বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: স্থলপথে বাংলাদেশ থেকে বেশ কিছু পণ্য (Bangladeshi Products) আমদানি নিষিদ্ধ করেছে ভারত। যার জেরে ওপার বাংলার ব্যবসায়ীরা যে ক্ষতির মুখে পড়বে একথা বলাই যায়। তবে দিল্লির এই কঠোর নীতির ঠিক বিপরীত প্রান্তে লাভের মুখ দেখবে দেশীয় বস্ত্রশিল্প।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশ থেকে স্থলপথে পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ হওয়ায় এক দুই কোটি নয়, একেবারে 10 হাজার কোটির মুনাফা অর্জন করার সুযোগ রয়েছে দেশীয় বস্ত্রশিল্পে। বেশ কয়েকটি রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে সড়কপথে বাণিজ্য আপাতত বন্ধ হওয়ায় লাভের বড় সুযোগ পেয়ে গেছেন দেশীয় বস্ত্র শিল্পের সঙ্গে যুক্ত পোশাক প্রস্তুতকারক সংস্থা থেকে শুরু করে কর্মীরা।
শনিবারই শনির প্রকোপে পড়েছিল বাংলাদেশে
গত শনিবার স্থলপথে বাংলাদেশ থেকে পোশাক সহ ও দেশের অন্যান্য পণ্যগুলি আপাতত নিষিদ্ধ করে দেয় বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদপ্তর ডিজিএফটি। আর এর পরই নতুন করে লাভের আশায় দিন গুণছেন দেশীয় বস্ত্রকল মালিকরা। বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, বাংলাদেশ থেকে শুল্কমুক্ত বস্ত্র বা পোশাক আমদানি বৃদ্ধির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে দেশীয় বস্ত্র উৎপাদনকারীরা এগিয়ে এলে তাতে লাভ হবে এ দেশেরই।
বিরাট সুযোগ রয়েছে দেশীয় বস্ত্র উৎপাদনকারীদের
বাংলাদেশের সাথে স্থলপথে বাণিজ্য বন্ধের পাশাপাশি ওদেশের বিভিন্ন পণ্য প্রত্যাখ্যান করার পক্ষে পা বাড়িয়েছেন অনেকেই। সাধারণত এতদিন বাংলাদেশ থেকে অল্প দামে আমদানিকৃত পণ্যের কারণে দেশের বস্ত্র উৎপাদনকারকরা চাহিদার যোগান দিতে পিছিয়ে গিয়েছিলেন। তবে বাংলাদেশের সাথে স্থলপথে বাণিজ্য আপাতত বন্ধ হওয়ায় এবার সেই সুযোগ রয়েছে স্বদেশীদের কাছে।
এ প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান চেম্বার অফ কমার্সের ন্যাশনাল টেক্সটাইল কমিটির চেয়ারম্যান সঞ্জয় কে জৈন বলেছেন, এতদিন বাংলাদেশ থেকে অন্তত 6 হাজার কোটি টাকার পোশাক আমদানি করত ভারত। তবে কেন্দ্রের সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞার পর সেই আমদানির পরিমাণ ধীরে ধীরে কমে আসবে, এবং সেই পথ ধরেই 1000 থেকে 2000 কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য বাংলাদেশি পণ্যের জায়গা দখল করতে পারে।
জৈন বলেন, বর্তমানে দেশের বস্ত্র উৎপাদনকারকদের কাছে বড় সুযোগ রয়েছে। তাছাড়াও সাম্প্রতিক নীতির ফলে শুল্ক ছাড়া ঘুর পথে চিনা তন্তু বাংলাদেশে রূপান্তরিত হয়ে ভারতে প্রবেশের রাস্তাও বন্ধ পাবে। এতদিন পর্যন্ত যেখানে 20 শতাংশ শুল্ক ছাড়াই বাংলাদেশের মাধ্যমে ঘুর পথে ভারতে আসত চিনা কাপড় ও তন্তু, এবার সেই রাস্তা বন্ধ হচ্ছে।
অবশ্যই পড়ুন: মাত্র ৩৪০ টাকায় হবে কাজ, বারবার দিতে হবে না টোল, জানুন কীভাবে নেবেন সুবিধা
সমস্যাও রয়েছে
দেশীয় ইন্ডাস্ট্রি বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের পোশাক পণ্য আমদানি আপাতত বন্ধ হওয়ায় দেশীয় চাহিদা অনুযায়ী সেই যোগান দিতে কিছুটা সমস্যা হতে পারে। তৈরি হতে পারে পণ্যের ঘাটতিও। সেই সাথেই দেশীয় অ্যাপারেল ব্র্যান্ডগুলি যেখানে 20 শতাংশ পণ্যই আমদানি করত, এবার বাংলাদেশি পণ্য আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মুনাফা অর্জনের সুযোগ থাকলেও বিভিন্ন টি-শার্ট, শার্ট ও ডেনিমের ক্ষেত্রে দাম বেশ কিছুটা বাড়তে পারে।