সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: পবিত্র ঈদুল আজহার আগেই দেশের অর্থনীতিতে বিরাট চমক। হ্যাঁ, মে মাসে ওপার বাংলায় রেকর্ড পরিমানের রেমিট্যান্স (Remittance) এসেছে, যা সংখ্যায় দাঁড়াচ্ছে প্রায় 2.97 বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশী মুদ্রায় মূল্য প্রায় 36,234 কোটি টাকা। কিন্তু কেন এত রেমিট্যান্স আসলো? বিগত বছরগুলোর কী পারফরম্যান্স? সবটা জেনে নিন আজকের প্রতিবেদনে।
দিনে 1000 কোটি টাকার বেশি রেমিট্যান্স বাংলাদেশে
ওপার বাংলার ব্যাঙ্কের সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, মে মাস জুড়ে প্রতিদিন গড়ে প্রায় 9 কোটি 58 লক্ষ ডলার, অর্থাৎ প্রায় 1169 কোটি টাকা পাঠিয়েছে প্রবাসীরা। আর এই রেমিট্যান্স ঈদ উপলক্ষে বাড়তি খরচ এবং দেশের পরিবার পরিজনদের পাশে দাঁড়ানোর উদ্দেশ্যেই পাঠানো বলেই মনে করছে অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের নির্বাহী পরিচালক এবং মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানিয়েছেন, দেশ থেকে অবৈধভাবে অর্থপাচার বন্ধ হয়েছে। তাছাড়া ব্যাঙ্কিং চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানো এখন আরও অনেক সহজ ও নিরাপদ হয়ে উঠেছে। ফলে প্রবাসীরা টাকা পাঠাতে আরও বেশি আগ্রহী হচ্ছে।
কোন ব্যাঙ্কের মাধ্যমে কত রেমিট্যান্স আসলো?
হিসাব বলছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলোর মাধ্যমে প্রায় 66 কোটি 53 লক্ষ ডলার, বিশেষায়িত ব্যাঙ্কের মাধ্যমে প্রায় 20 কোটি 50 লক্ষ ডলার, বেসরকারি ব্যাঙ্কের মাধ্যমে 167 কোটি 16 লক্ষ 80 হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাঙ্কের মাধ্যমে 41 লক্ষ 30 হাজার মার্কিন ডলার বাংলাদেশে এসেছে।
অর্থ পাচার বন্ধের চেষ্টার ফল
এদিকে সরকারের কড়া নজরদারি এবং হুন্ডির বিরুদ্ধে অভিযানের প্রভাব রেমিট্যান্স প্রবাহে ইতিবাচক সারা ফেলছে। হ্যাঁ, জানা যাচ্ছে যে, সরকার পতনের পর নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্যোগে অর্থ পাচার রোধে 11 টি বড় বড় ব্যবসায়ী গ্রুপ এবং প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারের বিরুদ্ধে তদন্তও চলছে। আর ইতিমধ্যে 1 লক্ষ 75 হাজার কোটি টাকার সম্পদ উদ্ধার করা হয়েছে।
চলতি অর্থবছরের চিত্র
প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, 2024-25 অর্থবছরের প্রথম 11 মাসে দেশে মোট 2750 কোটি 70 লক্ষ ডলার এসেছিল, যা বিগত অর্থবছরের তুলনায় 613 কোটি 30 লক্ষ ডলার বেশি। আর প্রতিমাসেই প্রায় 2 বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। আমরা যদি মাস হিসেবে আলোচনা করি, তাহলে দেখতে পাবো-
- জুলাই, 2024-এ এসেছে 191.37 কোটি টাকা,
- আগস্ট, 2024-এ এসেছে 222.13 কোটি টাকা,
- সেপ্টেম্বর, 2024-এ এসেছে 240.41 কোটি টাকা,
- অক্টোবর, 2024-এ এসেছে 239.50 কোটি টাকা,
- নভেম্বর, 2024-এ এসেছে 220 কোটি টাকা,
- ডিসেম্বর, 2024-এ এসেছে 264 কোটি টাকা,
- জানুয়ারি, 2025-এ এসেছে 219 কোটি টাকা,
- ফেব্রুয়ারি, 2025-এ এসেছে 253 কোটি টাকা,
- মার্চ, 2025-এ এসেছে 329 কোটি টাকা,
- এপ্রিল, 2025-এ এসেছে 275 কোটি টাকা,
- মে, 2025-এ এসেছে 297 কোটি টাকা।
আরও পড়ুনঃ ATM না দিলেও অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও ৪০,০০০ টাকা! ১৪ বছর পর মিলল ন্যায়বিচার
আর এই অতিরিক্ত রেমিট্যান্স ঈদের আনন্দে যে আরও মাত্রা যোগ করেছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এখন মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে নিন্মবিত্ত, সবার মুখেই হাসি ফুটেছে। এমনকি দেশের অর্থনৈতিক পরিকাঠামো আরও মজবুত হয়েছে, তা বলা যায়। আর এই রেমিট্যান্সের ধারা যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে আগামী অর্থবছরে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে বাংলাদেশ আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |