বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: আরব সাগরে আরও শক্তি বৃদ্ধি করেছে নিম্নচাপ। আবহাওয়াবিদদের দাবি, সাগরের সিস্টেমটি ইতিমধ্যেই গভীর নিম্নচাপ হিসেবে স্থলভাগে প্রবেশ করেছে। মূলত পর্যাপ্ত জলীয় বাষ্প নিয়েই আরও 2 দিন পশ্চিমের একাধিক রাজ্যে বৃষ্টির তাণ্ডব চালাবে এই নিম্নচাপ।
জানা যাচ্ছে, নিম্নচাপের ওই সিস্টেম থেকে যতটা জলীয় বাষ্প বঙ্গোপসাগরের দিকে আসার কথা ছিল ততটা আসেনি। কাজেই বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া জলীয় বাষ্পের ওপর নির্ভর করেই আগামীকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার তৈরি হবে আরও গভীর নিম্নচাপ, আন্তর্জাতিক আবহাওয়া মডেল ও আবহাওয়া বিজ্ঞানীদের আপাতত তেমনটাই মত।
সক্রিয় হচ্ছে মৌসুমী বায়ু
আন্তর্জাতিক আবহাওয়া মডেল অনুযায়ী, আরব সাগরে তৈরি হওয়ার সিস্টেম থেকে প্রাপ্য জলীয়বাষ্প বঙ্গোপসাগরের দিকে আসেনি, যার ফলে মঙ্গলবার বঙ্গোপসাগরে তৈরি হতে চলা নিম্নচাপকে আপাতত নির্ভর করতে হচ্ছে বঙ্গোপসাগরের জলীয় বাষ্পের ওপরই। রিপোর্ট অনুযায়ী, বঙ্গোপসাগরে উপস্থিত জলীয় বাষ্পের উপর ভর করে নিম্নচাপ তৈরির পাশাপাশি বর্তমানে সেখানে অত্যন্ত সক্রিয় অবস্থায় রয়েছে মৌসুমী বায়ু। ফলত, চিন্তা বাড়ছে ঘূর্ণিঝড় (Cyclone Shakti) নিয়ে।
ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা কতটা?
আবহাওয়া বিজ্ঞানীদের দাবি, বঙ্গোপসাগরে এই মুহূর্তে তৈরি মৌসুমী বায়ু থেকে জলীয় বাষ্প পর্যাপ্ত পরিমাণে টেনে নিলেও আদতে আরব সাগরের ওই সিস্টেমটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তাঁদের একাংশের দাবি, শেষ পর্যন্ত ওই সিস্টেম গভীর নিম্নচাপ অথবা লঘুচাপ হিসেবে স্থলভাগে প্রবেশ করা সম্ভবনা থাকছে। যদিও, আগামীকাল অমাবস্যার বিষয়টিকে মাথায় রেখে অনেকেই বলছেন, মঙ্গলবার নিজের শক্তি বৃদ্ধি করতে পারে ওই নিম্নচাপ।
পশ্চিমবঙ্গে এর প্রভাব কতটা?
আন্তর্জাতিক আবহাওয়া মডেল ও বিজ্ঞানীদের বেশিরভাগেরই দাবি, মঙ্গলবার অমাবস্যার কারণে লো প্রেসারকে কাজে লাগিয়ে শেষ পর্যন্ত নিম্নচাপটি গভীর শক্তি সঞ্চয় করবে। যার জেরে পরের দিন অর্থাৎ বুধবার ও বৃহস্পতিবার এটি তার শক্তি আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে ফেলবে বলেই আশঙ্কা। যা জানা যাচ্ছে, প্রাথমিক পর্যায়ে এটি শক্তি বৃদ্ধি করে উত্তর- পশ্চিম অর্থাৎ ওড়িশার ভদ্রকের দিকে প্রবেশ করবে।
তবে বিশেষজ্ঞদের দাবি, গভীর নিম্নচাপ শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে এটি একাধিকবার নিজের গতিপথ বদলাতে পারে। তবে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের মংলা এবং ক্ষেপুপাড়ার দিকে এর গন্তব্য হবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল। তাছাড়াও, এটি তার গতিপথে পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপ, ডায়মন্ড হারবার ও কাকদ্বীপকেও সমানভাবে অতিক্রম করবে।
জানা যাচ্ছে, দক্ষিণবঙ্গের উপকূলীয় এলাকা বিশেষত দক্ষিণ 24 পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকায় আগামী 30 মে পর্যন্ত সমুদ্র উত্তাল থাকতে পারে। তাছাড়াও বৃষ্টির সম্ভাবনা নিরিখে হিসেবের তালিকায় রয়েছে দক্ষিণ 24 পরগনা, হাওড়া, কলকাতা, উত্তর 24 পরগনা, হুগলি, ঝাড়গ্রাম ও পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকা। যেখানে হালকা থেকে ভারী বা অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
অবশ্যই পড়ুন: মোহনবাগান ধনী, গরিব বলে ব্যর্থ ইস্টবেঙ্গল! মশাল প্রাক্তনীর বিস্ফোরক মন্তব্য ঘিরে তুলকালাম
ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ
আবহাওয়া বিজ্ঞানীদের দাবি, সিস্টেমটি শেষ পর্যন্ত গভীর নিম্নচাপটিকে ঘূর্ণিঝড় শক্তিতে পরিণত করলে দক্ষিণ বঙ্গের উপকূল এলাকায় 50 থেকে 70 কিলোমিটার বেগে, আবার কোনও কোনও এলাকায় 90 কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। এছাড়াও দক্ষিণবঙ্গের তালিকাভুক্ত অন্যান্য জেলাগুলিতে 35 থেকে 55 কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আশঙ্কা থাকছে। বলা বাহুল্য, উপকূল সংলগ্ন নিচু এলাকাগুলি জলমগ্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়াও কাঁচা বাঁধগুলির ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন অনেকেই।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |