয়েছে নিত্যযাত্রীদের একাংশকে, যা নিয়ে ইতিমধ্যেই ক্ষোভ জাহির করেছেন অনেকেই।
অবশ্যই পড়ুন: সাঁতরাগাছিতে সিগনাল বিভ্রাট, বাতিল একাধিক লোকাল-এক্সপ্রেস ট্রেন! হাওড়ায় নামল র্যাফ
মেট্রো কর্তার বড় বক্তব্য
সম্প্রতি মেট্রোর এক শীর্ষকর্তা জানিয়েছেন, ইস্ট-ওয়েস্ট রুট পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত দায়িত্বগুলি ঝেড়ে ফেলতে চাইছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। বিগত আড়াই বছর ধরে কেএমআরসিএল-র ঘাড়ে দায়িত্ব চাপিয়ে বেমালুম দায় ঝেড়েছেন মেট্রো কর্তারা।
যার জেরে ওই ট্রান্সফর্মারের মতো আরও অসংখ্য কোটি কোটি টাকার মূল্যবান যন্ত্র ও প্রযুক্তি নষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন স্টেশনে। ওই মেট্রো কর্তার আরও বক্তব্য, গত 28 এপ্রিল এসপ্ল্যানেড থেকে শিয়ালদহ রুটে যাত্রী পরিষেবার জন্য প্রয়োজনীয় সিআরএস পাওয়া গেলেও কিছু অজানা কারণে চালু করা যাচ্ছে না, যার ফলে প্রতিদিন অন্তত 20 লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়ে চলছে।