প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: দীর্ঘ আন্দোলনের চাপে বাড়ছিল মানসিক চাপ। সুরাহা মিলছিল না কোনো জায়গাতেই। আদেও কি মিলবে চাকরি। ফিরে পাবে কি হারিয়ে যাওয়া সেই যোগ্য সন্মান? এত প্রশ্নের ভিড়েই এবার না ফেরার দেশে চলে গেলেন রঘুনাথগঞ্জের ২০১৬ সালের এসএসসি (SSC) আন্দোলনকারী এক চাকরিহারা শিক্ষক। আজ সকালেই ব্রেন স্ট্রোকে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। তীব্র মানসিক চাপ নিয়েই সরকারের কাছে রেখে গেলেন একাধিক প্রশ্ন।
ঘটনাটি কী?
জানা গিয়েছে, বছর ৩৪ এর প্রবীণ কর্মকার ছিলেন জিয়াগঞ্জের আমাইপাড়া উদ্বাস্তু বিদ্যাপীঠ হাইস্কুলে শিক্ষক। ২০১৬ সালের এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে এই স্কুলে চাকরি পেয়েছিলেন। কিন্তু গত ৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের রায়ে সেই প্যানেল বাতিল হয়ে যাওয়ায় বাকি শিক্ষকদের মতই তাঁরও চাকরি চলে যায়। ঝুপ করে নেমে আসে অন্ধকার তাঁর জীবনে। বেশ কয়েকদিন ধরেই নাকি তীব্র মানসিক চাপের মধ্যে ছিলেন প্রবীণ। বুধবার থেকে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। আজ সকালেই ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর।
মৃত্যু শোকে কাতর আন্দোলনকারীরা
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই প্রবীণ কর্মকার কিডনির অসুখে ভুগছিলেন। এরপর সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি হারানোর পরে চরম উদ্বেগে অসুস্থতা আরও বেড়ে যায়। মাঝে তিনিও ১৯ হাজার শিক্ষকের মতো আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি অসুস্থতা চরম আকার নেয়। যার দরুন আজ সকালে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে।
কিন্তু হাসপাতাল থেকে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। এদিকে এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই আন্দোলনকারীদের তরফ থেকে একটি পোস্ট করা হয়েছে। সেই পোস্টে জানানো হয়, “এখনও সরকারকে সহানুভূতিশীল হতে হবে, নাহলে চাকরিহারা শিক্ষক শিক্ষিকাদের লাশের স্তূপে পরিণত হবে বাংলা।
আরও পড়ুন: বর্ষায় আর যাত্রী দুর্ভোগ নয়, রেল পরিষেবা মসৃণ করতে ১২টি বড় পদক্ষেপ শিয়ালদা ডিভিশনে
গত মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতেই হবে রাজ্যকে। তাতে নতুন করে পরীক্ষা দেওয়ার চাপ বেড়েছে চাকরিহারাদের। এতদিন শিক্ষকতা করার পর নতুন করে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করতে চাইছেন না তাঁরা। এই সব নিয়ে আন্দোলন আরও তীব্রতর হয়েছে। তার মধ্যেই প্রবীণের মৃত্যু চাকরিহারাদের কাছে আরও বেশি ধাক্কা দিয়েছে।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।