প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ফিরে এসেছে শান্তি, অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আছে ভারত পাক সীমান্তে যুদ্ধের আবহ। আর সেই পরিস্থিতি মাথায় রেখেই এবার রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ছুটির ওপর থেকে বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের (Leave Cancellation Request) জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুখ্য সচিবের কাছে আবেদন জানাল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। গত ৭ মে মাঝরাতে অপারেশন সিঁদুর অভিযানের মাধ্যমে পাক অধিকৃত কাশ্মীর ও পাকিস্তানের ৯টি জায়গায় প্রত্যাঘাত করেছিল ভারতীয় সেনা।
খতম হয়েছিল শতাধিক জেহাদি। আর এই অভিযানে নষ্ট হয়েছে জইশ-ই-মহম্মদ, লস্কর-ই-তইবার মতো জঙ্গিগোষ্ঠীর একাধিক ঘাঁটি। আশঙ্কা করা হচ্ছিল অপারেশন সিঁদুরের প্রতিবাদ করতে এরপর ইসলামাবাদ পাল্টা আক্রমণ করতে পারে, তাই দেশ জুড়ে তৈরি হয়েছিল যুদ্ধ পরিস্থিতি।
বাতিল করা হয়েছে কর্মীদের ছুটি!
আর সেই পরিস্থিতিতে সমস্ত রাজ্য সরকারি কর্মীদের ছুটি বাতিল ঘোষণা করেছিল নবান্ন। নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল কর্মীদের শারীরিক অসুস্থতার ক্ষেত্রে ছুটির ছাড় মিলবে। তবে সেক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। যা নিয়ে মহা শোরগোল পড়ে গিয়েছিল রাজ্য জুড়ে। এছাড়াও কর্মীদের ছুটি প্রসঙ্গে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। সেই বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট জানানো হয়েছিল এই মুহূর্তে কোন সরকারি কর্মী যেন ছুটি না নেয় এবং নিজের এলাকা ছেড়ে কোথাও যেন না যায়। এদিকে এই নোটিস পাওয়া মাত্রই সকলের মনে ভয়ের তীব্রতা আরও বেড়ে গিয়েছিল।
নবান্নে চিঠি সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের
এদিকে হঠাৎ করে কর্মীদের এই ছুটি বাতিল হয়ে যাওয়ার কারণে অনেকের যেমন ভ্রমণ পরিকল্পনায় বাধা পড়েছিল ঠিক তেমনি আবার অনেকে কাজের সূত্রে বাইরে থাকার কারণে ফিরতে পারেনি নিজের বাড়িতে। তবে পরিস্থিতি এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। ভারত পাক সীমান্তে এইমুহূর্তে কোনো অশান্তির আবহ তৈরী হয়নি। তাই সরকারি কর্মচারীদের ছুটির ওপর থেকে বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের জন্য এবার পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুখ্য সচিবের কাছে আবেদন জানাল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ।
কী বলা হয়েছে চিঠিতে?
এদিন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক শ্রী অনিরুদ্ধ ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত একটি চিঠির মাধ্যমে আবেদন জানানো হয়েছে যে, গত ৭ মে, ২০২৫ তারিখের সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির কারণে শুধুমাত্র চিকিৎসার কারণ ছাড়া এবং বিভাগীয় প্রধানের অনুমতি ছাড়া কর্মীদের সদর দপ্তর ত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। তবে বর্তমানে সেই যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির অবসান ঘটেছে এবং শান্তি ফিরে এসেছে। তাই সেক্ষেত্রে যদি সরকার কর্মীদের ছুটি সংক্রান্ত বিধিনিষেধ মুকুব করে তাহলে সকলের সুবিধা হবে।
আরও পড়ুন: কলকাতার পর এবার গঙ্গাসাগরের আকাশে রহস্যময়ী ড্রোন! উদ্বিগ্ন গোয়েন্দারা
পুরোনো বিজ্ঞপ্তি বাতিল কেন্দ্রের
চিঠিতে সংগঠনের তরফে আরও জানানো হয়েছে যে, গ্রীষ্মকালীন ছুটি শুরু হওয়ায় এবং বিদ্যালয়গুলি বন্ধ থাকায় কর্মচারীদের ভ্রমণের পরিকল্পনা করার এটাই উপযুক্ত সময়। এমনকি অন্য জেলায় কর্মরত বহু সরকারি কর্মচারী রাজ্য সরকারের নির্দেশে তাদের পরিবারের থেকে দূরে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন তাই সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের এই বিধিনিষেধ তুলে নিয়ে কর্মচারীদের প্রাপ্য ছুটি মঞ্জুর করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। এদিকে জানা গিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারও ১৪ মে ছুটি বাতিল সংক্রান্ত একটি পুরোনো নির্দেশ বাতিল করে কর্মীদের আগের মতোই ছুটি নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে।
এখন দেখার বিষয় রাজ্য সরকার, সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের এই আবেদনে সাড়া দিয়ে সরকারি কর্মচারীদের ছুটির ওপর থেকে বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে কিনা। তবে আশা করা যাচ্ছে রাজ্য সরকার যদি এই আবেদনে সবুজ সংকেত দিয়ে থাকে তাহলে রাজ্যের বহু সরকারি কর্মচারী এবং তাদের পরিবারের বেশ সুবিধা হবে।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।