সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: বিরাট ধাক্কা খেলো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump)। বিশ্বের রাজনীতি আর অর্থনীতির রসায়ন যে কতটা জটিল হতে পারে, তা হাতেনাতে টের পেল ট্রাম্প। নিজের প্রেসিডেন্ট পদে থাকার সময় একতরফাভাব চালু করা শুল্কনীতির জেরে এবার বিরাট ধাক্কা খেলো মার্কিন আদালত। তব এই ধাক্কার জেরে সরাসরি প্রভাব পড়ছে ভারতের শেয়ার বাজারে। ফলে হঠাৎ করে দেখা যাচ্ছে বিনিয়োগের ঝড়।
আসলে কী ঘটেছে?
সম্প্রতি এক রিপোর্ট বলছে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প তার সীমা অতিক্রম করে ফেলেছে। তিনি যে নতুন শুল্কনীতি চালু করেছিলেন, তা আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই। অর্থাৎ, মার্কিন কংগ্রেস কোনও আলোচনা ছাড়াই একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিল।
আদালত মনে করছে, 1977 সালের ইন্টারন্যাশনাল ইমারজেন্সি ইকোনমি পাওয়ার অ্যাক্ট আইন অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট শুধুমাত্র জরুরি অবস্থাতেই অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে। তবে অন্যান্য দেশের উপর শুল্ক আরোপ করার কোনও ক্ষমতা তার হাতে নেই। কিন্তু ট্রাম্প সেই সীমা অতিক্রম করে ফেলেছিল।
ভারতের শেয়ারবাজারে আচমকা চাঙ্গা ভাব
তবে এই রায়ের পর বৃহস্পতিবার ভারতের শেয়ারবাজারে বিরাট ধাক্কা লাগলো। দিনের শুরুতেই দেখা গিয়েছে সেন্সেক্স লাফিয়ে 500 পয়েন্টের বেশি উঠে গিয়েছে। এমনকি নিফটির গতিও বেশ চোখে পড়ার মতো। যখন বাজার এমনিতেই টানাপোড়ন চলছিল, তখন এই এক রায় যেন বিনিয়োগকারীদের মনে আবারও হাসি ফোটাল।
বেশ কিছু শেয়ার বাজার বিশেষজ্ঞ মনে করছে, ট্রাম্পের এই একতরফা শুল্কনীতির অবসান ঘটিয়ে ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে স্থিতিশীলতা আসবে। আর এর প্রভাব পড়বে ভারতের শেয়ার বাজারে।
বর্তমানে বিনিয়োগকারীদের মনোভাব
এদিন বাজার খুলতেই বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগের ঝড় তুলে দেয়। দীর্ঘদিন ধরেই আন্তর্জাতিক শুল্কনীতি নিয়ে ধোঁয়াশা থাকার ফলে বিনিয়োগে একপ্রকার অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছিল। আর আদালতের এই এক রায় অনেকের কাছেই ভবিষ্যতের বাজারকে নিরাপদ বলে মনে করাচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ ২০০, ৫০০-র নোট নিয়ে বিরাট সতর্কতা RBI-র, আপনার কাছে থাকলে কি করতে হবে জানুন
প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, 2024 সালের 2 এপ্রিল ট্রাম্প প্রশাসন ঘোষণা করেছি, যে দেশ আমেরিকার পণ্যের উপর যতটা শুল্ক চাপাবে, ঠিক ততটাই আমেরিকা তাদের পণ্যের উপর চাপিয়ে দেবে। ফলে ভারত-চীন সহ একাধিক দেশের উপর এই শুল্কনীতি আরোপ হয়েছিল। ভারত সেক্ষেত্রে প্রায় 26 শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক গোনার কবলে পড়েছিল। যদিও পরে এটি 90 দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছিল।
তবে এখন সবথেকে বড় প্রশ্ন উঠছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প এই রায়ের বিরুদ্ধে আবার আপিল করবেন কিনা। যদি আপিল করে থাকেন, তাহলে আবারও বিষয়টি দীর্ঘস্থায়ী আইনের জটিলতায় জড়াতে পারে। তখন দেখার ভারতের শেয়ার বাজার কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে।