প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত কয়েকদিন ধরেই খবরের শিরোনামে উঠে আসছে অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal) ও কাজল শেখের তরজা। বারংবার কারোর নাম না করে একে অপরকে নিশানা করে চলেছেন এই দুই দাপুটে নেতা। যত দিন যাচ্ছে দলের অন্দরে এই দুই নেতার ক্ষোভ যেন আরও বাড়ছে। আর এই আবহে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে ফের কাজল শেখকে নিশানা করলেন অনুব্রত মণ্ডল। জানিয়ে দিলেন রাখাল-বাগালরা কে কী বলল তাতে আমার কিচ্ছু যায় আসে না।
কেষ্টর প্রশংসায় পঞ্চমুখ ব্রাত্য!
সূত্রের খবর, গতকাল অর্থাৎ বুধবার, বোলপুর গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহে তৃণমূল শিক্ষক সংগঠনের তরফে মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিকে কৃতি পড়ুয়াদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে অনুব্রত মণ্ডল ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, কৃষি-বিপণনমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ প্রমুখ। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অনুব্রত মণ্ডলের নামে প্রশংসায় পঞ্চমুখ তিনি। এদিন ব্রাত্য বসু বলেন, “এই গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহেই আমি অনুব্রত মণ্ডলের উপরে লেখা ‘খেলা হবে’ বইটির উন্মোচন অনুষ্ঠানে এসেছিলাম ৷ এই বই পড়েই আমি জানতে পেরেছিলাম অনুব্রত মণ্ডলের উত্থান বীরভূম জেলার রাজনৈতিক শ্রেণীবিন্যাস প্রভৃতি ।
রাজনৈতিক জীবন নিয়ে স্পষ্ট অনুব্রত
এরপরেই অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে সামনাসামনি কথা বলার সুযোগ পান সাংবাদিকরা। তখনই তাঁকে বীরভূমের রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়। সেই প্রশ্নে অনুব্রত মণ্ডল বলেন, “তিনদিনের কর্মসূচিতে কর্মীরা চাঙ্গা হয়েছে। এখন ফুল ফেজে কাজ করতে শুরু করল৷ আমি, মন্ত্রী, বিকাশ দা, সুদীপ্ত ঘোষ, গগন সরকার আলোচনা করেই কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।”
এরপরেই রাজনৈতিক জীবনের প্রসঙ্গ তুলে অনুব্রত মণ্ডল বলেন, “ আমি ৭৭ সাল থেকে দল করছি। গাই-বাছুরে ভোট করেছি৷ আমার প্রতিজ্ঞা ছিল সিপিআইএমকে তাড়াব, তাড়িয়েছি। তখন আমাদের সঙ্গে কেউ ছিল না৷ তাই কে কী বলল কিছু যায় আসে না৷”
বিস্ফোরক মন্তব্য কেষ্ট-র
তবে এখানেই চুপ থাকেননি বীরভূমের কেষ্ট ওরফে অনুব্রত মণ্ডল। তিনি মিডিয়ার সামনেই বলে বসলেন, “ দলে অনেক রাখাল-বাগাল আছে কী আর বলব। কে কী বলছে, তাতে কিছু হয় না। কেউ কিছু বলতেই পারে কারণ রাজনীতি কারও বাপের নয়, রাজনীতি সবার জন্য ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংগঠন করতে জানে।” অর্থাৎ এদিন যে কেষ্ট নাম না করেই কাজল শেখকে টার্গেট করে মন্তব্যগুলি করেছিল তা জানতে কারোর বাকি নেই। কারণ বীরভূমে অনুব্রতের সঙ্গে কাজলের ‘মধুর’ সম্পর্কের কথা কারও অজানা নয়।
আরও পড়ুন: বর্ষায় আর যাত্রী দুর্ভোগ নয়, রেল পরিষেবা মসৃণ করতে ১২টি বড় পদক্ষেপ শিয়ালদা ডিভিশনে
প্রসঙ্গত ২০২২ সালে গরুপাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে বীরভূমে কোর কমিটি গড়ে দিয়েছিলেন। তাতে রাখা হয়েছিল কাজল শেখকে। এতদিন অনুব্রত মণ্ডল না থাকায় এই কোর কমিটি সামলে ছিল গোটা জেলাকে। কিন্তু জেল থেকে ফেরার পরেই অনুব্রত মণ্ডল কোর কমিটিকে এড়িয়ে কাজ করছিলেন। যার ফলে দলের অন্দরে একাংশের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। আর এই বিতর্কের মাঝেই ‘পদ’ কেড়ে নেওয়া হয় অনুব্রতের। আর এর পরেই গতকালের কেষ্টর এই মন্তব্য নতুন করে বিতর্ক তৈরি করল।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।