সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: কলকাতার বুকে অনুপ্রবেশ যেন আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। সূত্র বলছে, বাংলাদেশ (Bangladesh) থেকে বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে ভারতে আসছে বহু মানুষ। আর এর মধ্যে অনেকে বৈধ পাসপোর্ট বা ভিসা নিয়ে এদেশে আসছে। তবে পরবর্তীতে ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে ভারতেই থেকে যাচ্ছে তারা।
আবার অনেকে ভুয়ো নথি ব্যবহার করে প্রবেশ করছে শহরে। আর এই গোটা প্রক্রিয়ার নেপথ্য রয়েছে একটি জাল চক্র, যারা ভুয়ো পরিচয়পত্র তৈরি করে দিচ্ছে। এমনকি পাসপোর্ট, আধার কার্ড সবই তৈরি হচ্ছে।
এবার এই ভয়ংকর চক্র রুখতে তৎপর হয়েছে লালবাজার। সূত্রের খবর, শহরের একাধিক থানাকে এবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, স্থানীয় স্তরে নথিপত্র যাচাইয়ের কাজ আরো কঠোরভাবে করতে হবে। পাশাপাশি গোয়েন্দা বিভাগকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, যাতে প্রতিটি বাংলাদেশীদের তথ্য খুঁটিয়ে দেখে।
উদ্বেগ ছড়াচ্ছে কী নিয়ে?
আসলে গত কয়েক মাস ধরে একের পর এক ঘটনা আর উঠে আসছে যে, জাল নথি তৈরি করে অনুপ্রবেশকারীরা ভারতে ঢোকার চেষ্টা করছে। কেউ কেউ পাসপোর্ট অফিসে নথি জমা দিয়ে পাসপোর্ট হাতিয়ে নিচ্ছে। আবার কারোর হাতে রয়েছে ভুয়ো আধার কার্ড বা জন্ম সার্টিফিকেট।
এমনকি তদন্তে উঠে এসেছে, এদের একটি বড় অংশই বাংলাদেশ থেকে আসছে। কেউ চিকিৎসার অজুহাতে, আবার কেউ আত্মীয়ের সঙ্গে দেখা করতে এদেশে আসছে। কিন্তু আর ফিরে যাচ্ছে না। অথচ কাগজে-কলমে তাদের পরিচয় বাংলাদেশী।
পুলিশ কমিশনারের কড়া বার্তা
তবে এই পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে কলকাতা পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা স্পষ্ট বলেছেন, বৈধ-অবৈধ নির্বিশেষে প্রত্যেকটি বিদেশি নাগরিকের ডকুমেন্ট ভালো ভাবে যাচাই করতে হবে। আর আধার কার্ড, জন্ম সার্টিফিকেট, এমনকি পাসপোর্ট, সব কিছুর উৎস যাচাই করে তা গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচনা করতে হবে।
পাশাপাশি তিনি আরো নির্দেশ দিয়েছেন, যারা পাসপোর্টের দায়িত্বে রয়েছেন, তাদের প্রতিটি নথির সত্যতা যাচাই করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে পাঠাতে হবে। শুধু তাই নয়, আধার কার্ডে দেওয়া ঠিকানায় অফিসারকে গিয়ে খোঁজ নিতে হবে, যে উক্ত ব্যক্তি সত্যিই সেখানে থাকে কিনা।
আরও পড়ুনঃ ফের চড়ল সোনার দাম, রুপোর দর নিয়েও দুঃসংবাদ! আজকের রেট
কোথায় তৈরি হচ্ছে এসব ভুয়ো নথি?
যাদের হাতে এই ভুয়ো ডকুমেন্ট পাওয়া যাচ্ছে, তারা যতটা না দোষী, তার থেকে বেশি দোষী এই জালচক্র। হ্যাঁ, এই জালচক্র কে কোথা থেকে চালাচ্ছে, সেই সন্ধানে এখন লালবাজার নজর রাখছে। তদন্তকারীরা মনে করছে, ভুয়ো নথি তৈরি করে কলকাতার বাইরেও জলচক্র ছড়িয়ে পড়ছে।
এমনকি এর আগে পাসপোর্ট জলিয়াতির ঘটনায় বহুবার একাধিক এজেন্সির নাম জড়িয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, কিছু ঘরোয়া এজেন্ট বা সাইবার ক্যাফের দোকানদাররা কীভাবে এরকম পাসপোর্ট তৈরি করে দিতে পারছে? যদিও সমস্ত প্রশ্নের উত্তর সময়েই পাওয়া যাব।