সহেলি মিত্র, কলকাতা: সমুদ্র ভালোবাসে না এমন মানুষকে খুঁজে পাওয়া মুশকিল। আর সমুদ্রের কথা উঠবে আর দীঘা (Digha) কিংবা পুরীর কথা হবে না সেটা তো হতেই পারে না। বাংলার মানুষের কাছে এই দুটি জায়গার মাহাত্ম্যই আলাদা। উইকেন্ডে ছুটি হোক কিংবা লম্বা একটা ছুটি দীঘা, পুরী ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান হবেই হবে। কিন্তু এবারের দীঘা পুরীর সমুদ্র নিয়েই বহু মানুষের মধ্যে আতঙ্কে সৃষ্টি হচ্ছে শুধু তাই নয় আর আশঙ্কার কথাও শোনাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। বহু মানুষ লক্ষ্য করেছেন দীঘা, পুরীর সমুদ্রের জল আগের থেকে বেশ অনেকটাই কালো হয়ে গিয়েছে! শুনে চমকে গেলেন তো? কিন্তু এটাই দিনের আলোর মতো সত্যি। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে আচমকা কেন এরকম পরিস্থিতি তৈরি হলো এ বিষয়ে আরো বিশদে জানতে চোখ রাখুন আজকের এই প্রতিবেদনটির ওপর।
কালো হয়ে যাচ্ছে দিঘা পুরীর সমুদ্রের জল!
যত সময় এগোচ্ছে ততই দীঘা, পুরীর মতো সমুদ্র উপকূলবর্তী জায়গা গুলিতে পর্যটকদের ভিড় উপচে পড়ছে। বিশেষ করে দীঘার মতো জায়গায় সম্প্রতি উদ্বোধন হয়েছে পুরীর আদলে তৈরি জগন্নাথ মন্দির। যে কারণে আগের থেকে বহু পর্যটক এখন দিঘার উদ্দেশ্যে ছুটে যাচ্ছেন। তবে সাধারন মানুষের তরফে এখন বেশ আক্ষেপ উঠে আসছে। আর সেটা হল দীঘা কিংবা পুরীর সমুদ্রের জল আগের মতো আর নীল নেই। বরং তার থেকে অনেকটাই ধূসর আবার কালো হয়ে গেছে। এদিকে এন ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই রাতের ঘুম উড়েছে পরিবেশ বিজ্ঞানীদের।
ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে তাহলে কি এটা কোনও বড় ঘটনার ইঙ্গিত দিচ্ছে? পুরীর সমুদ্র মানে বঙ্গোপসাগর। তা গিয়ে মিশেছে ভারত মহাসাগরে। আর সেই সমুদ্র মানেই নীল। কিন্তু এখন সেই নীল জলের এক বিন্দুও নাকি দেখা যাচ্ছে না। ফলে বেজায় মন খারাপ সমুদ্র প্রেমীদের। এই না ঘটনা কেন ঘটছে তা নিয়ে একটি বিশেষ পর্যবেক্ষণ করেছেন বিজ্ঞানীরা।
কী বলছেন বিজ্ঞানীরা?
সমুদ্রের জল ধূসর বা কালো হয়ে যাওয়ার পেছনে একটি বিশাল কারণ ব্যাখ্যা করেছেন বিজ্ঞানীরা যা আপনারও চোখ কপালে তুলে দিতে পারে। একদল বিজ্ঞানীর গবেষণা বলছে, ক্রমশ ঘোলাটে, কালো হচ্ছে সমুদ্রের জল। গবেষণার ফল বলছে, গত দু’ দশকে বিশ্বের ২১ শতাংশের বেশি সমুদ্রের জল উল্লেখযোগ্যভাবে ঘোলা হয়ে গিয়েছে। ৭৫ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটারেরও বেশি এলাকা প্রভাবিত হয়েছে। ফলে সমুদ্রের নীল জল অনেক জায়গাতেই আর দেখা যাচ্ছে না।
প্লাইমাউথ ইউনিভার্সিটি এবং প্লাইমাউথ মেরিন ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানীদের গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে গ্লোবাল চেঞ্জ বায়োলজি জার্নালে। বিজ্ঞানীদের আরও দাবি, সমুদ্রের আলোর বৈশিষ্ট্যের পরিবর্তন হচ্ছে। ফলে ফোটিক জোনের গভীরতা হ্রাস পাচ্ছে ক্রমশ। অর্থাৎ সমুদ্রের সূর্যালোকিত স্তরে বদল ঘটছে। ফলে ৯০ শতাংশ সামুদ্রিক প্রাণীর জীবনে প্রভাব পড়ছে।