সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: সন্ত্রাসের দেশ (Pakistan) আবারো জলকে অস্ত্র করে এগোতে চাইছে। হ্যাঁ, এবার তাদের নিশানা ভারতের প্রধান নদী ব্রহ্মপুত্র। ইসলামাবাদের দাবি, ভারত যেভাবে সিন্ধু নদীর জলকে আটকে রেখেছে, একইভাবে পাকিস্তানও নাকি ব্রহ্মপুত্রের জল বন্ধ করে ভারতকে বিপাকে ফেলতে পারে। আদৌ কি তাই? এই আবহে জবাব দিলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তার স্পষ্ট বক্তব্য, ব্রহ্মপুত্র নদীর জলের উৎসের অধিকাংশই ভারতের মাটিতেই, ড্রাগনের দেশের হাত ধরে নয়।
পাকিস্তানের বড়সড় অভিযোগ
সম্প্রতি পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের ঘনিষ্ঠ সঙ্গী রানা ইহসান আফজল এক বিবৃতিতে বলেছেন, যদি ভারত পাকিস্তানের সিন্ধুর প্রবাহ বন্ধ করতে পারে, তাহলে চিনও ব্রহ্মপুত্রের জল থামিয়ে ভারতকে কাবু করে ফেলতে পারে। হ্যাঁ, বিশ্বজুড়ে যদি এরকম চলে, তাহলে আবারো যুদ্ধ শুরু হবে। তার এই বক্তব্য প্রকাশে আসার পরই শুরু হয় বিতর্ক।
জবাব দিলেন হিমন্ত বিশ্বশর্মা
প্রধানমন্ত্রীর এই হুমকির জবাব দিয়েছে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তিনি লেখেন, চিন যদি ব্রহ্মপুত্রের জল আটকায় তাহলে ভারতের কিচ্ছু হবে না। কারণ ব্রহ্মপুত্রের মূল জল ভারতের মাটি থেকেই আসে। আর তিনি পরিসংখ্যান দিয়েও স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, ব্রহ্মপুত্র নদীর মাত্র 30 থেকে 35 শতাংশ জল আসে চিন থেকে। অর্থাৎ, হিমালয়ের হিমবাহ এবং তিব্বতের পাদদেশ থেকে। আর বাকি 65 থেকে 70 শতাংশ জল ভারতেই উৎপন্ন হয়।
ভারতই ব্রহ্মপুত্রের প্রধান শক্তি
হিমন্ত বিশ্বশর্মা এও জানান যে, ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করার পর ব্রহ্মপুত্র আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন যে, চিন-ভারত সীমান্তে ব্রহ্মপুত্রের জলের প্রবাহ প্রতি সেকেন্ডে 2000 থেকে 3000 কিউবিক মিটার। তবে বর্ষাকালে গুয়াহাটিতে সেই প্রবাহের গতি এসে দাঁড়ায় 15,000 থেকে 20,000 কিউবিক মিটার প্রতি সেকেন্ড। অর্থাৎ, ভারতে জলপ্রবাহ কয়েক গুণ বেড়ে যায়।
তিনি আরো স্পষ্ট জানান যে, এই জল আসে মূলত অসম, মেঘালয়, অরুণাচল প্রদেশ এবং নাগাল্যান্ডের ভারী বর্ষণ থেকে। এমনকি সুবানসিরি, মানস, লোহিত, কামেং ও ধানসিরি নদীর মত উপনদী থেকে। এছাড়া খাসি, গারো, জয়ন্তিয়া পাহাড়ের নদীগুলিও এই জল প্রবাহে অবদান রাখে।
আরও পড়ুনঃ পরীক্ষা ছাড়াই মোটা বেতনের চাকরি! কেন্দ্রীয় সংস্থায় ৮৫০১ শূন্যপদে নিয়োগ
চিন জল আটকালে ভারতের লাভ?
তবে সবথেকে চমক দেওয়ার বিষয় হল, যদি চিন ব্রহ্মপুত্রের জল আটকে রাখে, তাহলে অসমে বর্ষাকালে যে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়, তা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসবে। হ্যাঁ, কারণ অতিরিক্ত জলে প্রতিবছর এই রাজ্যে উপদ্রব সৃষ্টি হয়। ফলে চিন যদি পাকিস্তানের কথায় কান দিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে লাভের গুড় ভারতই খাবে।