প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: এখনও জারি রয়েছে আন্দোলন। পশ্চিমবঙ্গের এসএসসি (SSC) শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে যাঁরা চাকরি হারিয়েছেন, তাঁরা এখনও নিজেদের হকের দাবি বুঝে নিতে লড়াই করে চলেছেন। এদিকে রবিবার সকালে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর অফিসে চাকরিহারাদের পাঁচ জন প্রতিনিধি তাঁদের সাত দফা দাবিপত্র পেশ করেছেন। আন্দোলনকারী পক্ষ সরকারের প্রতি একটি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে আজকের মধ্যে আলোচনায় না বসলে তারা আন্দোলনের পথ আরও কঠোর করবে।
চিঠি নিয়ে একাধিক প্রশ্ন ব্রাত্যের!
গতকাল যে চিঠি রাজ্য সরকারকে দেওয়া হয়েছিল চাকরিহারাদের তরফ থেকে সেই চিঠির ফরম্যাট নিয়ে উঠল প্রশ্ন। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানান, সরকার চিঠি পেয়েছে। কিন্তু তিনি এই চিঠির ভিত্তিতেই প্রশ্ন তুলে বলেন যে, “চিঠিতে কেন তারা সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চায়, তার কোনো উল্লেখ নেই।” এখানেই থেমে থাকেননি শিক্ষামন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, “আমাদের দফতর থেকে ওদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। তবে সঠিক ফরম্যাটে চিঠি চাই আমরা।” এদিকে প্রথম থেকেই এই আন্দোলনকে বিভাজনের চেষ্টা রূপে দাগিয়ে আসছেন ব্রাত্য বসু।
তিন পক্ষের প্রতি সহানুভূতিশীল রাজ্য
রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু মনে করছেন যে, “চাকরিহারাদের মধ্যে এখন তিনটি ভিন্ন পক্ষ তৈরি হয়েছে। এক দল শিক্ষক আমায় চিঠি লিখেছেন। ওঁরা আন্দোলন করছেন। আর একটি দলে আড়াই থেকে তিন হাজার জন শিক্ষক সরকারের উপরে সম্পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। এবং আরেক দল কোনও আন্দোলনেই নেই, তাঁরা সরকারের উপরে ভরসা রাখছেন। তবে আমরা প্রতিটি পক্ষের প্রতিই সহানুভূতিশীল। শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত লড়ব।” এছাড়াও রাজ্যের করা রিভিউ পিটিশন নিয়েও উঠেছে একাধিক প্রশ্ন। এবার সে বিষয়ে মুখ খুললেন ব্রাত্য বসু।
রিভিউ পিটিশন নিয়ে মন্তব্য ব্রাত্যের
গত শনি এবং রবিবার, চাকরিহারাদের একটি দল আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে গিয়েছেন রাজ্যের করা রিভিউ পিটিশন সংক্রান্ত কিছু তথ্য জানার জন্য। কিন্তু তাঁদের স্পষ্ট দাবি, রাজ্যের রিভিউ পিটিশন করে কোনও লাভ হবে না। তবে সেক্ষেত্রে উল্টো সুর শোনা গেল ব্রাত্যের গলায়। তিনি বলেন ‘‘রিভিউ পিটিশনের কোনও ফল নেই? নতুন পরীক্ষাটাও কি ওঁরা বাতিল করতে চান? নেতিবাচক কথা আন্দোলনকারীদের মাথায় ঢোকানো হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর উপরে ভরসা রাখুন।’’
আরও পড়ুন: ছুটিতেও মিলবে টাকা, প্রকল্পের অনুমোদন এবার মোবাইল অ্যাপে, বড় সিদ্ধান্ত নবান্নর
এদিকে চাকরিহারাদের তরফে প্রতিনিধি চিন্ময় মণ্ডল বলেন, “আমাদের সরকারের কাছে দাবি, আলোচনায় বসুক। আমরা দু’বার চিঠি দিয়ে সেকথা জানিয়েছি। যোগ্যদের পরীক্ষা না নিয়ে কীভাবে চাকরিতে পুনর্বহালের ব্যবস্থা করা যায়, সেটাই সরকারকে ভাবতে হবে।” এছাড়াও জানা গিয়েছে আজ তাঁরা হাতে লেখা একটি চিঠি বিকাশ ভবনে গিয়ে জমা দিয়ে আসবেন। যেখানে বলা থাকবে সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশন যাতে গ্রহণ করা হয় এবং দরকারি আইনি তথ্য দিয়ে আমাদের প্যানেল বহাল রাখা হয়। এমনকি তাঁরা এও স্পষ্ট করবেন যে তাঁদের সংগঠনের কোনও রাজনৈতিক যোগ নেই।
প্রসঙ্গত, হাইকোর্ট চাকরিহারাদের নির্দেশ দিয়েছে, তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যেতে পারেন, তবে তাঁদের বিকাশ ভবনের সামনে নয়, সেন্ট্রাল পার্কের সুইমিং পুলের সামনে বসার নিদান দেওয়া হয়েছে। তাই ইতিমধ্যেই সেখানে চলছে মঞ্চ বাঁধার কাজ। তবে চাকরিহারারা এটাও স্পষ্ট করেছেন যে প্রশাসন তাঁদের মতো ব্যবস্থাপনা করুক। যদি মনে হয়, ওখানে থেকে আন্দোলনটা পরিচালনা করা সম্ভব, তাহলে অবশ্যই যাবেন তাঁরা। কিন্তু আন্দোলন তাঁদের কিছুতেই থামবে না। রবিবার অবশ্য রাস্তার ধারে সরে গিয়ে আন্দোলনকারীরা বিকাশ ভবনের সামনের রাজপথ ছেড়ে দেন। ফলে সেই রাস্তায় গাড়ি এখন স্বাভাবিকভাবেই চলেছে।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |