সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: কাজ শেষ, অথচ পারিশ্রমিকের নামগন্ধ নেই! হ্যাঁ, এমনই এক ঘটনার সাক্ষী থাকলো কানপুর মেট্রো প্রকল্প (Kanpur Metro Project)। সূত্রের খবর, তুরস্কের এক বিশিষ্ট নির্মাণসংস্থা গুলেরমাক কাজ শেষ করার পর হঠাৎ 80 কোটি টাকা বকেয়া রেখেই লোটাপত্র গুটিয়ে উধাও হয়ে গিয়েছে। ফলে একদিকে টাকার জন্য যেমন সাব-কন্ট্রাক্টরদের পথে বসার জোগাড় হয়েছে, অন্যদিকে মেট্রো কর্তৃপক্ষের মাথায় হাত পড়েছে।
ঘটনাটি কী ঘটেছে?
যখন পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে উত্তপ্ত, তখন তুরস্ক সন্ত্রাসের দেশের পাশে দাঁড়িয়েছিল। আর ঠিক সেই সময় ঘটলো বিস্ময়কর ঘটনা! আসলে কূটনৈতিক স্তরে ভারত তুরস্কের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক কিছু কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে। ঠিক তখনই কানপুর মেট্রো প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত তুরস্কের এই সংস্থা হঠাৎ করে এই বিপুল পরিমাণে টাকা বকেয়া রেখে চম্পট দিয়েছে।
আসল অভিযোগ কী?
সূত্রের খবর, গুলেরমাক সংস্থাটি ভারতের স্যাম ইন্ডিয়া নামের একটি সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে কানপুর মেট্রো প্রকল্পের কাজ করছিল। কাজের সময়ে তাদের মোট 53 টি সাবলেট সংস্থা কন্ট্রাক্টে ছিল, যারা বিভিন্ন পরিকাঠামো নির্মাণে অংশ নেয়। তবে অভিযোগ উঠছে যে, গত 10 মাসে তাদের এক টাকাও পরিশোধ করা হয়নি।
এমনকি ফোন বা মেসেজ করে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও গুলেরমাক কর্তৃপক্ষ কোনও সদুত্তর দেয়নি। এমতাবস্থায় নয়জন সাব-কন্ট্রাক্টরদ জেলা শাসকের দপ্তরে গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাদের দাবি যে, গুলেরমাক কাজ শেষ করে টাকা মেটাচ্ছে না। অথচ মেট্রো কর্তৃপক্ষ তাদের পুরো টাকা দিয়ে দিয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ঘনিয়ে আসছে ট্রাম্পের সময়? বিরাট বার্তা দিয়ে ডোনাল্ডের প্রশাসন থেকে পদত্যাগ মাস্কের
কাদের কত টাকা বাকি?
যেমনটা অভিযোগ আসছে, মেট্রো মার্বেল সংস্থার 3 কোটি 70 লক্ষ টাকা এখনও বাকি রয়েছে। এমনকি রেডিয়েন্ট সার্ভিসেস সহ একাধিক সংস্থা অভিযোগ আনছে বকেয়া টাকার। হিসাব অনুযায়ী, এই পুরো বকেয়া টাকার পরিমাণ প্রায় 80 কোটি ছাড়িয়ে যাচ্ছে। ফলে বহু শ্রমিক ও কর্মচারীর এখন কপাল চাপড়ানো ছাড়া কোনও উপায় নেই।
এ বিষয়ে মেট্রো কর্তৃপক্ষের এক আধিকারিক পঞ্চানন মিশ্র জানিয়েছেন, গুলেরমাক সংস্থাটি স্যাম ইন্ডিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে কানপুরের 1 নম্বর করিডরের চারটি স্টেশনে কাজ করেছিল। তারা কাজ শেষ করার পর মেট্রো কর্তৃপক্ষ তাদের সম্পূর্ণ টাকা মিটিয়ে দিয়েছে। তবুও চুক্তি অনুযায়ী 5% অর্থ সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে, যা এক বছর পরে দেওয়া হবে। যদি গুলেরমাক তাদের টাকা না দেয়, তাহলে সেই টাকা মেট্রো কর্তৃপক্ষকে দিতে হতে পারে।